Ajker Patrika

লজ্জা ঢাকতে এমপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন পরাজিত প্রার্থী, দাবি আ.লীগ নেতাদের 

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
লজ্জা ঢাকতে এমপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন পরাজিত প্রার্থী, দাবি আ.লীগ নেতাদের 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল হক কবিরাজ পরাজিত হওয়ার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর দোষারোপ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন করেছে। ক্ষমতায় থাকা কালের নানান অনিয়মের অভিযোগ, অযোগ্যতা, ইউনিয়নের মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ নানা কারণে ভোটাররা প্রার্থীর প্রতি মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে করে দাবি করেছেন ফিলিপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা।

গত রোববার বিকেলের দিকে ফিলিপনগরের দারোগার মোড়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফিলিপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হায়দার আলী।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নৌকার প্রার্থী ফজলুল হক কবিরাজের জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মরিয়া হয়ে কাজ করলেও তাঁকে ভোটে জেতানো সম্ভব হয়নি। দাবি করা হয়, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এবং ব্যক্তিগত রাজনীতির নাস্তানাবুদ অবস্থা বুঝতে পেরে সংসদ সদস্য সরওয়ার জাহান বাদশাহসহ অন্যান্যদের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজের লজ্জা ঢাকতে চাইছেন ফজলুল হক কবিরাজ।

সংসদ সদস্য (কুষ্টিয়া-১) আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ ও স্থানীয় অন্যান্য নেতাদের ঘিরে গেল ইউনিয়ন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত পরাজিত প্রার্থী ফজলুল হক কবিরাজ। এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পত্র কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগেও দেন তিনি। এ খবর প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। ফজলুল কবিরাজের অভিযোগে বলা হয় ২৮ নভেম্বর নির্বাচনে বিজয়ী নইমুদ্দিন সেন্টু বিএনপির নেতা। ফজলুল হক কবিরাজ গণমাধ্যম এবং অন্যান্য জায়গায় দাবি করছেন সেন্টুর স্বজনদের কাছে থেকে টাকা ও ফ্ল্যাট নিয়ে ফজলুল কবিরাজকে হারিয়েছেন এমপি ও ইউনিয়নের অন্যান্য নেতারা। 

সম্মেলনে ফিলিপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে পরাজিত ফজলুল হক প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। সংসদ সদস্যের (বাদশাহর) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মনগড়া গল্প বলে দাবি জানান তিনি। আরও বলেন, বাদশাহ এমপি ২০১৭ সালে রিয়েল স্টেট কোম্পানি থেকে রাজধানীতে একটি ফ্ল্যাট কেনা শুরু করেন ২০২০ সালে ফ্ল্যাটের টাকা পরিশোধ হলে পরবর্তীতে ২০২১ সালের মে মাসে সেটি নিবন্ধন করা হয়। এর আগে এমপি বাদশাহ ভাড়া করা বাসায় থেকে তাঁর আইনজীবী পেশার কাজ করে আসছিলেন। গেল আড়াই বছরের বেশি সময় তিনি স্ব পরিবারে রাজধানীতে ওই বাসায় থাকেন। এমন বিষয় নিয়ে অবান্তর মিথ্যাচারের জন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টু বর্তমানে আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী, ফিলিপনগর এলাকার আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করলেও দীর্ঘ বছর ধরে সেন্টু নৌকার জন্য কাজ করে আসছেন। প্রয়াত নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদের হাত ধরে সেন্টুর আওয়ামী লীগে যোগদান এবং এবারের নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র ভোট করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার আদেশ দেয়া হয়েছে। এতকিছুর পরেও তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপি তকমা লাগিয়ে নিজে পাশকাটিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টার নিন্দা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। 

ফজলুল হক কবিরাজের নিজ বংশেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা তাঁর পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, ফজলুল হকের চাচাতো ভাই ওরুশ কবিরাজ উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতার মদদে ভোটে বিদ্রোহী হোন। 

ফিলিপনগর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরওয়ার জাহান বাদশাহ এমপি, সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন রিমন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুল আসকার হাসুসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বসবাস। সেক্ষেত্রে ফজলুল হকের নৌকার পরাজয়ে এইসব নেতাদের দোষারোপ হাস্যকর বলে বক্তব্য দেন সম্মেলনের আহ্বায়ক। তারা বলেন, সুষ্ঠু ভোটে জনগণ তাদের রায় দিয়েছে। শুধুমাত্র বিজয়ী প্রার্থী সেন্টুর কাছেই নয়, বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজের কাছেও পরাজিত হয়েছে। 

সম্মেলনে দাবি করা হয়, একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ফজলুল হককে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগককে বিভক্ত করে বিএনপিকে শক্তিশালী করতে চাইছে। নৌকার পরাজিত প্রার্থী ফজলুল হকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তারা বলেন, সর্বনাশী খেলা বন্ধ করুন। 

সাম্প্রতিক ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে পরাজিত হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিজয়ী হয় স্বতন্ত্ররা যাদের মধ্যে ৯ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। 

সংবাদ সম্মেলনে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদিকুজ্জামান খান, সরদার আতিয়ার রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান, প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন, মনি সরকার, মাহবুবুর রহমান, যুবলীগ নেতা ওয়াসিম কবিরাজসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এরদোয়ানও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত