Ajker Patrika

প্রশিক্ষণ ভাতা পেতে ‘ঘুষ’, ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা

সাইফুল আরিফ জুয়েল, নেত্রকোনা
আপডেট : ২৪ মে ২০২৪, ১২: ১৭
প্রশিক্ষণ ভাতা পেতে ‘ঘুষ’, ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা

নেত্রকোনার মদনে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড (ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণের ভাতা পেতে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে প্রতি ধাপে ধাপে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। চাহিদামতো টাকা না দিলে ফাইল আটকে থাকে। একই কাজের জন্য শিক্ষা দপ্তরেও দিতে হয় ঘুষ। এ নিয়ে হয়রানির শিকার হওয়া শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষকদের দাবি, হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না। সম্প্রতি আংশিক ঘুষ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের উন্নীত ভাতা উত্তোলন ফাইলের কাজ শুরু হয়। কিন্তু হিসাবরক্ষণ অফিসের চাহিদামতো পুরো ঘুষ না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডিপিএড প্রশিক্ষণে ছিলেন, তাঁদের প্রশিক্ষক উন্নীত ভাতা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া ভাতা উত্তোলনের জন্য মদন উপজেলার ২৯ জন শিক্ষক আবেদন করেন, কিন্তু ২৬ জন ডিপিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের ভাতা উত্তোলন করার আবেদন মঞ্জুর হয়। নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষক ডিপিএডের প্রশিক্ষণ ভাতা পাবেন স্কেল অনুযায়ী ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। সেই ভাতা উত্তোলনের ফাইলপত্রের কাজ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কার্যালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষকদের বকেয়া ভাতার কাজ করার জন্য প্রত্যেক শিক্ষককের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন মদন হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ। সেই হিসাবমতে প্রথমে ৭৮ হাজার টাকা ঘুষ দেন ২৬ জন শিক্ষক। এখন প্রশিক্ষণের মোট ভাতা থেকে ২০ শতাংশ দাবি করছেন তিনি। এর সঙ্গে শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভূঁইয়ার মাধ্যমে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দাবি করছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষকেরা এই বাড়তি ঘুষের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে শিক্ষকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক এমদাদ হোসাইন, শাহ জাফরিন সুলতানা, সামিউল হক জুসেফসহ অনেকে জানান, ডিপিএড প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতার জন্য তাঁরা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ দিয়েছেন। এখন শিক্ষা দপ্তরে খরচ বাবদ প্রত্যেককে আবার ২ হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে তাঁদের সহকারী শিক্ষক সাখাওয়াত ভূঁইয়া জানিয়েছেন। এর সঙ্গে হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে আবার মোট বিলের ২০ শতাংশ ঘুষ দিতে হবে। বিল উত্তোলন করতে গিয়ে এভাবে শিক্ষকেরা বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভূঁইয়া বলেন, ‘ডিপিএড স্কেলের ভাতার জন্য তো কিছু খরচ দিতেই হয়েছে। ভাতা উত্তোলনের জন্য ২০ শতাংশ দাবি করলেও টাকা দেওয়া হয়নি।’

জানতে চাইলে মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ বলেন, ‘বিল তৈরির জন্য টাকাপয়সা দিতে হয় না। আমার নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে এর দায়ভার তাঁর।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের অফিসের নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত