Ajker Patrika

লাউতি খালের দূষণে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
লাউতি খালের দূষণে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া লাউতি খালের দূষণ কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। উপজেলার হবিরবাড়ী, জামিরদিয়া ও কাশর গ্রামের ডায়িং কারখানাগুলোর বিষাক্ত বর্জ্য মিশে কালো বর্ণ ধারণ করে খীরু নদীতে মিশে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা। এ ছাড়া খীরু নদীর মাছ ও জলজ প্রাণী বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, লাউতি খালের উভয় পাড়ের ধানি জমির মাটিতে আলকাতরার মতো কালো রঙের প্রলেপ লেগে থাকে। এতে ওই সব জমিতে নামলে অল্প সময়ের মধ্যে হাত-পা ও শরীরে চুলকানি শুরু হয়। এর ফলে নানা রকম চর্ম রোগে আক্রান্ত হন তারা। অনেক সময় জমিতে চাষ ও ধান রোপণ করার জন্য শ্রমিকও পাওয়া যায় না। 

লাউতি খালের উভয় পাড়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে গ্রামের পর গ্রামে বোরো ধানের ফসলি জমিতে শ্যালো মেশিনে পানি সেচ দিয়ে কৃষকেরা প্রচুর ফসল উৎপাদন করেন। কিন্তু বর্তমানে কারখানার দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত কালো পানি সেচের পানি হিসেবে ব্যবহার করায় উৎপাদন বহুগুণে কমে গেছে। 

অপরদিকে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্যের পানি খেয়ে অনেক সময় গরু, ছাগল ও হাঁস মারা যায়। এসব এলাকার শিশুরাও নানা রকম পেটের পীড়া এবং জটিল রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া দুর্গন্ধে আশপাশের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ ডায়িং কারখানায় ইটিপি থাকলেও তা সচল না রেখে অপরিশোধিত বর্জ্যের পানি সরাসরি কারখানার পাইপ দিয়ে খাল-বিলে ছাড়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের এতে কোনো নজর নেই। 

স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আগে এই খালের পানি সেচ দিয়ে ধান খেত প্রস্তুত করা হতো। এখন কারখানার বিষাক্ত পানি সেচ দিতে ভয় লাগে। এ পানিতে শরীরে চুলকানি ও চর্মরোগ হয়। তবুও নিরুপায় হয়ে বিষাক্ত পানি দিয়ে বোরো আবাদ করি।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্যসচিব কামরুল হাসান পাঠান বলেন, পরিবেশ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই এসব ডায়িং কারখানাগুলো ইটিপি সচল না রেখে সরাসরি কারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলছে। 

কামরুল হাসান আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষায় শিল্প কারখানার দূষিত বর্জ্য পানি ইটিপির মাধ্যমে পরিশোধন করে নদীতে ফেলা হলে কৃষি কাজে সেচ উপযোগী হবে। আর দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোর বংশ বিস্তার ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেসমিন জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিল্প-কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি ধানি জমিতে ব্যবহার করলে ধানগাছ অতি দ্রুত বেড়ে যায়। তবে ধানের শিষ বের হওয়ার পর তা মরে চিটা হয়। বর্জ্য মিশ্রিত পানি পরিশোধন করে নদীতে ফেলা জরুরি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত