Ajker Patrika

প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ঠিকাদারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা বিএনপি নেতা-কর্মীদের

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১৩: ০৬
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অগ্নিসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অগ্নিসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্থানীয় এক ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা সেখানে ভাঙচুর ও ঠিকাদারকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন। এ সময় রামদার কোপে ১০-১২ জন আহত হন।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধানখালী ইউনিয়নের মরিচবুনিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। সেখানকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরএনপিএল) কয়লা খালাসের জেটিঘাটে শ্রমিক সরবরাহ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঠিকাদার শাহীন মৃধার প্রতিষ্ঠানে এই হামলা হয়। শাহীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শ্রমিকসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহের কাজে যুক্ত।

হামলাকারীদের রামদার কোপে স্থানীয় বাসিন্দা দোলন মৃধা, মিরাজ হোসেন, শাহীনের গাড়িচালক রানাসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। তাঁরা পাশের উপজেলা আমতলীতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, হামলায় নেতৃত্ব দেন কলাপাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন ধানখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ তালুকদার, বিএনপি নেতা বশির মৃধা, হানিফ মেম্বারসহ তাঁদের অনুসারীরা। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মহসিনকে দায়ী করছেন শাহীন ও তাঁর পরিবার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শতাধিক মোটরসাইকেলে করে অস্ত্রসহ মরিচবুনিয়া এলাকায় যান কামরুজ্জামানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা শাহীনের শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, তাঁর আবাসগৃহ ও শ্রমিকদের বসবাসের ছাউনি রয়েছে। হামলাকারীরা এগুলো ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকজন শাহীনকে তাঁর ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেন। তিনি ঘরের কোণের একটি টিন খুলে বের হয়ে আত্মরক্ষা করেন। তবে আগুনে ঘরে থাকা দুটি এসি, টিভি, ১০টি সিসি ক্যামেরা, দুটি ফ্রিজ, খাট, তিনটি সোফা সেটসহ অন্যান্য আসবাব ও ডাম্পট্রাক পুড়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগুনের খবর পেয়ে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট রওনা হলে পথে ছয় লেন সড়ক এলাকায় গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। শেষে সেনাবাহিনীর একটি দল ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শাহীন অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার ইন্দনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে এসে আমার কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। একপর্যায়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ভস্মীভূত করেছে। এমনকি আমার ব্যক্তিগত গাড়িটিও ভাঙচুর করেছে। আমাকে তালাবদ্ধ করে হামলাকারী চক্র আগুন লাগিয়ে দেয়। আমি বের হতে না পারলে পুড়ে ছাই হয়ে যেতাম। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। এমন জাহেলি কাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার চাই।’ হামলায় কয়েক কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন শাহীন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা শাহীনের ভাই রুবেল মৃধা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা মোশাররফ মিয়া পরিকল্পিতভাবে আজকে তাঁর লোকজন দিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছেন। কাজল তালুকদার মোটরসাইকেলবহর নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফিরোজ তালুকদার, হানিফ মেম্বার, বশির মৃধাসহ স্থানীয় ছাত্রদল ও বিএনপির নেতারা। আমরা বিএনপি পরিবারের সন্তান, কিন্তু তিনি আজকে যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা আওয়ামী লীগের সময়েও হয়নি।’

রুবেল আরও বলেন, ‘কয়লার ঘাট থেকে মোশাররফ মিয়াকে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দিতাম। মহসিনের (স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা) ভাগনে লিওনকে দিয়ে তিনি টাকা নিতেন। ঢাকায় গিয়েও দিয়ে আসতাম। জাহাজ আসলেই তাঁকে টাকা দেওয়া লাগবে। এখন তিনি মহসিনের নামে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) বানিয়ে আমাদের সরিয়ে দিতে চান। আজকের ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানতে চাইলে মহসিন বলেন, ‘আসলে শাহীন মৃধা আওয়ামী লীগের লোক। তার সঙ্গে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের সুসম্পর্ক ছিল। সে নিজে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এলাকার মানুষজন এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে সব সময় অভিযোগ করে আসছে। তা ছাড়া আমি আরএনপিএল নামের নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে মালামাল সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ পেয়েছি। এতে শাহীন মৃধা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এমনকি আমার শ্রমিকদের মালামাল সরবরাহে বাধা দিয়েছে। এসব নিয়ে শাহীন মৃধার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।’

হামলার বিষয়ে মহসিন বলেন, ‘আমি এলাকায় থাকি না, ঢাকায় বসবাস করি। এখন ওই এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে, এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা আমি জানি না। আমাকে নিয়ে কোনো কথা বলে থাকলে তা উদ্দেশ্যমূলক। আমি এর সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।’

একই দাবি করে বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি শাহীন মৃধার নিজের ওয়ার্ক অর্ডার নেই। আর এ বিষয়ে (হামলা) আমি কিছু জানি না। তবে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’

এদিকে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এ বিষয়ে অবগত নই। আমি সেখানে যাইনি।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটির পাশের স্থাপনায় চিহ্নিত একদল সন্ত্রাসী হামলা, তাণ্ডব, নাশকতা চালায়। বর্তমানে সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
সাপের কামড়ে মৃত্যুর খবরে স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাপের কামড়ে মৃত্যুর খবরে স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনীতে বিষধর সাপের কামড়ে শামীম হোসেন (১৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত শামীম হোসেন তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া করমদি গ্রামের মিজানুর রহমান হারানের ছেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাপে কামড় দেওয়ার পর দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে ওঝা বা কবিরাজের কাছে যাওয়াই এই মৃত্যুর কারণ।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে শামীম হোসেন নিজের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁকে বিষধর সাপে কামড় দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে বাড়ির লোকজন তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে কয়েকজন কবিরাজ বা ওঝার কাছে নিয়ে যায়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ বুধবার সকালে তাঁকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

রোহান আহমেদ নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সকালে আমি খেলার উদ্দেশ্যে বের হয়ে দেখি একজনকে সাপে কেটেছে। দ্রুত লোকজন নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে যায়।’

আকাশ আহমেদ জানান, তাঁরা সকালে ঘর খুঁড়ে অত্যন্ত বিষধর মনে হওয়া সাপটিকে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলেন।

নিহত শামীম হোসেনের বাবা মিজানুর রহমান হারান বলেন, ‘যখন জানতে পারি আমার ছেলেকে সাপে কেটেছে, তখনই আমরা কয়েক জায়গায় (কবিরাজের কাছে) নিয়ে যাই। কিন্তু অবস্থা খুবই খারাপ হতে থাকে। বুক বন্ধ হয়ে আসছিল। তখন কয়েকজনকে নিয়ে আজ সকালে গাংনী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর আমার ছেলে মারা যায়। বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কত বেদনার, তা কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব না।’

স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, ‘সাপে কামড়ালে মানুষ কেন যে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়, তা বুঝি না। সাপের অ্যান্টিভেনম হাসপাতালে পাওয়া যায়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে রোগী অনেকটা সুস্থ হয়ে যায়। আমাদের পাড়ায় আজ একজন মারা গেল। কারণ, হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল।’

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আজিজ এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সাপে কাটা রোগীকে আমাদের কাছে সকাল সাড়ে ৭টার সময় আনা হয়। তাঁকে আমাদের কাছে শেষ মুহূর্তে আনা হয়েছিল। তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল।’ তিনি বলেন, রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এক ঘণ্টা পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

আব্দুল্লাহ আল আজিজ আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পারি সাপে কামড় দেওয়ার পর তাঁকে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আসলে মানুষের উচিত যখন কাউকে সাপে কাটবে, তখন অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা। আমাদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত