Ajker Patrika

ওরা পাখির বাসা বোনে

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৪২
ওরা পাখির বাসা বোনে

‘অভয়ারণ্য’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের নতুন সংগঠন। এই সংগঠনটির প্রধান কাজ হলো পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা। একদল নবীন প্রকৃতিপ্রেমী শিক্ষার্থীদের হাত ধরে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু। 

এক সময় এদেশের বেশিরভাগ মানুষের ঘুম ভাঙত পাখির কিচিরমিচির শব্দে। এখন সচরাচর শোনা যায় না পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। এখন তা শুনতে যেতে হয় গহিন অরণ্যে। নগরায়ণের এই যুগে বন উজাড় করে দিচ্ছে রথী মহারথীরা। বন উজাড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পশু-পাখিরা। এতে পশু-পাখি এক জায়গা থেকে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’ পাখিদের বিপন্ন জীবনে কিছুটা স্বস্তি দিতে চায়। এ সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখিদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরি ও খাদ্যের জোগান দিচ্ছে। গাছের ডালে ডালে ৬০টি পাখির বাসযোগ্য মাটির মটকা লাগিয়ে দিয়েছে সংগঠনটির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর, লেকের ধারে, আমতলা ও প্রকৌশল ভবনসহ বেশ কয়েক জায়গায় গাছে হাঁড়ি স্থাপন করেছে সংগঠনটি। পর্যায়ক্রমে ক্যাম্পাসের সর্বত্রে হাঁড়ি স্থাপন করা হবে বলে বলেন এই সংগঠনের সদস্যরা। নবীন শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’ এর সদস্যরা‘অভয়ারণ্য’ এর সদস্যরা ক্যাম্পাসে পরে থাকা বিভিন্ন প্লাস্টিক বোতল ও পণ্য ব্যবহার করে পাখিদের খাবারের পাত্র হিসেবে ব্যবহার করে। তারা এসব পাত্রে পরিমাণ অনুযায়ী খাবার দিয়ে রাখে। এসব কাজের অর্থের জোগান আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে। হলের রুমে রুমে গিয়ে টাকা তুলে আনেন এই সংগঠনের সদস্যরা। 

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীদের সুরক্ষায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাবে ‘অভয়ারণ্য’। পাশাপাশি ‘অভয়ারণ্য’র কাজ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা পাখিদের জন্য একটি সুন্দর নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পেলে আমরা সারা দেশে পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলতে পারব। আর আমরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করতে পারি তাহলে প্রতি বছর অনেক বেশি অতিথি পাখি আসবে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘নবীন শিক্ষার্থীদের এই কর্মকাণ্ড দেখে ক্যাম্পাসের অন্য শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা পাবে। হারিয়ে যাওয়া পাখিদের ফিরে পাব আমরা। ক্যাম্পাস হবে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’ 

বিজ্ঞানীদের মতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির অবদান অনস্বীকার্য। বংশবিস্তার, ফুল থেকে ফল উৎপাদনে পাখির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া পাখির বিষ্ঠা মাটির ভূমির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়। জমির ফসলকে কীটপতঙ্গের হাত থেকে রক্ষা করতে পাখি এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। এমন বাস্তবতায় পাখিদের নিরাপদ পরিবেশ ও অভয়ারণ্য তৈরি করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত