Ajker Patrika

মেঝেতে চিকিৎসা রোগীর

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১১: ৩৭
মেঝেতে চিকিৎসা রোগীর

মাগুরায় করোনা রোগীদের চিকিৎসায় একমাত্র আশ্রয়স্থল ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল। যদিও সদর ছাড়াও তিন উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীর জন্য শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু করোনার চিকিৎসায় সদর হাসপাতাল আক্রান্ত ব্যক্তিদের শেষ ভরসা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রোগী বাড়ায় করোনা ওয়ার্ডে চাপ বেড়েছে। নতুন রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।

শালিখা উপজেলার বুনাগাতি থেকে সাত দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন জালাল শেখ। শয্যা খালি না থাকায় তাঁর স্থান হয়েছে মেঝেতে। করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন তাঁর নিকটাত্মীয় সবুর হোসেন। করোনা শনাক্ত হলে জালাল শেখকে নেওয়া হবে হাসপাতালের নতুন ভবনে করোনা ওয়ার্ডে।

জালাল শেখের মতো অনেকেই হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। করোনা ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। হাসপাতালের চারতলায় অনেকে আবার করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেখতে আসছেন সঙ্গে ছোট শিশু নিয়ে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে রোগীর স্বজনেরা অবাধে চলাফেরা করায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে ধারণা করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। তাঁরা বলছেন, একজন রোগীর সঙ্গে কয়েকজন স্বজন থাকায় চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। বারবার নিষেধ করলেও কেউ কারও কথা শুনছে না।

গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ২৫১ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। রোগী আরও বাড়লে করোনা রোগীদের সীমিত লোকবল দিয়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হবে বলে আশঙ্কা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল মাগুরা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছ, করোনা রোগীদের সঙ্গে থাকা স্বজনদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ আছেন হাসপাতালের শয্যায়, কেউ শয্যার নিচেই মেঝেতে। সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা নেই রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের মধ্যে।

শ্রীপুর উপজেলার কাজলী থেকে দাদা-দাদিকে নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন নেসারত শেখ। তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে করোনার চিকিৎসায় মাত্র ১০ শতাংশ ওষুধ দেওয়া হয়। বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ওষুধ সরবরাহ করলে বাইরে যেতে হতো না।’

এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স সালমা পারভিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে করোনা ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ৮০। হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগী রয়েছেন ৫৯ জন। সবার সেবা দিতে নার্স আছেন ছয়জন এবং চিকিৎসক রয়েছেন পাঁচজন।

সালমা পারভিন দাবি করেন, হাসপাতালে অক্সিজেন পর্যাপ্ত রয়েছে। হাসপাতালে যেসব ওষুধ আছে, সেগুলো রোগীরা পেয়ে থাকেন। যেটার সরবরাহ নেই, সেটা বাইরে থেকে কিনতে হয়।

সালমা পারভিন আরও বলেন, ‘একজন রোগীর কাছে গড়ে দুজন করে অ্যাটেনডেন্ট থাকেন। অনেক সময় এঁরা ঠিকমতো মাস্ক পরেন না। বাইরের লোকজন বেশি আসছেন। তাঁরা আবার বাইরে গিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। বললেও শোনেন না।’

হাসপাতালের আরএমও (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) ডা. বিকাশকুমার শিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে করোনা রোগীর শয্যাসংখ্যা ১০০ করা হয়েছে। যে কারণে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রায় অর্ধেকটাই এখন করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।’

আরএমও আরও জানান, আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ৫০টি। সেট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ আছে। তবে রোগীর চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে কম লোকবল নিয়ে চিকিৎসাসেবা অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে চলে গেছে।

সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে রেড জোনে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী এবং ইয়েলো জোনে ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী থাকছেন। আমাদের কিছু কিছু রোগীর আইসিইউসেবা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এ জন্য হাসপাতালে ১০টি করে আইসিইউ শয্যা রেখে যাতে চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায়, তা প্রক্রিয়াধীন আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

আক্কেলপুরে ‘একঘরে’ করে রাখা দিনমজুরকে মারধর, থানায় মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত