Ajker Patrika

নদের স্রোতে ভেসে আসা গাছেই জীবন-জীবিকা

  • মনু নদের স্রোতে ভেসে আসে ছোট-বড় গাছের খণ্ড
  • বর্ষায় স্রোত বাড়লে এর পরিমাণও বাড়ে
  • মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার অর্ধশতাধিক পরিবারের জীবিকার উৎস এটি
  • স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে নদ থেকে গাছ তোলে
  • এসব গাছ শুকিয়ে পরে কাঠ হিসেবে বিক্রি করা হয়
  • নদের তীরবর্তী গ্রামে ভেসে আসে গাছ-কাঠের স্তূপ
  • অপেক্ষাকৃত কম দামে পাওয়ায় আগ্রহ ক্রেতাদের
মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭: ২৫
গ্রামজুড়ে সারি সারি কাঠের স্তূপ। যেন করাতকলের আঙিনা। নদ থেকে ভেসে আসা গাছ শুকিয়ে এখানে সাজিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে নিয়ে যান ক্রেতারা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার তেলিবিল গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রামজুড়ে সারি সারি কাঠের স্তূপ। যেন করাতকলের আঙিনা। নদ থেকে ভেসে আসা গাছ শুকিয়ে এখানে সাজিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে নিয়ে যান ক্রেতারা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার তেলিবিল গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনু নদের স্রোত বয়ে আনে বহু টুকরা গাছ। সেগুলোই জীবনধারণের ভরসা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের বহু পরিবারের। বর্ষায় বৃষ্টির সঙ্গে নদী যখন ফুলে-ফেঁপে ওঠে, তখন স্রোতে ভেসে আসে এগুলো। ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নেমে এসব তুলে আনে স্থানীয়রা। পরে শুকিয়ে কাঠ হিসেবে বিক্রি করা হয় বাজারে। অর্ধশতাধিক পরিবার এভাবেই তাদের সংসার চালায়।

মনু নদ সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে ভারতের ত্রিপুরা থেকে। দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতরে ৭৪ কিলোমিটার। বর্ষার সময় নদে তীব্র স্রোত নামে। সঙ্গে ভেসে আসে ছোট-বড় গাছের খণ্ড। এসব যখন ভেসে আসে, তখন সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে রশির মধ্যে লোহার আংটাজাতীয় বস্তু বেঁধে নদীতে ছুড়ে মারা হয়। পরে রশি দিয়ে টেনে ওপরে আনা হয়। অনেকে সাঁতার কেটে নদী থেকে এসব তুলে আনে। কয়েকজন মিলে দল বেঁধে এই কাজ করে। বৃষ্টির মৌসুম যত দীর্ঘ হয়, গাছের পরিমাণের সঙ্গে আয়ও বাড়ে।

কুলাউড়ার তেলিবিল গ্রামে গেলে সারি সারি কাঠের স্তূপ চোখে পড়ে। যেন করাতকলের আঙিনা। নদী থেকে ভেসে আসা এসব গাছ শুকিয়ে এখানে সাজিয়ে রাখা হয়। এরপর পিকআপ বা ট্রলি গাড়িতে ভরে বিক্রি করা হয়। এখানে এক পিকআপ কাঠের দাম ৪ থেকে ৫ হাজার এবং এক ট্রলির দাম প্রায় ৩ হাজার টাকা। বাজারে এই কাঠের দাম আরও বেশি। তাই স্থানীয় ক্রেতারাও আগ্রহী।

লিয়াকত আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘নিয়মিত এখন থেকে জ্বালানি কাঠ কিনে নিই। এখানে দুইভাবে বিক্রি হয়—কেউ চাইলে বড় বড় গাছের খণ্ড নিতে পারেন, আবার ছোট করা কাঠের স্তূপও নেওয়া যায়। আমি তিন হাজার টাকা দিয়ে এক ট্রলি জ্বালানি কিনেছি। এটা বাজার থেকে কিনতে গেলে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা লাগবে।’

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা আরিফ আলী বলেন, ‘আমরা নদী থেকে এসব গাছ সংগ্রহ ও বিক্রি করি। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় আমরা প্রথমে সংগ্রহ করি, পরে অন্য এলাকার মানুষ। তবে কাঠের স্তূপ দেখে সহজ মনে হলেও আসলে এই কাজ অনেক কঠিন। তবে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমাদের গ্রামেই প্রায় ৩০টি পরিবার আছে, যারা এই কাজে যুক্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘমল্লারের জবাবের পর ডাকসু ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যা লিখলেন শশী থারুর

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ডে স্থায়ী বসবাসের আবেদন করবেন যেভাবে

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইলেন ফখরুল

শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হলো না জাবি শিক্ষক মৌমিতার

অনিয়মের অভিযোগ এনে জাকসু নির্বাচন কমিশন সদস্যের পদত্যাগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত