Ajker Patrika

সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে রাবির আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের অনশন, আশ্বাসে স্থগিত

রাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ৪২
বর্ষ পদ্ধতি চালুর দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বর্ষ পদ্ধতি চালুর দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন অনুষদে সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিল করে পুনরায় বর্ষপদ্ধতি চালুর দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। পরে বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে ‘আইন’ এবং ‘আইন ও ভূমি প্রশাসন’ বিভাগের ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় দুই বিভাগ থেকে মোট ৪০ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

এর আগে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। সেখানে তাঁরা ‘দফা এক দাবি এক, ইয়ারে কামব্যাক’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, আইন অনুষদ জেগেছে’, ‘সেমিস্টারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে মানতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহবুব হাসান বলেন, ‘আইন অনুষদের ওপর আগের প্রশাসন জোর করে সেমিস্টার পদ্ধতি চাপিয়ে দিয়েছে। আমাদের বৃহৎ পাঠ্যসূচি, সেটা অধ্যয়নের জন্য সেমিস্টারের তিন-চার মাস যথেষ্ট সময় নয়। এ ছাড়া আমাদের সেমিস্টার পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট শিক্ষক ও অবকাঠামো প্রয়োজন। যেটা আমাদের বিভাগের নেই। এ জন্য আমরা সেমিস্টার থেকে বর্ষপদ্ধতিতে ফিরে যেতে চাচ্ছি।’

rabi-2

সেমিস্টার পদ্ধতির সমস্যা তুলে ধরে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন লিপু বলেন, ‘আমাদের বিগত ব্যাচগুলো বর্ষপদ্ধতিতে পড়াশোনা করে আসছেন। বর্তমান সেমিস্টার পদ্ধতিতে বছরে দুটি সেমিস্টার শেষ করতে হয়। তবে যে পরিমাণ পাঠ্যসূচি দেওয়া হয়, তা মাত্র ছয় মাসে শেষ করা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইন একটি পেশাদারি বিষয়। সেমিস্টার পদ্ধতিতে যা শেখানো হয়, তার কিছুই পেশাগত জীবনে প্রয়োগ করা সম্ভব না। ফলে আমরা যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের আইন অনুষদের একটা সুনাম দেশব্যাপী রয়েছে। ভবিষ্যতে অনুষদের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে আমরা বর্ষপদ্ধতিতে পড়াশোনা করতে চাই।’

আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘সেমিস্টার থেকে বর্ষপদ্ধতিতে ফেরার দাবিতে প্রথম থেকেই আমরা বৈধ উপায়ে এগিয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছি। বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলের আলোচ্যসূচিতে থাকবে বলে তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু সেটি সেখানে উত্থাপিত হয়নি। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এদিকে বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ও মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। সেখানে তোমাদের সমস্ত সমস্যা তুলে ধরা হবে। আমি আশাবাদী, তোমাদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ যেন ভালো হয় এমন সিদ্ধান্তই আসবে। আমরা এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আমাদের ওপর ভরসা রাখতে পারো, আমরা দ্রুত এটি একাডেমিক কাউন্সিলে নিয়ে যাব।’

কত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, এ ব্যাপারে উপাচার্যের কাছে জানতে চান শিক্ষার্থীরা। প্রতি উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘আমি এক মাসের ভেতরে সিদ্ধান্ত জানাতে পারব। আমরা কাল থেকেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত