Ajker Patrika

‘তোকে ১০ বোতল বাংলা মদ দিয়ে চালান দেব’

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
‘তোকে ১০ বোতল বাংলা মদ দিয়ে চালান দেব’

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে স্টেশন রোড এলাকা থেকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে আক্কেলপুর থানা-পুলিশ । আজ শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে। 

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর আলম (৩৮)। তিনি খুলনা জেলার আড়ংঘাট ইউনিয়নের গাইকুড় গ্রামের শেখ ইউনুস আলীর ছেলে। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর পৌরসভার সোনামুখীর মুকিমপুর মহল্লার হাসান নামে এক তরুণ তাঁর চার-পাঁচ জন বন্ধুকে নিয়ে পৌর সদরের রেলস্টেশন রোড এলাকায় মার্কেটে ঈদের জামা কাপর কিনতে আসেন। এ সময় হাসানসহ ওই তরুণদের পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়দানকারী জাহাঙ্গীর আলম আটক করে। এ সময় শেখ জাহাঙ্গীর আলম ভুক্তভোগী হাসানের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও ৪৫০ টাকা কেরে নেয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য বন্ধুরা দৌড়ে চলে যায়। এরপর শেখ জাহাঙ্গীর আলম ভুক্তভোগী হাসানকে বলেন ‘তোকে ১০ বোতল বাংলা মদ দিয়ে চালান দেব।’ এ থেকে বাঁচতে হলে ভুক্তভোগীকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১০ হাজার টাকা বিকাশে দিতে বলেন। তা না হলে থানায় নিয়ে তাঁকে মাদকের মামলা দেবেন বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। পরে ভুক্তভোগী হাসান বিষয়টি তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের জানায়। 

ভুক্তভোগী হাসান (১৭) বলছে, ‘লোকটি আমাকে ধরেই বলে, তোর কাছে তো বাংলা মদ আছে। তোকে থানায় নিয়ে যাব’ এই বলে তিনি আমার কাছে থাকা ৪৫০ টাকা ও মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে বলেন ‘তোকে ১০ বোতল বাংলা মদ দিয়ে চালান দেব।’ একপর্যায়ে তিনি আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। আর ১০ হাজার টাকা দিতে বলেন। টাকা না দিলে তিনি আমাকে থানায় নিয়ে গিয়ে মামলা দেবেন। এরপর আমি আমার বন্ধু মুন্নাকে ঘটনাটি খুলে বলি। তখন মুন্না তাঁর মহাজন লেমনকে জানায়। এরপর ঘটনাটি থানায় জানালে বোঝা যায় তিনি আসল পুলিশ নয়।’ 

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এসআই পরিচয়ধারী প্রতারক জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: আজকের পত্রিকাভুক্তভোগী হাসানের বন্ধু মুন্না হোসেন (১৮) বলেন, ‘হাসানসহ আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঈদের কেনাকাটা করছিলাম। তখন পুলিশ পরিচয়দানকারী ব্যক্তি আমাদের কাছে বাংলা মদ আছে বলে আটক করে। এরপর আমরা দৌড়ে চলে আসি কিন্তু হাসানকে ছাড়াতে পারিনি। পরে বিষয়টি আমরা মালিক লেমন ভাইকে জানায়।’ 

ওই মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির লেমন (৪০) হোসেন বলেন, ‘প্রথম খবরটি আমার দোকানের কর্মচারী মুন্না জানায়। আর আমার দোকানটি থানার সামনে হওয়ায় সব পুলিশকে আমার চেনা। তখন আমি ওই লোকটির সাথে ফোনে কথা বলি। তাঁর কথা বার্তা শুনে আমার সন্দেহ হয়। এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানাই। এর মধ্যে মুন্না ও তাঁর বন্ধুরা হাসান এবং পুলিশ পরিচয় দেওয়া লোকটিকে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত নয়টার দিকে রেলস্টেশনে তাঁকে পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।’ 
    
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ভুয়া পুলিশ পরিচয়দানকারী শেখ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত