Ajker Patrika

শখ থেকে রকেট তৈরি, উৎক্ষেপণের অনুমতির অপেক্ষায় একদল তরুণ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
শখ থেকে রকেট তৈরি, উৎক্ষেপণের অনুমতির অপেক্ষায় একদল তরুণ

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাস করেছেন নাহিয়ান আল রহমান অলি। দীর্ঘ চার বছর খাটাখাটনি করে দুটি রকেট ইঞ্জিনের প্রোটোটাইপ এবং চারটি রকেট বানিয়েছেন তিনি। তাঁকে সহযোগিতা করেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একদল শিক্ষার্থী। এখন সরকারের অনুমতি মিললেই তাঁরা সেগুলো উৎক্ষেপণ করে কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে পারবেন। 

টিম লিডার নাহিয়ান আল রহমান অলি বলেন, ‘আমরা ৬ ফুট ও ১০ ফুট উচ্চতার চারটি রকেট তৈরি করেছি। ধূমকেতু-ওয়ানের থ্রাস্ট প্রায় দেড়শ নিউটন। অপরটির নাম ধূমকেতু-টু। এর থ্রাস্ট ৪০০ নিউটন। এটির রেঞ্জ প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং ধূমকেতু-ওয়ানের রেঞ্জ প্রায় ২০ কিলোমিটার।’ 

এই ধূমকেতু তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৮ বছরের যুবা নাহিয়ান আল রহমান অলি। ২০১৯ সাল থেকে ধূমকেতু-১ নামে এই রকেট তৈরির প্রজেক্ট শুরু করেন তিনি। টানা তিন বছর চেষ্টার পর আলোর মুখ দেখে রকেট ইঞ্জিনের প্রোটোটাইপ। এখন শুধু উড়ার অপেক্ষায়। 

তিন বছরের পরিশ্রম ফল নিয়ে এখন সরকারি অনুমতির অপেক্ষায় একদল তরুণনাহিয়ান বলেন, ‘সরকার অনুমতি দিলেই উৎক্ষেপণ করা হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ২০১৭ সালে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের ওপর স্নাতক সম্পন্ন করি। ধূমকেতু প্রজেক্টটি শুরু হয় ২০১২ সালে। কিন্তু অর্থায়নের অভাবে থেমে যায় স্বপ্ন। তবে দমে যাইনি। যৎসামান্য নিজস্ব অর্থায়ন আর ব্যাংক ঋণ এই প্রজেক্টের অর্থের উৎস। আমার এই কাজে সরাসরি সহযোগিতা করে সাইদুর, নাদিম, লিয়ান, আবরার, রিজু, বিন্দু, নাইম, আশরাফসহ অনেকেই।’ 

নাহিয়ানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে তরল জ্বালানির ইঞ্জিন ডিজাইন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থাভাবে ও করোনা মহামারি সংকটে তরল অক্সিজেনের দাম বৃদ্ধিতে প্রজেক্ট চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে বিকল্প হিসেবে কঠিন জ্বালানির ৪০০ নিউটন ও ১৫০ নিউটন থ্রাস্টের দুটি ইঞ্জিনের প্রোটোটাইপ তৈরি করেন তাঁরা। এতে রকেটের আকৃতিও কমাতে হয়। বর্তমানে ৬ ফুটের দুটি ও ১০ ফুট উচ্চতার আরও দুটি প্রোটোটাইপ রকেট উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত। 

তিন বছরের পরিশ্রম ফল নিয়ে এখন সরকারি অনুমতির অপেক্ষায় একদল তরুণময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর কবীর বলেন, ‘রকেট বানানোর বিষয়টি দেশের জন্য আশার খবর। তবে এটি সফল উৎক্ষেপণের জন্য সরকারের অনুমতি এবং সহযোগিতা প্রয়োজন। খুব দ্রুত এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।’ 

সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামূল হক টিটু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অসাধারণ আবিষ্কার রকেট। তবে সেটি তৈরি করতে তাদের অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে তাদের সহযোগিতা করে পাশে থাকার সব সময় চেষ্টা করেছি। এখন রকেটটি আকাশে উড্ডয়ন করতে প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত