Ajker Patrika

রামপালে নির্বিচার বালু উত্তোলন, প্রশাসন নির্বিকার

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২২, ১৮: ২৭
রামপালে নির্বিচার বালু উত্তোলন, প্রশাসন নির্বিকার

বাগেরহাটের রামপালের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নদী, খাল ও জলাশয় থেকে এসব বালু তোলা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও জমিতে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি স্থানীয় পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এর জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন পরিবেশকর্মীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খান জাহান আলী বিমানবন্দরসংলগ্ন ভোলা নদীর পাশে অবৈধ ‘মিনি ড্রেজার’ বসিয়ে অবাধে বালি উত্তোলন করছেন ঝনঝনিয়া এলাকার বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে ফরিদ নামের একজনের দাবি, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে খানজাহান আলী বিমান বন্দরের মধ্যে রাস্তা নির্মাণের জন্য বালু দিচ্ছেন তাঁরা।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের মধ্যে রাস্তা নির্মাণের জন্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কোনো জায়গা থেকে বালু পাচ্ছিলাম না, তাই মাটির তল থেকে বালু উত্তোলন করছি। রাস্তা নির্মাণ হলে ড্রেজার বন্ধ করে দেব।’

শুধু খানজাহান আলী বিমানবন্দর এলাকা নয়, রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা, উজুলকুর, হুড়কা, ভোজপাতিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, যার ফলে এই এলাকার পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি পরিবেশকর্মীদের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাগেরহাট জেলা শাখার সদস্য এমএ সবুর রানা বলেন, যত্রতত্র ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে; রাস্তা, বসতভিটা ও কৃষি জমিতে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। শব্দ দূষণের ফলে বালু উত্তোলনের জায়গার আশপাশের প্রাণিকূলের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকে তিনি দায়ী করেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত বলেন, ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের কারণে সবচেয়ে বড় ক্ষতি- প্রাকৃতিক ভূচিত্র নষ্ট হওয়া। এতে জনজীবন স্থায়ী প্রভাব পড়ে।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫-এর উপধারা ১ অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।

অবৈধভাবে বালু তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিবুল আলম বলেন, কয়েক দিন আগেও অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের ৪-৫টি ড্রেজার ভেঙে দেওয়া হয়। 

‘উপজেলার কোথাও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। করলে উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় মিলেছে

মালয়েশিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ১৪ হাজার টাকা

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজীর বিষয়ে ইলন মাস্কের মন্তব্যে বিস্ময়

অমীমাংসিত বিষয় সমাধানে পাকিস্তানের দাবি নাকচ করল সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বোঝার ভুলের খেসারত দিচ্ছে ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত