Ajker Patrika

কুলিয়ারচরের নাজিরদীঘি দখল চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ৪৪
কুলিয়ারচরের নাজিরদীঘি দখল চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মোশাররফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী নাজিরদীঘি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাজিরদীঘি গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছে। অভিযুক্ত মোশাররফ বাজিতপুর উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। 

নাজিরদীঘি গ্রামবাসীর পক্ষে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সাইদুর রহমান বাছির, আব্দুল কাইয়ুম, নূর মোহাম্মদ, বোরহান উদ্দিন প্রমুখ। মানববন্ধনে তাঁরা বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী আমাদের নাজিরদীঘি। আমাদের জন্মের আগে থেকে এই দীঘির নামে একটি গ্রাম, একটি মৌজা হয়েছে। এই দিঘি সরকারি সম্পদ, আমাদের ঐতিহ্য। এই দিঘিটি সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে। সরকারি এই দিঘি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নাজিরদীঘি গ্রামের ২০০ কৃষক এই দিঘি থেকে পানি নিয়ে জমিতে সেচ দেয়। মোশাররফ জাল জালিয়াতি করে এই দিঘিটি দখল করার চেষ্টা করছেন। মোশাররফসহ এর সঙ্গে জড়িত সবার বিচার দাবি চাই।’ পরে এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গ্রামবাসী স্মারকলিপি দেয়। 

এ বিষয়ে আদালতে করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, কুলিয়ারচর নাজিরদীঘি মৌজায় ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ১১১২ নম্বর এএস দাগে (১৫৩২ নম্বর আরএস দাগ) ২৪ দশমিক ৮৪ একর আয়তনের নাজিরদীঘি জলমহাল রয়েছে। যা ১৩৯৮ সাল থেকে বিভিন্ন মৎস্যজীবীর কাছে লিজ দিয়ে রাজস্ব আয় করছে সরকার। বাজিতপুরের নোয়াপাড়ার হামিদ উদ্দিন আহমেদ ১৪১৫-১৭ বঙ্গাব্দ মেয়াদে ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৪১ টাকায় পুকুরটি লিজ নিয়েছিলেন। পুকুরের দখলনামায় একই গ্রামের মোশাররফ হোসেন সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর দেন। 

পরে ১৪২০-২২ বঙ্গাব্দ মেয়াদে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় পূর্ব নাজিরদীঘি পুকুরপাড় মৎস্যজীবী সমিতির অনুকূলে আব্দুস ছাত্তারকে জলমহালটি লিজ দেওয়া হয়। কিন্তু তা দখলে নিতে মোশাররফ হোসেন ও তাঁর মা হালিমা খাতুন মালিক সেজে ২ নম্বর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। আদালতের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি সরকারের লিজ কার্যক্রমে তাঁরা নিষেধাজ্ঞা আদায় করে নেন। 

মামলার আরজিতে বলা হয়, জালিয়াতি করে প্রতিপক্ষ মোশাররফ জলমহালের মালিকানা দাবি করছেন। মামলায় তিনি ৪ নম্বর সিএস খতিয়ানের যে স্বাক্ষরিত কপি জমা দিয়েছেন, তাতে জলমহালসহ ৯টি দাগের উল্লেখ রয়েছে। অথচ মূল বালাম বইয়ে ৪ নম্বর সিএস খতিয়ানে আটটি দাগের উল্লেখ আছে। সেখানে ১১১২ নম্বর দাগের উল্লেখ নেই। ফলে ৪ নম্বর খতিয়ানের নকলটি জাল। মোশাররফ তাঁর মামলায় আদালতে জাল নকল জমা দিয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন জেলা প্রশাসক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটি ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল তৎকালীন এডিসি (রাজস্ব) নুরুজ্জামানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই তদন্তে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিও জালিয়াতির প্রমাণ পায়। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টায় জালিয়াতি করার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। মোশাররফ হোসেনকে জালিয়াতিতে সহযোগিতা করার দায়ে কুলিয়ারচর উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী তহসিলদার সাইফুল ইসলাম বরখাস্ত হন। তদন্তের স্বার্থে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

এ বিষয়ে কুলিয়ারচরের ওসমানপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মনির উদ্দিন আহমাদ বলেন, ‘মোশাররফ হোসেন দিঘি/জলমহালটি দাবি করছেন ৪ নম্বর খতিয়ানের মূলে। মূলত এটি ১১১২ নম্বর দাগ ১ নম্বর খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে ৪ নম্বর খতিয়ানে ১১১২ দাগ উল্লেখ করে মালিকানা দাবি করছেন। যার কোনো ভিত্তি নেই। এ ছাড়া সরকারি সব রেকর্ডে দিঘিটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবেই উল্লেখ আছে।’ 

অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। আপনি চাইলে আমি আমার সকল কাগজপত্র দেখাতে পারি।’ 

কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি আমার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অলরেডি দুদকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের স্টাফসহ যারা এর সঙ্গে জড়িত, তা তদন্তাধীন রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলাও চলছে। আইনগতভাবে যেটুকু করার কথা ছিল, জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

গাজীপুরের শ্রীপুরে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যান কৃষক জালাল উদ্দীন। পুরো ট্রেন তাঁর ওপর দিয়ে গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহত জালাল উদ্দীন (৪৫) ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর আগে জালাল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, শ্রীপুর রেলস্টেশনে দাঁড়ানো মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন। এ সময় তিনি ট্রেনে উঠতে দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছেড়ে দেয়। এ সময় পা পিছলে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান তিনি। এর পরের ঘটনা বলতে পারেননি গুরুতর আহত জালাল উদ্দীন।

স্থানীয় দোকানি মনির হোসেন জানান, স্টেশনে দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়া শুরু করে। হঠাৎ জালাল উদ্দীন এক নম্বর লাইনে দৌড়ালে পা পিছলে চোখের পলকে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু বলেন, রাতেই তিনি মারা গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজন মানুষ জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তা ছাড়া বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে এনসিপি নেতা পাটওয়ারীর কুশপুতুল পোড়াল জিয়া সাইবার ফোর্স

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩২
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের করণীয় এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) নোয়াখালী জেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করে সভায় অংশগ্রহণকারীরা।

নোয়াখালী জিয়া সাইবার ফোর্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর অর রশিদ আজাদ, নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম পলাশসহ আরও অনেকে।

এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সভায় বক্তারা বলেন, অদৃশ্য শক্তি ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। এ অপপ্রচার রুখে দিতে হলে বিএনপির জিয়া সাইবার ফোর্স ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঠিক তথ্য ছবি ও প্রমাণ দিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে এবং দল থেকে যাকে ধানের শীষ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভা শেষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে তরুণকে গুলি করে হত্যা, বিএনপির দুই গ্রুপে উত্তেজনা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের গুলিতে তুহিন দেওয়ান (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন দেওয়ান মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেহেরকান্দি এলাকার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি সেলিম দেওয়ানের ছেলে।মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি ও মুন্সিকান্দি গ্রামের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত তুহিন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও বিএনপি নেতা আতিক মল্লিকের অনুসারী।

নিহতের চাচাতো ভাই আকাশ দেওয়ান জানান, রোববার রাতে তুহিন হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এ সময় মুন্সিকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ওজির আলী ও আওলাদ গ্রুপের অনুসারী লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে পেছন থেকে তুহিনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ সময় তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রান্ত সর্দার জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে ও ঘাড়ে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা: তাপমাত্রা কমে ২০-এর নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে নেমে এসেছে এ বছরের প্রথম কুয়াশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর থেকেই রাজশাহী শহর ও আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোর চারপাশ মোড়ানো ছিল ঘন কুয়াশার চাদরে। এই কুয়াশাময় সকাল যেন জানিয়ে দিয়েছে, আসছে শীত, আসছে স্নিগ্ধতার মৌসুম।

শীতের এমন আগমনী ছোঁয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। কুয়াশাঢাকা সকাল জানিয়ে দিচ্ছে, শীত আর বেশি দূরে নয়। এদিন ভোরের আলো ফুটলেও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে চলতে দেখা যায় হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশা ভেদ করে গন্তব্যের পথে ছুটে যায় মানুষ।

এদিকে গ্রামের মাঠে শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ‘আজকের সকালেই এবার প্রথমবার শীত টের পেলাম। এখন থেকে হয়তো শীত বাড়বে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সোমবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এখন থেকে তাপমাত্রা কমবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত