Ajker Patrika

সরিষাবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
সরিষাবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সাজ্জাদ হোসেন নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বনগ্রাম রাজার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী জানান, মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার কৃষি শিক্ষার শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার কাজ শেষে তাঁর নিজ বাড়ি ধনবাড়ী থানার শিরনকাজীতে ফিরছিলেন। রাস্তায় রাজার মোড়ে একই ইউনিয়নের সিংগুয়া গ্রামের অটোচালক আখের আলীর ছেলে মঞ্জুরুল হক মঞ্জু তাঁকে ডাক দিয়ে দাঁড়াতে বলেন। তিনি দাঁড়ালে মঞ্জু তার দিকে এগিয়ে এসে তাঁর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু করে মঞ্জু। পরে মঞ্জু তাঁকে মারার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। 

এরপর মঞ্জু সাজ্জাদকে আটকে রেখে ফোন করে লোকজন ডেকে আনে। তাদের মধ্যে বনগ্রাম মানিক উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাকিল আহমেদ সুমন তাঁর লোকজন নিয়ে সাজ্জাদকে মারপিট করেন। এ সময় হামলাকারীরা সাজ্জাদের পকেটে থাকা ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে সাজ্জাদকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে বৃহস্পতিবার রাতেই সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ১৩ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আনোয়ার হোসেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে একক ক্ষমতা বলে মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকেও বিভিন্ন পন্থায় মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। কেউ এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। ২০২১ সালের অক্টোবরে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর মাদ্রাসার হিতৈষী ও এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সম্প্রতি মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে স্থান না পেয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আনোয়ার হোসেন ও তাঁর লোকজন। তিনি ও তার লোকজন সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কমিটির সভাপতিকে খুনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। 

এ ব্যাপারে শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি মাদ্রাসার নিয়মিত কমিটি থাকাকালীন ২০২১ সালের এপ্রিলে ইবতেদায়ি সেকশনের ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর তৎকালীন কমিটির সভাপতি ও সানাকৈর আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন ও তাঁর ভাগনে দাতা সদস্য শাকিল আহমেদ পরিকল্পিতভাবে বিক্রি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হন। এতে সম্মতি না দেওয়ার ঘরটি বিক্রি করতে পারেনি তাঁরা। এরপর থেকেই তাঁরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে খুন-জখমের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।’ 

সাজ্জাদ আরও বলেন, ‘২০০৯ সাল ১৩ বছর যাবৎ ক্ষমতায় থেকে এই সভাপতি কাউকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করে একক ক্ষমতাবলে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পন্থায় মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। কেউ এই সব দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। একক আধিপত্য বিস্তার করে মাদ্রাসাটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান তিনি। ২০২১ সালের অক্টোবর কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মাদ্রাসার হিতৈষী ও এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সম্প্রতি মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে স্থান না পেয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। তিনি তাকেসহ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কমিটির সভাপতিকে খুনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।’ 

মহাদান ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জুয়েল ঘটনা শুনে দুঃখ প্রকাশ করে নিন্দা জানান। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। 

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল মজিদ জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মোদির সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ

অনেক দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত, দাবি পুতিনের শীর্ষ সহযোগীর

মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ‘খোররামশহর-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত