Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল

হাঁটুকাদায় দুর্ভোগ, সড়ক পাকা হয়নি ১০ বছরেও

  • রোগীকে খাটে করে কাঁধে তুলে পাড়ি দিতে হয় দুই কিলোমিটার কাদাপথ।
  • ১০ বছর ধরে দুর্ভোগে তিন গ্রামের মানুষ।
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ০৯: ০৮
কসবা হাটখোলা বাজার থেকে পাইকড়া পর্যন্ত বেহাল সড়ক। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কসবায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কসবা হাটখোলা বাজার থেকে পাইকড়া পর্যন্ত বেহাল সড়ক। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কসবায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে খাটে করে কাঁধে তুলে দুই কিলোমিটার কাদাপথ পাড়ি দিতে হয়। পায়ে হেঁটে, হাঁটু পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে যেতে হয় হাসপাতালে কিংবা ক্লিনিকে। এমন দুর্ভোগের চিত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের পাইকড়া গ্রামীণ সড়কে। স্থানীয়দের দাবি, রাস্তাটি পাকা না হলেও অন্তত চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক। তা না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কসবার হাটখোলা বাজার থেকে পাইকড়া পর্যন্ত এই সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। গত ১০ বছর ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা এমপি-চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির কাছে ধরনা দিয়েও আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাননি। এতে কসবা, পাইকড়া ও গোলাবাড়ী গ্রামের অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে।

বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু সমান কাদা জমে। যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা লুঙ্গি বা প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে, হাতে স্যান্ডেল নিয়ে চলাচল করেন। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বই-খাতা কাদায় নষ্ট হয়ে যায় প্রায়ই।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কসবা উজিরপুর দরগা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমি প্রতিদিন দেড় কিলোমিটার হাঁটুকাদা মাড়িয়ে স্কুলে যাই। পায়ে জুতা পরিবর্তন করি, অনেক সময় পোশাকও বদলাতে হয়। এটা খুবই লজ্জার বিষয়। এত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা—স্কুল, মাদ্রাসা, ক্লিনিক ও ভোটকেন্দ্র থাকার পরও কেন রাস্তা হচ্ছে না, বুঝে উঠতে পারছি না। ১০ বছর ধরে এমপি সাহেব বলছেন—আপনাদের রাস্তা এক নম্বরে আছে, কিন্তু আজও কাজ শুরু হয়নি।’

স্থানীয় কৃষক মো. আলাল আলী বলেন, ‘খোদা না খাস্তে কেউ অসুস্থ হলে খাট ছাড়া বের হওয়া সম্ভব না। এমন দুর্দশা। কসবা নামে ইউনিয়ন হলেও গ্রামে যেন কিছুই নেই। এমনকি কন্যার বিয়েও দিতে পারছি না এই রাস্তায় যাতায়াতের কষ্টের কারণে।’

জানতে চাইলে কসবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া আল মেহরাব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাস্তাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। বারবার চেষ্টা চালাচ্ছি রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য। সেখানকার বাসিন্দারা আমাকে ভাঙাড়ি ফেলার জন্য বলছিল। কিন্তু সেখানে ভাঙাড়ি ফেললে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হবে, তাই করা হয়নি। ভবিষ্যতে পিচ কার্পেটিং কিংবা এইচবিবি সড়ক করার চিন্তাভাবনা আছে।’

এ বিষয়ে সদ্য যোগদান করা নাচোল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী-নাটোর-চাঁপাইনবাবগঞ্জ (আরএনসি) উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। সে প্রকল্পের তালিকায় সড়কটি থেকে থাকলে আমরা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত কাজ শুরু করব। আর প্রকল্পের আওতায় যদি সড়কটি না থাকে, তবে গুরুত্ব বুঝে সড়কটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত