Ajker Patrika

১৫ বছর পর আক্ষেপ মেটাল বিবাহিতরা

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২১, ১১: ০১
১৫ বছর পর আক্ষেপ মেটাল বিবাহিতরা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের মাঝে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ধর্মপাড়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আকর্ষণীয় এ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।

খেলায় উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ঐতিহ্যবাহী বিবাহিত বনাম অবিবাহিত ফুটবল একাদশ অংশগ্রহণ করে।

নির্ধারিত ৮০ মিনিটের খেলায় বিবাহিত দল ৩ ও অবিবাহিত দল ২ গোল করে। ফলে ১ গোলের ব্যবধানে দীর্ঘ ১৫ বছর পর লজ্জা ঘোচাতে বিবাহিত ফুটবল একাদশ জয়লাভ করে।

জানা গেছে, যুগ যুগ ধরে জোতমোড়া দক্ষিণপাড়ার যুব সংঘ ক্লাব কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিন বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে আসছে। খেলা শেষে ওই দিন রাতে পাড়ার সব মানুষের অংশগ্রহণে এক পিকনিক ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা ও সাজসজ্জায় এই খেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার করোনায় তেমনটা ছিল না। তবে এ বছরও খেলায় ব্যাপক উত্তেজনা ছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে খেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ঠিক সকাল ৯টায় খেলা গড়ায় মাঠে। শুরু হয় দুই দলের আক্রমণ পাল্টা–আক্রমণ। এরপর ১৩ মিনিটের মাথায় সজিবের ফ্রি কিক থেকে প্রথম গোল পায় অবিবাহিত ফুটবল একাদশ। দীর্ঘ ১৫ বছর হারার লজ্জা হয়তো এবারও ঘুচল না বিবাহিতদের। প্রথম গোলেই অনেকটা ভেঙে পড়েন তাঁরা।

এরপর ২২ মিনিটের মাথায় মিড ফিল্ড থেকে মিজানের ফ্রি কিকে দুই শূন্য গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থাকে অবিবাহিত দল। ফলে গোল শূন্য নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে বিবাহিত দল।

১৫ মিনিটের বিরতি শেষে দ্বিতীয়ার্ধে খেলা গড়ায় মাঠে। খেলা শুরুর ৭ মিনিটের মাথায় মিড ফিল্ডের ডান কর্নার থেকে বিবাহিত দলের প্রথম গোল করেন সিনিয়র খেলোয়াড় নাজমুল হোসেন সেতু। কিছুটা হলেও খেলায় প্রাণ ফেরে। এরপর একের পর এক আক্রমণ করে বিবাহিত দল। পরপর দুটি কিক গোল পোস্টের বার থেকে ফেরত আসে বিবাহিতদের। দুটি কিকই করেন নববিবাহিত স্ট্রাইকার আমিন।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ১৭ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি কিক পায় বিবাহিতরা। রবিউলের পেনাল্টি কিকে খেলায় ২-২ গোলে সমতায় ফেরেন বিবাহিতরা। রবিউল গেল বছরে অবিবাহিত দলের খেলোয়াড় ছিলেন।

এরপর দুই দলের খেলোয়াড়দের চলে তুমুল লড়াই। একদিকে অবিবাহিতদের ধারাবাহিক জয় ধরে রাখা। অন্যদিকে বিবাহিতদের দীর্ঘ ১৫ বছরের পরাজয়ের গ্লানি দূর করার। পুনরায় দুই দলের আক্রমণ পাল্টা–আক্রমণে শেষ হয় নির্ধারিত ৬০ মিনিটের খেলা। পরে অতিরিক্ত সময়ের ৩ মিনিটে মিড ফিল্ড থেকে দুজনকে কাটিয়ে নিজের দ্বিতীয় ও বিবাহিত দলের তৃতীয় গোল করেন রবিউল। শেষ পর্যন্ত অবিবাহিত দল গোল পেতে ব্যর্থ হওয়ায় এক গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করে বিবাহিত দল।

এলাকাবাসী জানায়, ১৫ বছর আগে ২০০৬ সালে মাত্র ১–০ গোলে শেষ জয়ের উল্লাসে মেতেছিলেন বিবাহিতরা। গেল বছরেও মাত্র ১–০ গোলে জয়লাভ করেছিল অবিবাহিত ফুটবল একাদশ।

এ নিয়ে বিবাহিত দলের টিম ম্যানেজার রবিউল ইসলাম সাবিব ও প্রবীণ খেলোয়াড় আমিরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পরে এবার জয়ের মুখ দেখেছি। বিবাহিত সব ব্যক্তিই খুব আনন্দিত। বিবাহিত দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন সেতু বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এই আকর্ষণীয় খেলাটি খুব ছোট থেকে দেখে আসছি। একসময় অবিবাহিত দলের খেলোয়াড় ছিলাম। এখন বিবাহিত দলে খেলি।’

অবিবাহিত দলের অধিনায়ক মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, প্রতিবছরই উৎসবমুখর পরিবেশে খেলা হয়। এবার করোনায় আয়োজন ছিল না তেমন, তবে উৎসবের কমতি ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত