Ajker Patrika

বকশীগঞ্জে কাদাপানি মাখা সড়কে ‘রোগী নিয়ে যেতে হয় কাঁধে করে’

রাশেদুল ইসলাম রনি, বকশীগঞ্জ (জামালপুর)
কাদাপানিতে মাখা সড়কটিতে চলাচলে ভোগান্তির কথা জানান গ্রামবাসীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাদাপানিতে মাখা সড়কটিতে চলাচলে ভোগান্তির কথা জানান গ্রামবাসীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘এই রাস্তায় রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয় কাঁধে করে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হাঁটাও যায় না। রাত হলে বিপদ আরও বাড়ে। এভাবেই জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার একটি কাঁচা সড়কে চলাচলে ভোগান্তির কথা জানান গৃহবধূ ময়না বেগম। উপজেলার বাট্টাজোর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালগাঁও থেকে ফজিলতপাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রয়েছে। উজ্জ্বল ব্রিকস ফিল্ড থেকে শুরু করে ফকির আলীর বাড়ি পর্যন্ত সড়কটির প্রতিটি ইঞ্চি এখন খানাখন্দে ভরা। বর্ষা মৌসুমে পুরো রাস্তা কাদাপানিতে একাকার হয়ে পড়ে। সড়কটিতে চলাচল করতে গিয়ে আশপাশের পাঁচটি গ্রামের মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, গোয়ালগাঁও, ফজিলতপাড়া, কদমতলা, পূর্ববাট্টাজোর ও খোর্দ্দবাট্টাজোর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। শিক্ষার্থী, কৃষক, কর্মজীবী মানুষ ও ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এই সড়ক ব্যবহার করেন। বছরের বেশির ভাগ সময়ই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী থাকে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রাস্তার অবস্থা দুর্বিষহ হয়ে যায়।

ফজিলতপাড়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে আমরা প্রতিদিন সবজি বাজারে নিয়ে যাই। কিন্তু বৃষ্টির সময় ট্রলি, ভ্যান, রিকশা—এমনকি অটোরিকশাও চলতে পারে না। তখন সবজি ঘরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। লোকসান ছাড়া উপায় থাকে না।’

স্থানীয় মাদ্রাসাছাত্র রাব্বি বলে, ‘বর্ষায় কাদায় হাঁটা তো দূরের কথা, পা ফেলার জায়গা থাকে না। স্কুলে যেতে পারি না, অনেক সময় পরীক্ষাও মিস করি।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু বছর ধরে রাস্তাটি কাঁচা অবস্থায় পড়ে থাকলেও কোনো ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বিভিন্ন সময় নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কেউ খোঁজ নেয়নি। দাবি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। স্থানীয় সমাজকর্মী ও শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, দুই কিলোমিটার রাস্তায় যেন জনগণের কষ্ট আটকে আছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই এই কাঁচা রাস্তা একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। অথচ এটি পাকাকরণে তেমন বড় কোনো প্রকল্প দরকার নেই। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা ও অগ্রাধিকার।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাটির উন্নয়নকাজ শুরু করতে হবে। এই সড়কটি শুধু একটি গ্রামের পথ নয়, এটি পাঁচ গ্রামের মানুষকে শহরের সঙ্গে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। অবহেলা করলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল হক বলেন, সামনে কোনো বরাদ্দ এলে সবার আগে এই সড়কটিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত