Ajker Patrika

ময়মনসিংহে বেপরোয়া গতিতে ঝরল ১১ প্রাণ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্থানে ঝরেছে ১১ প্রাণ। এর মধ্যে ফুলপুরে আট এবং তারাকান্দায় তিনজন নিহত হয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুর্ঘটনার জন্য যানবাহনের বেপরোয়া গতিকে দায়ী করেছেন।

গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ফুলপুর উপজেলার কুরিয়ার সেতু এলাকায় এবং বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার রামচন্দ্রপুরে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।

তারাকান্দায় নিহতরা হলেন ধোবাউড়া উপজেলার বরাটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের স্ত্রী জবেদা খাতুন (৮৫), ফুলপুরের মদীপুর সুতারপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল হাসান (১৫) ও সদরের ঘাগড়া ইউনিয়নের শুইলাম বুধবারিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলম (৩৫)। তাঁদের মধ্যে আলম সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন।

ফুলপুরে প্রাণ হারানো আটজনের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), নিশুনিয়াকান্দা গ্রামের জহর আলী (৭০), বাট্টা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫০), হালুয়াঘাট উপজেলার কয়ারহাটি গ্রামের শামসুদ্দিন (৬৫) ও রংপুরের আজিম উদ্দিন (৩৫)।

ফুলপুরের দুর্ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, রাতে হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাস দ্রুতগতিতে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে ফুলপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র হালুয়াঘাটের দিকে যাচ্ছিল। পথে কুরিয়ার সেতুসংলগ্ন স্থানে গাড়ি দুটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহেন্দ্রে থাকা চার পুরুষ ও এক নারী নিহত হন।

এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ছয়জন। তাঁদের উদ্ধার করে একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পাঁচজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে সড়কে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাদি বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। নিহতদের সবাই মাহেন্দ্রর যাত্রী। তাঁদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

তারাকান্দার দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। পথে ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কের রামচন্দ্রপুরে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে ঘটনাস্থলেই এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়। এ ছাড়া অটোচালক ও তিন যাত্রী এবং অ্যাম্বুলেন্সের দুই আরোহী আহত হন। পরে আশপাশের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোচালক আলম মারা যান।

তারাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। গাড়িতে কোনো রোগী ছিল না। দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

দুর্ঘটনার পরপরই ফুলপুরে ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বেপরোয়া গতি ও চালকদের অদক্ষতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতার কথা জানিয়ে দুর্ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত