Ajker Patrika

দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে মাটির নিচে রামপালের ফেরি সার্ভিসটি

রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ০৫
দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে মাটির নিচে রামপালের ফেরি সার্ভিসটি

বিআইডব্লিউটিএর লোকবল আর জ্বালানি সংকটের কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বাগেরহাটের রামপালের একমাত্র ফেরি সার্ভিসটি। ফেরিটি বন্ধ করে দেওয়ার পর দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে সেটি মাটির নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রামপাল-পেড়িখালী খেয়াঘাটটি এই এলাকার একটি ব্যস্ততম ঘাট। একসময় রামপাল নদী ছিল প্রমত্তা। প্রবল স্রোত ও ঢেউ উপেক্ষা করে মানুষ এই ঘাট দিয়ে নৌকায় পারাপার হতো। এর আগে এই নদী পার হতে গিয়ে ঘাটে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। ডুবেছে পণ্যবাহী বড় বড় নৌযানও। এই নদীতে দীর্ঘদিনের পারাপারের দুর্ভোগ লাঘবে ১৯৯৬ সালে সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বর্তমান খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এই ঘাটে পরীক্ষামূলকভাবে বিআইডব্লিউটিএর ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেন। 

ফেরি সার্ভিস চালুর পর সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের পারাপারের দুর্ভোগ লাঘব হয়। কিন্তু এর প্রায় দুই বছর পর লোকবল আর আর্থিক সংকটের দোহাই দিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ফেরিটি বন্ধ করে দেয়। এতে দেখা দেয় আবারও পারাপারে সংকট। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ফেরিটি রামপাল সদর পুরোনো ডাকবাংলোর সামনে নদীর চরে ফেলে রাখা হয়। পরে ফেরিটি রামপাল উপজেলা এলজিআরডির তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়। বিআইডব্লিউটিএ ও উপজেলা এলজিআরডি কর্তৃপক্ষ ফেরির আর কোনো খোঁজ রাখেনি। আর এর ফাঁকে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি চক্র ফেরির দুটি ইঞ্জিনের প্রায় সব মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন নদীর চরে পড়ে থাকতে থাকতে একসময় ফেরিটি অধিকাংশ জিনিস মাটির নিচে চলে যায়। এখন রামপাল থানার সামনে ফেরির ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। 

ফেরিবিহীন পড়ে আছে ঘাটএদিকে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রামপাল-পেড়িখালী খেয়াঘাটে ফেরির পন্টুন ও গ্যাংওয়ে পড়ে ছিল অনেক দিন। মোংলার একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি সিন্ডিকেট ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ফেরির পন্টুন ও গ্যাংওয়ে কেটে নিয়ে যায়। এ নিয়ে রামপাল উপজেলা এলজিআরডি আইনের আশ্রয় নিলেও চোরাকারবারিরা আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

স্থানীয়রা বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও রামপাল এলজিআরডি সময়মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এভাবে লাখ লাখ টাকার সরকারি সম্পদ ধ্বংস হতো না। যাদের গাফিলতির জন্য ফেরিটি ধ্বংস হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আ. মতিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ সাধারণত নদীর বিষয়টি নিয়ে কাজ করে। আর ফেরি চলাচলের বিষয়টিতে বিআইডব্লিউটিসি কাজ করে। ফেরির বিষয়টি বিআইডব্লিউটিসির লোকজন ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাগেরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দীন বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এটি সম্ভবত বিআইডব্লিউটিএর হবে। এরপরও আমি খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। কর্তৃপক্ষ সার্ভে করে টেন্ডারের মাধ্যমে ফেরি উত্তোলনের ব্যবস্থা নেবে।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত