Ajker Patrika

বঙ্গমাতা হলে উঠলেন ফুলপরী

ইবি প্রতিনিধি
বঙ্গমাতা হলে উঠলেন ফুলপরী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে উঠেছেন। আজ রোববার দুপুর ১২টায় বাবা আতাউর রহমানের সঙ্গে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। 

এক মাস আগে ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন ফুলপরী। তাঁকে নির্যাতনের সময় ভিডিও ধানর করার মোবাইল ফোনটি এখনো উদ্ধার করা হয়নি। 

আজ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ওঠেন ফুলপরী। সেখানে তাঁর নামে বরাদ্দ হওয়া আসনে থাকবেন তিনি। 

এ সময় ফুলপরি খাতুন বলেন, ‘আজ প্রথম দিনের মতোই অনুভূতি কাজ করছে।’ দুশ্চিন্তা বা কোনো সংকোচ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না সেরকম কোনো সংকোচ নেই। আগামীকাল থেকে ক্লাসে যাওয়া শুরু করব।’ 

ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, ‘মেয়েকে রেখে গেলাম। পাঁচ বছর পর যেন ভালোভাবে বাসায় ফেরে আসে এটাই চাই।’ 

এর আগে ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক সেলিনা নাসরিন ফুলপরীকে শেখ হাসিনা হল থেকে স্থানান্তরিত করে তাঁর পছন্দ মতো বঙ্গমাতা হলে আসন বরাদ্দ দেন। 

এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান বলেন, ‘ফুলপরীকে আগেই আসন বরাদ্দ দেওয়া হলেও আজ তিনি জিনিসপত্র নিয়ে হলে উঠেছেন। হলে তাঁর পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ তাঁর প্রাপ্য সুবিধা দেওয়া হবে।’ 

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষার্থীর বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। ক্লাসে এসে যেন কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় এ জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’ 

এদিকে ঘটনার এক মাস পার হয়ে গেলেও নির্যাতনের ভিডিও ধারণের ঘটনায় ব্যবহৃত হালিমা খাতুন উর্মীর মোবাইল ফোন ও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কয়েকটি তদন্ত কমিটি ও চিঠি চালাচালি করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। তবে অভিযোগ ওঠা নেতা-কর্মীরা নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও ভিডিও ধারণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ফুলপরী খাতুন।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘বাস্তবতা বুঝতে হবে। কেউ যদি শয়তানি করে বলে মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে, তাহলে কীভাবে উদ্ধার করা যাবে? ওই ছাত্রী পানিতে ফেলে দিয়েও বলতে পারে হারিয়ে গেছে।’ 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, ‘চিঠি পেয়েই আমরা মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের কার্যক্রম চালাচ্ছি। যে ছাত্রী মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেছিলেন, তিনি বলেছেন মোবাইলটি হারিয়ে গেছে। আমরা আমাদের মতো করে হারানো বস্তু উদ্ধারের চেষ্টা করছি।’ 

জানা গেছে, ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ১ মার্চ সানজিদা অন্তরাসহ পাঁচজনকে ক্যাম্পাস থেকে সাময়িক বহিষ্কার, হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার, ভুক্তভোগী ফুলপরীর নিরাপত্তা ও তাঁর পছন্দের হলে উঠানোর নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওইদিনই হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করে প্রশাসন। 

এ ছাড়া ৪ মার্চ পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কেন তাঁদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে তাঁদের হল ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত