Ajker Patrika

সোয়া হাজার কোটি টাকার বাঁধের নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় দেবে গেল নদীর চর

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ০৫
সোয়া হাজার কোটি টাকার বাঁধের নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় দেবে গেল নদীর চর

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ঘিরে থাকা খোলপেটুয়া নদীর তিনটি পয়েন্টে প্রায় ৬০০ ফুট চর নদীতে দেবে গেছে। গত শুক্রবার বিকেলে চরের এই অংশ দেবে যায়। মেগা প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

মাঝ নদীতে চর জেগে ওঠায় নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে চর দেবে গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফে বলা হয়েছে, পুনরায় সার্ভে করে নদীর তলদেশের অবস্থা পরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে ভাটার সময় সোরা গ্রামের গাজীবাড়ি ও বৈদ্যবাড়ি এলাকায় দুটি পয়েন্টে যথাক্রমে প্রায় ২০০ ও ৩০০ ফুট চর খোলপেটুয়া নদীতে দেবে যায়। পরে রাতে অনতিদূরের মালিবাড়ি এলাকার আরও প্রায় ৩০০ ফুট চর দেবে যায়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও খোলপেটুয়া নদীর দৃষ্টিনন্দন এলাকার দীর্ঘদিনের ভাঙন রোধে পাউবো কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। একের পর এক চর দেবে গেলেও মেগা প্রকল্পের কাজের অজুহাতে টানা দুই বছর ধরে তাদের অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। গাবুরার অন্যান্য অংশে মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙনপ্রবণ ওই অংশে কাজ শুরু হয়নি।

সোরা গ্রামের আশিকুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরে অব্যাহতভাবে দৃষ্টিনন্দন ও পাশের এলাকা ভাঙছে। এসব অংশের চর নদীতে দেবে গিয়ে এলাকার একমাত্র মিষ্টি পানির পুকুর, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একটি মাদ্রাসা ঝুঁকির মধ্যে চলে যাচ্ছে। তার পরও কর্তৃপক্ষ মেগা প্রকল্পের কাজ হবে এমন অজুহাতে দীর্ঘদিনেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

আশিকুর রহমান আরও বলেন, প্রায় একই সময়ে পাশাপাশি তিনটি পয়েন্টে চর নদীতে দেবে যাওয়ায় সামনের বর্ষা মৌসুমের কথা মনে করে স্থানীয়দের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক ভর করেছে।

দেবে যাওয়া খোলপেটুয়া নদীর চরদাতিনাখালী গ্রামের আব্দুল হালিম বলেন, চর দেবে যাওয়া অংশে মাঝ নদীতে চর জেগে উঠেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে উপকূল রক্ষা বাঁধের পাশ ঘেঁষে নদী প্রবাহিত হওয়ায় একের পর এক চর দেবে ভাঙন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিষয়টি তাঁরা ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।

তবে ‘আতঙ্কের কারণ নেই’ দাবি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী প্রিন্স রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গাবুরাজুড়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। চর দেবে যাওয়া অংশে এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানকার নদীর তলদেশের অবস্থা পরীক্ষার পর জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। এ ছাড়া কার্যাদেশের মধ্যে থাকলে নদী শাসনের অংশ হিসেবে জেগে ওঠায় চর অপসারণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত