Ajker Patrika

কবরস্থান কমিটি নিয়ে বিএনপির দ্বন্দ্ব, সভাপতি পদে ভোট

পাবনা ও চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা)– শরিফুল ইসলাম (চেয়ার)। ছবি: সংগৃহীত
আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা)– শরিফুল ইসলাম (চেয়ার)। ছবি: সংগৃহীত

ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন সচরাচর দেখা যায়। বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব নির্বাচনের সঙ্গেও সবাই পরিচিত। কিন্তু এবার পাবনার চাটমোহরে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচন নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ইতিমধ্যে এই নির্বাচনের জন্য গঠন করা হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষণা করা হয়েছে তফসিল। শুধুই কি তাই, দুজন প্রার্থী মনোনয়ন কেনার পর দাখিল করেছেন। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে প্রতীক বরাদ্দ।

দুই প্রার্থী বিজয় নিশ্চিত করার জন্য চষে বেড়াচ্ছেন ভোটার এলাকা। বিষয়টি উপজেলাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ উৎসাহ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নে বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক)—তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। স্থানীয় বিএনপির নেতারা সভাপতির পথ দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।

সভাপতি কে হবেন—এমন প্রশ্নে দুই পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এলাকাবাসী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে দাবি জানান, ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হোক।

কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টারের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ঘোষণা করা হয় তফসিল। বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক)—তিন গ্রামের প্রতিটি পরিবার থেকে একজন পুরুষকে ভোটার করে ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

মোট ৮০০ জন ভোটার গোপন ব্যালটে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আগামি তিন বছরের জন্য কবরস্থান কমিটির সভাপতি নির্বাচন করবেন। আগামী শনিবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কবরস্থানসংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের মতোই এলাকায় উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা আর আপ্যায়ন! ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন কবরস্থান উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।

নির্বাচন কমিশনের প্রধান আব্দুল মতিন মাস্টার বলেন, ‘জান্নাতুল বাকি কবরস্থান পরিচালনা কমিটি গঠনে ‘সভাপতি’ পদ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজন সভাপতি হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা চাটমোহর থানার ওসির শরণাপন্ন হই। তিনি নির্বাচনের পরামর্শ দেন। অতঃপর আমাকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান করে সাত সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়।’

আব্দুল মতিন মাস্টার আরও বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করার পর সভাপতি পদের জন্য ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র ক্রয় করার পর দাখিলও করেছেন। বাছাই শেষে তাঁদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রার্থী দুজন হলেন আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা) ও শরিফুল ইসলাম (চেয়ার)। মনোনয়নপত্র বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত ৬০ হাজার টাকায় নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘কবরস্থানের সভাপতি নির্বাচন করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। পরে আগের কমিটি বিষয়টি আমাকে জানায়। তবে এখনো দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জেনেছি।’ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত