Ajker Patrika

উল্লাপাড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অরক্ষিত ডিজিটাল হাজিরা মেশিন, গচ্চায় ৩০ লাখ টাকা 

হোসাইন ময়নুল (সিরাজগঞ্জ) উল্লাপাড়া
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৫২
উল্লাপাড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অরক্ষিত ডিজিটাল হাজিরা মেশিন, গচ্চায় ৩০ লাখ টাকা 

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কর্মে ফাঁকি বন্ধে ২০১৯ সালের শুরুতেই ডিজিটাল হাজিরা (ফিঙ্গার রিকগনাইজেশন) মেশিন স্থাপন করা হয়। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা ও সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে বেশির ভাগ মেশিনই স্কুলগুলোতে অব্যবহৃত হওয়ার কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। এ ছাড়া মেশিন ক্রয়েও হয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতি, যার ফলে সঠিক নজরদারি করা সম্ভব হয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তাই গচ্চায় যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দকৃত স্লিপ ফান্ডের ২৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, উল্লাপাড়া উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের মোট ৪৪০টি গ্রামে ২৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঠিক সময়ে প্রতিষ্ঠানে আসা ও যাওয়ার বিষয়টি নজরদারি করার জন্য ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয়ের সময় মোটা অঙ্কের টাকার অনিয়ম হয়েছে। জানা গেছে, মৌখিক আদেশের মাধ্যমে তৎকালীন বাজারমূল্যের চেয়েও দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে এসব মেশিন কেনা হয়। এরপর বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হলেও সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কদিন পরেই সেগুলো বিকল হয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কিছু প্রতিষ্ঠানে কোনো দিনই ব্যবহার হয়নি এসব মেশিন, কেউ আবার বাসায় নিয়ে পরিবারের শিশুদের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করছেন। 

উল্লাপাড়া পৌর শহরের আইটি ব্যবসায়ী সঞ্জয় কুমার কণ্ডু জানান, ২০১৯ সালের দিকে সিনটেক ব্র্যান্ডের ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের বাজারমূল্য ছিল ২ হাজার ৯০০ টাকা, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১ হাজার ৮০০ টাকা। 

উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে এই ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়, যার বাবদ স্কুলর উন্নয়নের জন্য সরকারিভাবে আসা স্লিপ প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা করে শিক্ষা অফিসে আমাদের জমা দিতে হয়েছিল।  

উপজেলার পারসোনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির উদ্দিন বলেন, প্রথম দিকে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে এর আর কোনো কার্যক্রম নেই। এ ছাড়া তিনি বলেন, সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকায় শুধু স্থানীয় শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তে এই মেশিন স্থাপন করার বিষয়টি নিয়ে এখন আর কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি নেই। 

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, `এ উপজেলায় যখন ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়, তখন আমি এখানে কর্মরত ছিলাম না। তাই এ বিষয়ে আমার সঠিক জানা নেই। তবে এই ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কোনো রকমের সিদ্ধান্ত এলে সেটা ভালোভাবে দেখা হবে।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত