Ajker Patrika

দখল-দূষণে বিলীন আত্রাই: নদ ভরাট করে ক্লিনিক মার্কেট ভবন

  • প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নদের জমির জাল কাগজ তৈরি।
  • একসময় স্রোতস্বিনী আত্রাইয়ের আয়তন দ্রুত সংকুচিত হয়ে নিঃশেষ হওয়ার পথে।
আবুল কাশেম, সাঁথিয়া (পাবনা)
নদ ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন। দখল ও দূষণের কারণে অস্তিত্ব সংকটে আত্রাই নদ। সম্প্রতি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নদ ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন। দখল ও দূষণের কারণে অস্তিত্ব সংকটে আত্রাই নদ। সম্প্রতি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দখল ও দূষণে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদ। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নদের সিকস্তি ও পয়স্তি জমির জাল কাগজ তৈরির পর এটি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মার্কেট ও অসংখ্য আধা পাকা দোকান। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই নদের তলদেশ ভরাট করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে একসময় স্রোতস্বিনী আত্রাইয়ের আয়তন দ্রুত সংকুচিত হয়ে নিঃশেষ হওয়ার পথে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, নব্বইয়ের দশকেও আত্রাইয়ে পালতোলা পণ্যবোঝাই সারি সারি নৌকা চলাচল করত। এটি তখন ছিল এলাকার যোগাযোগ ও জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু এখন সেটি পরিণত হয়েছে প্রায় মরা খালে।

সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নে ইছামতী নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া আত্রাই নদ সাঁথিয়া, বেড়া ও সুজানগর উপজেলা অতিক্রম করে মাসুমদিয়া ইউনিয়নের বাদাই নদের সঙ্গে মিলিত হয়ে যমুনায় গিয়ে পড়ে। তবে সাঁথিয়া উপজেলার অংশে এর বড় একটি অংশই দখল হয়ে গেছে। পাবনা-ঢাকা ও কাজিরহাট-বগুড়া মহাসড়কের পাশের জেলার অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা কাশিনাথপুরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা আত্রাইয়ের জায়গা দখল করে একের পর এক স্থাপনা নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। প্রতিনিয়ত নদের বুক চিরে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাশিনাথপুর ট্রাফিক মোড় থেকে কাশিনাথপুর হাটের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদের কোনো দৃশ্যমান অস্তিত্ব নেই। হাট এলাকার একাংশে নদের মাঝখানে নির্মিত একটি সেতুর দুই পাশে নদের দুই তীর ভরাট করে তৈরি হয়েছে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মার্কেট, আবাসিক ভবন এবং ৪০-৪৫টি দোকান। এগুলোর বেশ কিছুর নির্মাণকাজ এখনো চলছে। অন্যদিকে নদের অবশিষ্ট জলাশয়টি হাটবাজার ও আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, ২০০০ সালের পর থেকে আত্রাই দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই সময় সুজানগর উপজেলার আহাম্মদপুর ইউনিয়নে সরকারি অর্থায়নে আত্রাইয়ের ওপর একটি সেতু ও সড়ক নির্মাণ করা হয়। সেতু ও সড়ক নির্মাণের পরপরই রাস্তার দুই পাশে নদের জমি দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এসব স্থাপনার মালিকদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।

স্থানীয়দের আরও দাবি, একসময় বাঘুলপুর, বাদাই, ভাটিকয়া, সাগতা, রানীনগর, মাসুমদিয়া, আমিনপুরসহ আশপাশের বহু এলাকার মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনের প্রধান পথ ছিল আত্রাই নদ। বর্তমানে এর বড় অংশে পানির অস্তিত্ব নেই। বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর নজরদারির অভাবে নদটি এভাবে দখল-দূষণের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। সচেতন মহলের মতে, একসময় প্রশস্ত ও খরস্রোতা আত্রাই এখন অনেক স্থানে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। এটি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একসময় এই নদে নৌকা ও লঞ্চ চলত, নানা প্রজাতির মাছ ছিল। জলাধার সংরক্ষণ আইন থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের দুর্বল নজরদারি ও আইন প্রয়োগের অভাবে প্রভাবশালীরা এর বুকে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গড়ে তুলেছে। কোথাও কোথাও নদের জমি দখল করে ফসলও আবাদ করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ রায়হান বলেন, ‘নদটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। তারা সহযোগিতা চাইলে উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।’ এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার কাশিনাথপুরে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

­যশোর প্রতিনিধি
তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব। ছবি: সংগৃহীত
তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব। ছবি: সংগৃহীত

ঋণখেলাপি হওয়ায় যশোর-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তালহা শাহরিয়ার আইয়ূবের (টিএস আইয়ূব) প্রার্থিতা গ্রহণ না করতে চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার যশোরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক হাসানের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।

ঢাকা ব্যাংকের রাজধানীর ধানমন্ডি শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রিয়াদ হাসান ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এস এম রাইসুল ইসলাম নাহিদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে টি এস আইয়ূবকে ‘ঋণখেলাপি ও সিআইবি রিপোর্টে তালিকাভুক্ত’ উল্লেখ করা হয়েছে।

টি এস আইয়ূব সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

আসনটিতে টি এস আইয়ূব ছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু ও অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মতিয়ার ফারাজী। এ ছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছেন টি এস আইয়ূবের ছেলে ফারহান সাজিদ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, তালহা শাহরিয়ার আইয়ূব আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, তালহা শাহরিয়ার আইয়ূব সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

প্রতিষ্ঠানটির নামে ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি মডেল শাখা থেকে ঋণ নেন তালহা শাহরিয়ার আইয়ূব। ২০১৮ সাল থেকে তিনি ঋণখেলাপি; যা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার অনুযায়ী একজন ইচ্ছাকৃত (Willful) ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (CIB) রিপোর্টে তিনি একজন মন্দজনিত ঋণখেলাপি (Bad & Loss)।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, টি এস আইয়ূব তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে ঢাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন এবং বৈদেশিক রপ্তানিপ্রক্রিয়া-সংক্রান্ত দলিলাদি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেন। যে টাকা অনাদায়ী ও অপ্রত্যাশিত হিসেবে রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয় এবং চার্জশিট দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ঢাকা ব্যাংক ঋণের টাকা আদায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অর্থঋণ মামলা করলে আদালত ব্যাংকের পক্ষে রায় ও ডিক্রি দেন। পরে ব্যাংক অর্থজারি মোকদ্দমা করে, যা বর্তমানে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর্যায়ে রয়েছে। উক্ত মামলা ছাড়াও ব্যাংক তাঁর বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার-সংক্রান্ত সিআর মামলা করেছে, যা বর্তমানে শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।

উপরিউক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ঋণখেলাপি ও সিআইবি রিপোর্টে তালিকাভুক্ত তালহা শাহরিয়ার আইয়ূবের নির্বাচনী এলাকা থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা গ্রহণ না করাসহ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানায় ব্যাংকটি।

সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির এই প্রার্থী সরকারি-বেসরকারি খাতের অন্তত চার ব্যাংকে ১৩৮ কোটি টাকার ঋণখেলাপি। ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি মডেল শাখা থেকে সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টের নামে ২০১৭ সালে ১৪টি ভুয়া এলসির বিপরীতে ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।

২০১৯ সালে এ বিষয়ে মামলা করে ব্যাংক। সুদসহ বর্তমানে তাঁর কাছে ব্যাংকটির পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে টি এস আইয়ূব ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। সরকার পতনের পর তিনি কারামুক্ত হন। এরই মধ্যে তাঁকে ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট করেছে ঢাকা ব্যাংক।

সূত্রে আরও জানা গেছে, টি এস আইয়ূবের সাইমেক্স লেদার প্রোডাক্টের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় ৭০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। ঋণটি পুনঃতফসিল করতে তাঁকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট জমার শর্ত দিয়েছে ব্যাংক। তিনি মাত্র ৬৫ লাখ টাকা জমা দেওয়ায় তা নিয়মিত হয়নি।

এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানার জনতা ব্যাংকে ১১ কোটি টাকার ঋণখেলাপি তিনি। এর বাইরে তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরেক প্রতিষ্ঠানের অগ্রণী ব্যাংকে ১২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আছে।

তবে খেলাপি হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে টি এস আইয়ূব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঋণখেলাপি ছিলাম, আদালতের মাধ্যমে এখন নেই। তারপরেও যদি ব্যাংক কোনো চিঠি দিয়ে থাকে, তাহলে বিস্তারিত ব্যাংক বলতে পারবে। আমি এখন ঋণখেলাপি নেই।’

এ বিষয়ে যশোরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক হাসান বলেন, টি এস আইয়ূবের বিরুদ্ধে ঢাকা ব্যাংক থেকে চিঠি এসেছে। মনোনয়ন যাচাই–বাছাইকালে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে অবৈধ বালু উত্তোলনকালে ৫৭ ড্রেজার জব্দ, আটক ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের হিজলায় মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে ৫৭টি ড্রেজার ও একটি স্টিল বডি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। এ সময় ২০ জনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। সোমবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেঘনায় অভিযান চালানো হয়। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বেলা ১১টা হতে গভীর রাত পর্যন্ত কোস্ট গার্ড ইলিশা, কালীগঞ্জ ও হিজলা থানাধীন সওড়া সৈয়দখালী এলাকাসংলগ্ন মেঘনা নদীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ওই এলাকা হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে ৫৭টি ড্রেজার ও একটি স্টিল বডি ট্রলার জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্টিল বডি ট্রলার তল্লাশি করে চারটি দেশীয় অস্ত্রসহ ২০ জনকে আটক করা হয়।

জব্দকৃত স্টিল বডি ট্রলার ও আটককৃত দুষ্কৃতকারীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হিজলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ড্রেজারগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে হিজলা থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক আরও বলেন, বালুখেকোদের হাত থেকে ফসলি জমি এবং আবাসস্থল রক্ষায় কোস্ট গার্ড অভিযান অব্যাহত রাখবে।

হিজলা থানার এসআই মো. শামিম বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে কোস্ট গার্ডের পেটি অফিসান কাজল দাস মামলা করেছেন। এ মামলায় ২০ জন নামধারী এবং অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আটককৃত ২০ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া: ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে দুই পক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে দুই পক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরদার ও হাওলাদার বংশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষ অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহত পাঁচজনকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে। এতে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মোস্তফাপুর এলাকায় সরদার ও হাওলাদার বংশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। সর্বশেষ গত আগস্টে সরদার বংশের সামচু সরদারকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাড়ে তিন মাস কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। এর পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

আজ দুপুরের পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। একপর্যায়ে সরদার বংশের সামচু সরদার ও হাওলাদার বংশের হাবিব হাওলাদারের নেতৃত্বে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানে ভাঙচুরও করা হয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ্য করেও দুই পক্ষের লোকজন তেড়ে আসেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে দুই পক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে দুই পক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফারিহা রফিক ভাবনা বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় উভয় পক্ষের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নুরের আসনে প্রার্থী হওয়ায় হাসান মামুনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
হাসান মামুন ও নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
হাসান মামুন ও নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও জোটপ্রার্থী নুরুল হক নুরের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তবে বহিষ্কারের বিষয়ে হাসান মামুন দাবি করেছেন, তিনি আগেই দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর ভাষ্য, ২৮ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রুহুল কবির রিজভীর হোয়াটসআপেও দিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন হাসান মামুন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই আসনটি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দেয় বিএনপি। এরপরও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। গতকাল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন, যা দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী বলে মনে করছে বিএনপি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান মামুন বলেন, ‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করে মনোনয়ন দাখিল করেছি। এখন এটার দরকার ছিল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত