Ajker Patrika

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: ভয়ে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য দেননি শিক্ষার্থীরা 

ইবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ২৭
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: ভয়ে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য দেননি শিক্ষার্থীরা 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য চেয়ে দুটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি, আরেকটি দেয় হল প্রশাসন। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি দুটি দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও এই তদন্ত কমিটিকে স্বেচ্ছায় তথ্য দিয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষার্থী।

দুটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ককে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সভাপতি রেবা মণ্ডলের কক্ষে।
  
জানা যায়, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১৮ ফেব্রুয়ারি তথ্যপ্রমাণ চেয়ে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি। তার দুদিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি হল প্রশাসন দেয় আরেকটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি। বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখার কথা বলা হয়েছিল। 

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার ১৪ দিন পেরিয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আরও পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। হল প্রশাসন, শাখা ছাত্রলীগ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী অভিযুক্তদের পাশাপাশি হলে অবস্থানরত গণরুমের  শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির কাছে তথ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন। 

অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুম হাইকোর্টের আদেশে হল ছাড়লেও বাকি অভিযুক্ত অন্তত পাঁচজন হলে আছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে মুখ খুলছেন না; বিশেষ করে গণরুমে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বেশি আতঙ্কে রয়েছেন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সেদিন রাতে পাশের রুম থেকে মারধরের শব্দ অনেকে শুনেছি। কিন্তু ব্যাপারটা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা না জানার ভান করে আছেন; যাতে ছাত্রলীগের অহেতুক ঝামেলায় না পড়তে হয়। ক্যাম্পাসে আমরা চার বছরের বেশি সময় অবস্থান করব। সেই ক্ষেত্রে পরে যদি কোনো ঝামেলা হয়, তার নিরাপত্তা কে দেবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পারে, সেটা আমরা কমবেশি সবাই জানি। এ ছাড়া আমরা যেন এ ঘটনায় মুখ না খুলি, এ জন্য বিভিন্ন কায়দায় চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া না পাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুঈদ রহমান বলেন, ‘সার্বিকভাবে এর দায়ভার রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা দিতে পারে না বিধায় কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন শিক্ষার্থীরা। আমরা অতীতেও দেখেছি, বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। দেখলেও তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসব কারণেই উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া মেলেনি।’

জানতে চাইলে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব হলটির শাখা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আগামীকাল আমরা তদন্ত প্রতিবেদন হল প্রশাসন বরাবর জমা দিয়ে দেব। গণবিজ্ঞপ্তিতে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তদন্ত কমিটি প্রয়োজনমাফিক অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব আলীবদ্দীন খান বলেন, ‘উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে ওইভাবে সাড়া মেলেনি। তবে একটা মেয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছে। সাক্ষাৎকারটা আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। সবকিছু খতিয়ে আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও ৭-৮ জন জড়িত বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত