Ajker Patrika

কুলিয়ারচরের নাজিরদীঘি দখল চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ৪৪
কুলিয়ারচরের নাজিরদীঘি দখল চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মোশাররফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী নাজিরদীঘি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাজিরদীঘি গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছে। অভিযুক্ত মোশাররফ বাজিতপুর উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। 

নাজিরদীঘি গ্রামবাসীর পক্ষে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সাইদুর রহমান বাছির, আব্দুল কাইয়ুম, নূর মোহাম্মদ, বোরহান উদ্দিন প্রমুখ। মানববন্ধনে তাঁরা বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী আমাদের নাজিরদীঘি। আমাদের জন্মের আগে থেকে এই দীঘির নামে একটি গ্রাম, একটি মৌজা হয়েছে। এই দিঘি সরকারি সম্পদ, আমাদের ঐতিহ্য। এই দিঘিটি সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে। সরকারি এই দিঘি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নাজিরদীঘি গ্রামের ২০০ কৃষক এই দিঘি থেকে পানি নিয়ে জমিতে সেচ দেয়। মোশাররফ জাল জালিয়াতি করে এই দিঘিটি দখল করার চেষ্টা করছেন। মোশাররফসহ এর সঙ্গে জড়িত সবার বিচার দাবি চাই।’ পরে এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গ্রামবাসী স্মারকলিপি দেয়। 

এ বিষয়ে আদালতে করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, কুলিয়ারচর নাজিরদীঘি মৌজায় ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ১১১২ নম্বর এএস দাগে (১৫৩২ নম্বর আরএস দাগ) ২৪ দশমিক ৮৪ একর আয়তনের নাজিরদীঘি জলমহাল রয়েছে। যা ১৩৯৮ সাল থেকে বিভিন্ন মৎস্যজীবীর কাছে লিজ দিয়ে রাজস্ব আয় করছে সরকার। বাজিতপুরের নোয়াপাড়ার হামিদ উদ্দিন আহমেদ ১৪১৫-১৭ বঙ্গাব্দ মেয়াদে ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৪১ টাকায় পুকুরটি লিজ নিয়েছিলেন। পুকুরের দখলনামায় একই গ্রামের মোশাররফ হোসেন সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর দেন। 

পরে ১৪২০-২২ বঙ্গাব্দ মেয়াদে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় পূর্ব নাজিরদীঘি পুকুরপাড় মৎস্যজীবী সমিতির অনুকূলে আব্দুস ছাত্তারকে জলমহালটি লিজ দেওয়া হয়। কিন্তু তা দখলে নিতে মোশাররফ হোসেন ও তাঁর মা হালিমা খাতুন মালিক সেজে ২ নম্বর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। আদালতের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি সরকারের লিজ কার্যক্রমে তাঁরা নিষেধাজ্ঞা আদায় করে নেন। 

মামলার আরজিতে বলা হয়, জালিয়াতি করে প্রতিপক্ষ মোশাররফ জলমহালের মালিকানা দাবি করছেন। মামলায় তিনি ৪ নম্বর সিএস খতিয়ানের যে স্বাক্ষরিত কপি জমা দিয়েছেন, তাতে জলমহালসহ ৯টি দাগের উল্লেখ রয়েছে। অথচ মূল বালাম বইয়ে ৪ নম্বর সিএস খতিয়ানে আটটি দাগের উল্লেখ আছে। সেখানে ১১১২ নম্বর দাগের উল্লেখ নেই। ফলে ৪ নম্বর খতিয়ানের নকলটি জাল। মোশাররফ তাঁর মামলায় আদালতে জাল নকল জমা দিয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন জেলা প্রশাসক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটি ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল তৎকালীন এডিসি (রাজস্ব) নুরুজ্জামানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই তদন্তে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিও জালিয়াতির প্রমাণ পায়। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টায় জালিয়াতি করার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। মোশাররফ হোসেনকে জালিয়াতিতে সহযোগিতা করার দায়ে কুলিয়ারচর উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী তহসিলদার সাইফুল ইসলাম বরখাস্ত হন। তদন্তের স্বার্থে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

এ বিষয়ে কুলিয়ারচরের ওসমানপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মনির উদ্দিন আহমাদ বলেন, ‘মোশাররফ হোসেন দিঘি/জলমহালটি দাবি করছেন ৪ নম্বর খতিয়ানের মূলে। মূলত এটি ১১১২ নম্বর দাগ ১ নম্বর খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে ৪ নম্বর খতিয়ানে ১১১২ দাগ উল্লেখ করে মালিকানা দাবি করছেন। যার কোনো ভিত্তি নেই। এ ছাড়া সরকারি সব রেকর্ডে দিঘিটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবেই উল্লেখ আছে।’ 

অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। আপনি চাইলে আমি আমার সকল কাগজপত্র দেখাতে পারি।’ 

কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি আমার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অলরেডি দুদকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের স্টাফসহ যারা এর সঙ্গে জড়িত, তা তদন্তাধীন রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলাও চলছে। আইনগতভাবে যেটুকু করার কথা ছিল, জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে তরুণকে গুলি করে হত্যা, বিএনপির দুই গ্রুপে উত্তেজনা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের গুলিতে তুহিন দেওয়ান (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন দেওয়ান মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেহেরকান্দি এলাকার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি সেলিম দেওয়ানের ছেলে।মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি ও মুন্সিকান্দি গ্রামের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত তুহিন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও বিএনপি নেতা আতিক মল্লিকের অনুসারী।

নিহতের চাচাতো ভাই আকাশ দেওয়ান জানান, রোববার রাতে তুহিন হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এ সময় মুন্সিকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ওজির আলী ও আওলাদ গ্রুপের অনুসারী লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে পেছন থেকে তুহিনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ সময় তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রান্ত সর্দার জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে ও ঘাড়ে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা: তাপমাত্রা কমে ২০-এর নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে নেমে এসেছে এ বছরের প্রথম কুয়াশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর থেকেই রাজশাহী শহর ও আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোর চারপাশ মোড়ানো ছিল ঘন কুয়াশার চাদরে। এই কুয়াশাময় সকাল যেন জানিয়ে দিয়েছে, আসছে শীত, আসছে স্নিগ্ধতার মৌসুম।

শীতের এমন আগমনী ছোঁয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। কুয়াশাঢাকা সকাল জানিয়ে দিচ্ছে, শীত আর বেশি দূরে নয়। এদিন ভোরের আলো ফুটলেও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে চলতে দেখা যায় হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশা ভেদ করে গন্তব্যের পথে ছুটে যায় মানুষ।

এদিকে গ্রামের মাঠে শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ‘আজকের সকালেই এবার প্রথমবার শীত টের পেলাম। এখন থেকে হয়তো শীত বাড়বে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সোমবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এখন থেকে তাপমাত্রা কমবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২ বছরেই ফাটল বিদ্যালয়ের ২ কোটি টাকার ভবনে, নিম্নমানের কাজের অভিযোগ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর পার হতে না হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রায় দুই কোটি দুই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভবনের বারান্দা, সিঁড়ি, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল ধরায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরা।

চিরিরবন্দর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের বানিয়াখাড়ী সরকারি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই কোটি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

নিম্নমানের কাজের অভিযোগ এনে স্থানীয় অভিভাবক মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় দুই বছরের মধ্যেই বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজের সময় আমরা মৌখিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারকে অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘নতুন ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নিচতলার সিঁড়ির বারান্দায় বড় ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের মেঝে ও পিলারের সঙ্গে দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানোর পর তিনি এসে ছবি তুলে নিয়ে গেছেন।’

চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা খাতুন বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ের দুই বছর এখনো হয়নি, তাতেই মেঝেসহ অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তারা দ্রুত মেরামত করার জন্য আশ্বাস দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার আবেদ আলী মাস্টার বলেন, ‘বিল্ডিং হস্তান্তর করার প্রায় দুই বছর হয়েছে। মেঝেতে শুধু পলেস্তারায় “চিড়” ধরেছে, তেমন কোনো সমস্যা নেই। আমি আমার ম্যানেজারকে পাঠিয়ে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করব।’

এলজিইডির চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান একই সুরে বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের মেঝে ও সিঁড়ির কিছু অংশে কেবল পলেস্তারার ওপরে ফাটল বা চিড় ধরেছে। আমি ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত মেরামতের জন্য বলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনার সীমান্ত গ্রাম ভবানীপুর: পাকা রাস্তা-সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই ভবানীপুরের বাসিন্দাদের ভরসা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই ভবানীপুরের বাসিন্দাদের ভরসা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় ভারত সীমান্তঘেঁষা গ্রাম ভবানীপুর। স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে আজও এই জনপদ পিছিয়ে আছে অন্ধকারে। এখানকার কয়েক হাজার মানুষের জীবন যেন দুর্গম যাতায়াতে আটকা—নেই কোনো পাকা সড়ক, নেই স্থায়ী সেতু। ভাঙা মাটির রাস্তা আর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আনা থেকে শুরু করে গর্ভবতী নারী বা রোগীকে জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে নিতেও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

গ্রামের একমাত্র সেতুটি ২০১৪ সালের দিকে ভেঙে যাওয়ার পর কাঠ-বাঁশের সেতুই এখন একমাত্র ভরসা। উন্নয়ন যেন এখানকার মানুষের কাছে সোনার হরিণ। কবে মিলবে স্থায়ী সেতু ও পাকা রাস্তা জানেন না কেউই।

স্থানীয় বাসিন্দা সজীব মিয়া বলেন, ‘যুগের পর যুগ কেটে গেলেও আমরা উন্নয়নবঞ্চিত। স্বাধীনতার পর থেকে এ গ্রামে কোনো দিন পাকা রাস্তা বা স্থায়ী সেতু হয়নি। গ্রামের দুটি সেতুর মধ্যে একটি কাঠ-বাঁশের আর অন্যটি পাকা হলেও সেটিও সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমেই পথ মেরামত করে যাতায়াত করছি।’

দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

আরেক বাসিন্দা সামছু মিয়া জানান, গর্ভবতী নারী বা রোগীকে জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে নিতে নদীপথই ভরসা। কৃষিজাত পণ্যও বাজারে নেওয়া কষ্টসাধ্য।

স্কুলশিক্ষার্থী মুর্শিদা আক্তার বলে, ‘প্রতিদিন কাঁচা রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে হয় স্কুলে যেতে। বর্ষায় কাদা-জলে ভিজে স্কুলে পৌঁছানোই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে পড়ালেখায় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। আমাদের দাবি পাকা রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করা হোক।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা আফসানা বলেন, ‘গ্রামটি দেখেছি। মানুষ সত্যিই কষ্টে আছে। ভবানীপুরের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে। শিগগিরই যাতে গ্রামের মানুষ যাতায়াত সুবিধা ভোগ করতে পারে, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত