Ajker Patrika

জামিন নিতে আসা দুই যুবককে তুলে নিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ০২
জামিন নিতে আসা দুই যুবককে তুলে নিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়ায় আদালতে জামিন নিতে আসা দুই যুবককে তুলে নিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা এবং অপরজনকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে বলে নিহতের চাচা ফারুক চৌধুরী জানান। তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ নিহতের পরিবারের। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে মৃত এবং অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

নিহত যুবকের নাম রোহান চৌধুরী (২৩)। তিনি বগুড়া সদরের মানিকচক গ্রামের কামাল চৌধুরীর ছেলে। গুরুতর আহত সেলিম (২৪) কর্ণপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত সানোয়ারের ছেলে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে এই দুই যুবককে বগুড়া জজ আদালতের সামনে রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হয়। তিন ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে একজনকে মৃত এবং অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া সদরের জয়বাংলা হাটে রাস্তায় তাদেরকে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশ পৌঁছে গুরুতর আহত সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় এবং নিহত রোহানের লাশ মর্গে পাঠায়।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক কারবার ও বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাজাপুর ইউনিয়নের কুটুরবাড়ি সাত্তুর মোড় এলাকায় বগুড়া সদরের রাজাপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সেলিমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। সেই মামলায় আসামি ছিলেন নিহত রোহান ও গুরুতর আহত সেলিম।

নিহত রোহানের চাচা ফারুক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বুধবার সকালে আমি তাদেরকে জামিন করানোর জন্য বগুড়া শহরে নিয়ে আসি। আদালতের আশেপাশের ঘোরা ফেরা করার সময় তাদেরকে গিয়াসের নেতৃত্বে তিনজন সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানাই। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে রাজাপুর ইউনিয়ন বিট পুলিশিং এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাফরকে ফোন করি। কিন্তু পুলিশ অনেক দেরিতে যাওয়ায় আমার ভাতিজাকে জীবিত উদ্ধার করা যায়নি।’

বগুড়া সদর থানার এসআই নুর জাহিদ বলেন,  ‘৯৯৯ এর ফোন পেয়ে বিট অফিসার এসআই জাফরকে সঙ্গে নিয়ে বেলা ১১ টার পর থানা থেকে রওনা করি। জয়বাংলা হাটে পৌঁছে রাস্তায় রোহানকে মৃত এবং সেলিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাই।’

আব্দুল গোফ্ফার (৭০) নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘রোহান এবং সেলিমকে পেছনে দুই হাত বেঁধে জয়বাংলা হাটের পূর্বে মল্ডল ধরম গ্রামে গিয়াস উদ্দিনের বিয়াই মতির বাড়ির পেছনে লাঠি পেটা করতে দেখি। সেখানে গিয়াস উদ্দিন তার এক ভাই ও এক ছেলে ছাড়াও বেশ কয়েকজন ছিলেন। অবস্থা খারাপ হলে দুইজনকে অটোরিকশায় তুলে জয়বাংলা হাটে ফেলে তারা পালিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দিনের বেলা গ্রামের মানুষের সামনে মারধর এবং হাটে ফেলে রেখে গেলেও গিয়াস মেম্বারের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেন নি।’

হামলার বিষয় জানতে গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করেন গিয়াস মেম্বার। তিনি (গিয়াস) রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। এ ছাড়াও তিনি গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এলাকায় তার প্রভাব থাকায় আজ বুধবার ঘটনার সময় কেউ রোহান ও সেলিমকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। বরং পুলিশ আসা দেখে হাটের সকল দোকানপাট বন্ধ করে যে যার মত চলে যায়।

রাজাপুর ইউনিয়ন বিট পুলিশিং এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিনের ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মানববন্ধন করার আগেই ১৯ জন আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জন আদালত থেকে জামিন নিয়েছে।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুনেছি আদালতে জামিন নিতে যাওয়ার পথে রোহান ও সেলিমকে ধরে নিয়ে আসে। এরপর পিটিয়ে রোহানকে হত্যার পর দুইজনকে জয়বাংলা হাটে ফেলে রেখে যায়। এঘটনায় জড়িত গিয়াসউদ্দিন, তার ছেলে, ভাইসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরকে ধরতে অভিযান চলছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের সময় আটক তরুণ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে রোববার মো. শান্তকে আটক করা হয়। ছবি: র‍্যাব
রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে রোববার মো. শান্তকে আটক করা হয়। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের সময় মো. শান্ত নামের এক তরুণকে আটক করা হয়েছে।

বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে তাঁকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের হাতে আটক হওয়া শান্ত ঢাকার শাহজাহানপুরের রাজারবাগ গোলাপবাগের আক্কেল আলী ওরফে চান মিয়ার ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর সহকারী পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া অফিসার) মো. পারভেজ রানা বলেন, বিমানবন্দর এলাকায় তন্ময় (১৫) নামের স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাইকালে শান্ত (২১) নামের এক পেশাদার ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটি তন্ময়কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য তাঁকে বিমানবন্দর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পারভেজ রানা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান, গ্রেপ্তার ৯

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
পদ্মার চরে অভিযান চালাতে নৌপথে পুলিশের যাত্রা। ছবি: সংগৃহীত
পদ্মার চরে অভিযান চালাতে নৌপথে পুলিশের যাত্রা। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর তীরবর্তী দুর্গম চরাঞ্চলে পুলিশের ব্যাপক সাঁড়াশি অভিযান চলেছে। আজ রোববার ভোর ৪টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে নিয়মিত মামলা, সাজা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযানকালে চরের গভীর এলাকা থেকে অপরাধীদের ব্যবহৃত দুটি অস্থায়ী তাঁবু, একটি স্পিডবোট, দুটি নৌকা, তিনটি মোটরসাইকেল, তিনটি মোবাইল ফোন ও অস্ত্র রাখার বিশেষভাবে তৈরি দুটি চেম্বার উদ্ধার করা হয়।

জেলাজুড়ে চলা অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এবং তদারকি করেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) শেখ জয়নুদ্দীন, পিপিএম-সেবা। অভিযানে জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ৩১৫ জন সদস্য অংশ নেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ৩০ অক্টোবর পদ্মার চরাঞ্চলে জেলা পুলিশের নেতৃত্বে আরও একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। বর্তমানে এলাকাটিতে পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘সকাল থেকে চলা অভিযানে দৌলতপুর থানা এলাকা থেকে আমরা পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি।’ অন্যদিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দৌলতপুর, ভেড়ামারা ও কুমারখালী এলাকায় সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

পদ্মার চরের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে ১ নভেম্বর দৈনিক আজকের পত্রিকায় একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ‘কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী’ শিরোনামে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, দৌলতপুরের পদ্মা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল ও ভারত সীমান্তঘেঁষা অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কাকন ও মণ্ডল বাহিনীর পাশাপাশি টুকু, সাইদ, লালচাঁদ, রাখি, কাইগি, রাজ্জাক, বাহান্ন বাহিনীসহ ডজনখানেক সশস্ত্র দলের সক্রিয়তা রয়েছে সেখানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদ্মার চরে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: কাকন বাহিনীর ২১ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও বাঘা প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৫
ছবি: মিলন শেখ
ছবি: মিলন শেখ

রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো ‘কাকন বাহিনী’র ২১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোররাত থেকে রাজশাহীর বাঘা, পাবনার আমিনপুর ও ঈশ্বরদী এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিভিন্ন চরাঞ্চলে একযোগে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযানে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি জানান, ‘কাকন বাহিনী’ দমনে পুলিশ, র‍্যাব ও এপিবিএন সদস্যদের নিয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিমের ১ হাজার ২০০ সদস্য অংশ নিচ্ছেন। ডিআইজি বলেন, ‘অভিযান চলাকালে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দেশি অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কাকন বাহিনীর ২১ সদস্যকে। অভিযান এখনো চলছে। আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজার নিচ খানপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে বাহিনীপ্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলায় কাকন বাহিনীর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। কাকন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর আজকের পত্রিকায় ‘পদ্মা চরের আতঙ্ক কাকন বাহিনী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নন-এমপিও শিক্ষকদের মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০
নন-এমপিও শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানের পানি নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নন-এমপিও শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানের পানি নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করেন নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। এ সময় শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষক প্রতিনিধিদের। তাঁদের দাবি, এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া জলকামান থেকে পানি এবং সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করে পুলিশ।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করে আসছেন। বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁদের এক দফা দাবি হলো—সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে।

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার বেলা আড়াইটার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশ শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা শুরু করে। এতে আমি নিজেও আহত হই। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা আহত হয়েছেন।’

সেলিম মিয়া বলেন, ‘এমন ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ শিক্ষকদের এমপিও প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (প্যাট্রল) বুলবুল আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘নন-এমপিও শিক্ষকেরা দুপুরের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে যান। সচিবালয়ের ব্যারিকেডের সামনে আমরা তাঁদের কিছুক্ষণ অবস্থান করতে অনুমতি দিই। তাঁদের প্রতিনিধি পাঠাতে চাইলে আমরা যাওয়ার ব্যবস্থা করব বলেও জানাই।’

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, তাঁদের নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সাধারণ শিক্ষকেরা তা অমান্য করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় একটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, এ সময় তাঁরা কয়েকবার সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত