Ajker Patrika

ইঁদুরের পেটে কষ্টের সঞ্চয়, নতুন ঘর পেলেন সেই অসহায় নারী

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ২২: ১৫
ইঁদুরের পেটে কষ্টের সঞ্চয়, নতুন ঘর পেলেন সেই অসহায় নারী

বাবার রেখে যাওয়া জীর্ণ ঘরে অশীতিপর মা আর এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন মর্তুজা খাতুন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে একটু একটু করে টাকা জমিয়েছিলেন। ইচ্ছে ছিল এই টাকায় ভালো করে একটা ঘর বানাবেন। কিন্তু সেই টাকা কেটে ফেলে ইঁদুর। সারা জীবনের সঞ্চয় হারিয়ে ভেঙে পড়েন মর্তুজা খাতুন। এই খবর পেয়ে এগিয়ে আসে স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন। সেই সংগঠন তাঁকে একটি আধপাকা ঘর বানিয়ে দিয়েছে। 

রোববার বিকেলে সংগঠনের দায়িত্বশীল সদস্যরা নরসিংদী বেলাব উপজেলার মর্তুজা খাতুনের কাছে ঘর বুঝিয়ে দিয়েছেন। চার চালা বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর, একটি বাথরুম, একটি টিউবওয়েল ও একটি রান্না ঘর পেয়েছেন তিনি। 

মর্তুজা খাতুনের বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম মুগায়। তাঁর বাবার মৃত মানিক চান এবং মা আবেদা খাতুন। প্রায় পনেরো বছর আগে বিয়ে হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইছামতী গ্রামের নুরে আলমের সঙ্গে। তাঁদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান হয়। কিন্তু সংসার বেশি দিন টিকেনি। এক পর্যায় বিয়ে ভেঙে যায়। স্থায়ীভাবে বাবার বাড়ি চলে আসেন মর্তুজা খাতুন। এসে ৮০ বছরের বেশি বয়সী মাকে নিয়ে সংসারের ঘানি টানতে থাকেন। টিনের একচালা ছাপড়া ঘরে থাকেন তাঁরা। বৃষ্টি এলেই ভিজে যায় ঘরের সব জিনিসপত্র। 

মর্তুজা খাতুন জানান, বাবা দুই শতাংশ জমি রেখে যান। অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় ও একটি ঘর নির্মাণের জন্য টাকা জমাতে থাকেন তিনি। সেই টাকা রেখেছিলেন ঘরের মেঝে গর্ত করে। একদিন জমানো ৭০ হাজার টাকা গর্ত থেকে বের করতে গিয়ে দেখেন ইঁদুরে সব টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলেছে। মর্তুজা খাতুনের আহাজারিতে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তাঁরা সমবেদনা জানান। সেখানে সাইলেন্ট হ্যান্ডস সাপোর্ট সোসাইটির স্থানীয় প্রতিনিধি মঞ্জু আহম্মেদও উপস্থিত ছিলেন। 

অসহায় মর্তুজাকে আধ পাকা ঘর বানিয়ে দিল একটি স্থানীয় সামাজিক সংগঠন।তিনি তাঁর সংগঠনের ঊর্ধ্বতনকে ঘটনা জানালে তাঁরা ওই নারীর সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। উদ্যোগ নেন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার। দীর্ঘ দিন কাজ শেষে আজ মর্তুজাকে চার চালা বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর, একটি বাথরুম, একটি টিউবওয়েল ও একটি রান্না ঘর বুঝিয়ে দেন। 

নতুন ঘর পেয়ে অত্যন্ত খুশি মর্তুজা খাতুন। তিনি বলেন, সঞ্চয়ের টাকা নষ্ট হওয়ার পর আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমন সময় আমার পাশের বাড়ির মঞ্জু এসে আমাকে সহযোগিতার কথা বলে। তার সহযোগিতায় আজ আমি এ ঘর পেয়েছি। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাদের যেন ভালো করে। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইরফানুল হক ভুইয়া জামান বলেন, উদ্যোগটি খুবই মহৎ এবং প্রশংসার যোগ্য। আমি দোয়া করি, তারা যেন সামনের দিকে আরও এগিয়ে যেতে পরে। 

সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাহিদ আহমেদ বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে দেশের অসহায় দরিদ্র ব্যক্তিদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করা। যার ধারাবাহিকতায় আজকের এ ঘর নির্মাণ। 

এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শফিল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত