Ajker Patrika

সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

­যশোর প্রতিনিধি
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ। ছবি: সংগৃহীত
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে এ হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন ওই সাংবাদিক। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মনিরামপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম আব্দুল আলিম জিন্নাহ। তিনি খেদাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। অভিযোগকারী সাংবাদিকের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি দৈনিক আজকের পত্রিকার মনিরামপুর প্রতিনিধি।

সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের তথ্য সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণ করায় তাঁকে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম।

এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামে মোহন্ততলা মন্দির অভিমুখী কাঁচা রাস্তায় সরকারি অর্থায়নে ইটের সলিংয়ের কাজ হয়েছে। পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহর তত্ত্বাবধানে কাজটি বাস্তবায়িত হয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে নামমাত্র বালু ছড়িয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করায় ৮-১০ দিনের মধ্যে বেশির ভাগ ইট ভেঙে গেছে—স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে আমি গত মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে রাস্তার ভিডিও ধারণ করি।’

আনোয়ার বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুনসুর আলীর কাছে রাস্তার সলিংয়ের বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি খারাপ ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কাজটি পরিষদের চেয়ারম্যান করিয়েছেন। এরপর চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহর কাছে রাস্তাটি কোন প্রকল্পের, কত টাকা বরাদ্দের ও ইটের মান নিয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রাস্তার কাজ ভালো হয়েছে দাবি করে অসংলগ্ন উত্তর দেন। পরে রাস্তার কাজের বিষয়ে জানতে ইটের সলিংয়ের ভিডিও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইফুল ইসলামকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাই। পিআইওর দপ্তরে ভিডিও পাঠানোর বিষয়টি জানতে পেরে খেপে যান চেয়ারম্যান জিন্নাহ। পরে তিনি (চেয়ারম্যান) আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে হত্যার হুমকি দেন।’

আনোয়ার আরও বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দরিদ্রদের বিভিন্ন ভাতার নামে অর্থ বাণিজ্য করায় একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন ওই চেয়ারম্যান। গত বছর প্রতিবন্ধী ভাতার বই বিতরণ ও আঙুলে ছাপ নেওয়ার নামে ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগীদের জিম্মি করে কয়েকজনের কাছ থেকে দুই হাজার করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তখন আজকের পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ তদন্তের পর চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম উপকারভোগীদের সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন। সেই থেকে আমার ওপর চটে আছেন তিনি।’  

হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি সাংবাদিককে হুমকি দিইনি। আমার বক্তব্য মোবাইলে ধারণ করে এডিট করা হয়েছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খেদাপাড়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে নতুন সংস্কার হওয়া ইটের সলিং রাস্তাটি আমার দপ্তরের না। এটা উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের। রাস্তার সলিংয়ের ছবি আমি দেখেছি। ইটের মান ভালো না।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের হুমকির অডিও রেকর্ড শুনেছি। এই ঘটনায় সাংবাদিক আনোয়ার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত