Ajker Patrika

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাগ্নেকে খুন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ কারাগারে ৬

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩: ০৩
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাগ্নেকে খুন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ কারাগারে ৬

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ভাগ্নেকে হত্যা করছেন যোগানিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। আজ শনিবার দুপুরে তিনিসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) দিদারুল ইসলাম আজ শনিবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার লিলুখালের পাড় থেকে পুলিশ যোগানিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের আপন ভাগনে শাহ কামালের (৩৮) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। 

পরে হতকাল রাতেই নিহত শাহ কামালের মা অছিরন বেগম বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিহতের মামাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। 

আসামিরা হলেন নিহতের মামা হাবিবুর রহমান হবি (৫৫), তাঁর স্ত্রী আমেলা খাতুন ঝরনা (৪৫), তাঁদের ছেলে সারোয়ার জাহান শান্ত (২৬); হাবিবুরের দুই ভাতিজা মোস্তফা (৩০) ও রাহুল মিয়া (২২) এবং তাঁর ভাই হারেজ আলী (৫০)। 

এদিকে আজ দুপুরে হাবিবুর, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেসহ ছয়জনকে আদালতে পাঠালে তিন আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালে উপজেলার ভাইটকামারী গ্রামের ফজল মিয়ার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাগনে শাহ কামাল ৫৫ শতক জমি বর্গা নেন। পরে ২০১৯ সালে হাবিবুরের সঙ্গে ফজল মিয়ার পরিবারের ঝগড়া বাধে। তখন হাবিবুরের গুলিতে ফজলের ছেলে ইদ্রিস আলীর হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাবিবুর, তাঁর স্ত্রী-সন্তান, ভাতিজাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। তাঁদের সবাই এখন জামিনে রয়েছেন।

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফজল সেই জমি বুঝিয়ে দেননি শাহ কামালকে। ৭০ হাজার টাকাও দেননি। এ নিয়ে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই শাহ কামালের বর্গা নেওয়া জমির টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য তোড়জোড় করেন হাবিবুর ও তাঁর সহযোগীরা। পরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন ভাগনেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাবিবুর। 

পরে হাবিবুর, তাঁর স্ত্রী ঝরনা ও হাবিবুরের ভাই হারেজের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাবিবুরের ছেলে শান্ত ও তাঁর দুই ভাতিজা মস্তু ও রাহুল গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহ কামালকে ঘরে ঢেকে আনেন। পরে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করেন তাঁরা। এরপর লাশ বস্তায় ভরে পার্শ্ববর্তী লিলুখালের পাড়ে ফেলে আসেন তাঁরা। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শাহ কামাল রাতের খাবার খেয়ে বাজার এলাকায় চা খেতে বের হন। গভীর রাতেও বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী শেফালি বেগম (৩২) প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে তাঁর খোঁজ করে পাননি। পরে গতকাল সকাল ১০টার দিকে এক যুবক ভাইটকামারী লিলুখালের পাড়ে তাঁর গলাকাটা লাশ দেখতে পান। 

জরুরি সেবা ৯৯৯-এ খবর দিলে নালিতাবাড়ী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাহ কামালের লাশ উদ্ধার করে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। 

নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দিদারুল ইসলাম বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, রক্তমাখা নেকড়া, হ্যান্ড গ্লাভস ও রক্তমাখা এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয় ৷ তিনজন আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ছয়জন আসামিকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত