অর্চি হক, ঢাকা
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটু একটু করে ১৪ লাখ টাকা জমিয়েছিলেন রেহানা বেগম। রাজধানীর বছিলায় বেসরকারি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। ঘরের কাজ, স্কুলের চাকরির পর অবশিষ্ট সময়টুকু বাড়িতে ছাত্রছাত্রী পড়াতেন। কিন্তু গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকেই তাঁর চাকরিটা চলে যায়। এর আগেও বন্ধ হয়ে যায় বাড়িতে ছাত্রছাত্রী পড়ানো।
রেহানা বেগমের স্বপ্ন ছিল স্নাতক শেষ করা ছেলেকে বিদেশে পড়তে পাঠাবেন। সে জন্যই জমানো টাকাগুলো যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু চাকরিটা হারিয়ে অকূল পাথারে পড়ে যান পঞ্চাশোর্ধ্ব এই নারী। আয়ের সমস্ত পথ বন্ধ থাকায় কিছু লাভের আশায় আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে জমানো টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। অর্ডার করেন দুটি মোটরসাইকেল, একটি ফ্রিজ, মোবাইল ফোন ও সামার ভাউচারসহ আরও কিছু পণ্য। এসব পণ্য ক্রয়বাবদ গত মে ও জুন মাসে সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন রেহানা বেগম। কিন্তু এখন পর্যন্ত পণ্য বা টাকা কিছুই পাননি তিনি। কম দামে পণ্য পাওয়ার আশায় সারা জীবনের সঞ্চয়টুকু এখন হারাতে বসেছেন এই নারী।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সারা রাত ঘুমাতে পারি না। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ি। আল্লাহকে বলি, আমার মতো অবস্থায় তিনি যেন কোনো শত্রুকেও না ফেলেন।’
রেহানা বেগম জানান, গত বছর অনেকেই তাঁকে ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তখন বিনিয়োগ করেননি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ই-অরেঞ্জের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে দেখে গত মে মাসে ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন তিনি।
রেহানা বলেন, ‘মাশরাফি ওদের (ই-অরেঞ্জ) অ্যাম্বাসেডর হওয়ার পর দেখলাম ই-অরেঞ্জ র্যাবের অনুষ্ঠানও স্পনসর করতেছে। ওরা ই-ক্যাবেরও সদস্য। উই-এর কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও বড় বড় অনুষ্ঠানে ই-অরেঞ্জের মালিককে দেখলাম। ই-ক্যাব থেকে বলল আমাদের সদস্যদের কাছ থেকে নিশ্চিন্তে পণ্য কেনা যাবে। সবকিছু দেখে তারপরেই ই-অরেঞ্জে অর্ডার করছিলাম।’
টাকা হারানোর শঙ্কার পাশাপাশি এখন মানুষের কটু কথাও সইতে হচ্ছে রেহানা বেগমকে। তিনি জানান, আশপাশের মানুষ তাঁকে দেখে টিপ্পনী কেটে বলে, ‘বেশি লোভ করছিলা বইলাই টাকা গেছে।’
রাজধানীর পল্টন মোড়ে গনগণন রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে রেহানা বেগম যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন তাঁর চোখের জল আর ঘাম দুটোই মিলেমিশে একাকার। শাড়ির আঁচলে চোখ-মুখ মুছতে মুছতে বিদায় নেওয়ার আগে তিনি বললেন, ‘আমি এখন যেইভাবে আছি, এর চেয়ে মরণও ভালো। আমি তো অন্যায় পথে এক টাকাও আয় করি নাই, আমার সঙ্গে কেন এমন হইল?’
শুধু রেহানা বেগম নন, লাভের আশায় এমন অনেকেই বিনিয়োগ করেছিলেন গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে আলোচনায় থাকা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে। বাজারদরের চেয়ে অনেক কম দামে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের নজর কেড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। সেই লোভে পড়ে অনেকে লাখ লাখ টাকার পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ পাওয়ার আশায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও পণ্য কিংবা অগ্রিম অর্থ ফেরত না পাওয়ায় এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
এর আগে গুলশান থানায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে করা প্রতারণার মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন এবং তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমানকে। গত ১৭ আগস্ট প্রতারণার মামলাটি করেন তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক। মামলায় সোনিয়া মেহাজাবিন ও তাঁর স্বামী ছাড়াও আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
এদিকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে ধরা পড়া বনানী থানার বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক এবং ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের ভাই সোহেল রানাকে পুলিশি রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোহেল রানার বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জের সঙ্গে যোজসাজশ থাকার অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটু একটু করে ১৪ লাখ টাকা জমিয়েছিলেন রেহানা বেগম। রাজধানীর বছিলায় বেসরকারি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। ঘরের কাজ, স্কুলের চাকরির পর অবশিষ্ট সময়টুকু বাড়িতে ছাত্রছাত্রী পড়াতেন। কিন্তু গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকেই তাঁর চাকরিটা চলে যায়। এর আগেও বন্ধ হয়ে যায় বাড়িতে ছাত্রছাত্রী পড়ানো।
রেহানা বেগমের স্বপ্ন ছিল স্নাতক শেষ করা ছেলেকে বিদেশে পড়তে পাঠাবেন। সে জন্যই জমানো টাকাগুলো যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু চাকরিটা হারিয়ে অকূল পাথারে পড়ে যান পঞ্চাশোর্ধ্ব এই নারী। আয়ের সমস্ত পথ বন্ধ থাকায় কিছু লাভের আশায় আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে জমানো টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। অর্ডার করেন দুটি মোটরসাইকেল, একটি ফ্রিজ, মোবাইল ফোন ও সামার ভাউচারসহ আরও কিছু পণ্য। এসব পণ্য ক্রয়বাবদ গত মে ও জুন মাসে সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন রেহানা বেগম। কিন্তু এখন পর্যন্ত পণ্য বা টাকা কিছুই পাননি তিনি। কম দামে পণ্য পাওয়ার আশায় সারা জীবনের সঞ্চয়টুকু এখন হারাতে বসেছেন এই নারী।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সারা রাত ঘুমাতে পারি না। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ি। আল্লাহকে বলি, আমার মতো অবস্থায় তিনি যেন কোনো শত্রুকেও না ফেলেন।’
রেহানা বেগম জানান, গত বছর অনেকেই তাঁকে ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তখন বিনিয়োগ করেননি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ই-অরেঞ্জের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে দেখে গত মে মাসে ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন তিনি।
রেহানা বলেন, ‘মাশরাফি ওদের (ই-অরেঞ্জ) অ্যাম্বাসেডর হওয়ার পর দেখলাম ই-অরেঞ্জ র্যাবের অনুষ্ঠানও স্পনসর করতেছে। ওরা ই-ক্যাবেরও সদস্য। উই-এর কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও বড় বড় অনুষ্ঠানে ই-অরেঞ্জের মালিককে দেখলাম। ই-ক্যাব থেকে বলল আমাদের সদস্যদের কাছ থেকে নিশ্চিন্তে পণ্য কেনা যাবে। সবকিছু দেখে তারপরেই ই-অরেঞ্জে অর্ডার করছিলাম।’
টাকা হারানোর শঙ্কার পাশাপাশি এখন মানুষের কটু কথাও সইতে হচ্ছে রেহানা বেগমকে। তিনি জানান, আশপাশের মানুষ তাঁকে দেখে টিপ্পনী কেটে বলে, ‘বেশি লোভ করছিলা বইলাই টাকা গেছে।’
রাজধানীর পল্টন মোড়ে গনগণন রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে রেহানা বেগম যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন তাঁর চোখের জল আর ঘাম দুটোই মিলেমিশে একাকার। শাড়ির আঁচলে চোখ-মুখ মুছতে মুছতে বিদায় নেওয়ার আগে তিনি বললেন, ‘আমি এখন যেইভাবে আছি, এর চেয়ে মরণও ভালো। আমি তো অন্যায় পথে এক টাকাও আয় করি নাই, আমার সঙ্গে কেন এমন হইল?’
শুধু রেহানা বেগম নন, লাভের আশায় এমন অনেকেই বিনিয়োগ করেছিলেন গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে আলোচনায় থাকা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে। বাজারদরের চেয়ে অনেক কম দামে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের নজর কেড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। সেই লোভে পড়ে অনেকে লাখ লাখ টাকার পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ পাওয়ার আশায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও পণ্য কিংবা অগ্রিম অর্থ ফেরত না পাওয়ায় এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
এর আগে গুলশান থানায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে করা প্রতারণার মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন এবং তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমানকে। গত ১৭ আগস্ট প্রতারণার মামলাটি করেন তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক। মামলায় সোনিয়া মেহাজাবিন ও তাঁর স্বামী ছাড়াও আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
এদিকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে ধরা পড়া বনানী থানার বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক এবং ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের ভাই সোহেল রানাকে পুলিশি রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোহেল রানার বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জের সঙ্গে যোজসাজশ থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গত রমজানের শুরুতে হঠাৎ ধরা পড়ে তার ব্লাড ক্যানসার। আর্থিক সংকটে প্রাথমিক চিকিৎসার পর থেমে যায় তার চিকিৎসা কার্যক্রম। বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলার মানবিক স্বেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে আসেন। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে সাহায্য চেয়ে তারা প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করেন।
২ মিনিট আগেরাজধানীর রামপুরা ব্রিজের দুই রেলিং ঢুকে আছে একটি বাসের মাঝ বরাবর। যাত্রী নিতে আরেক বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ‘রইছ’ নামের বাসটির এই দশা হয়। ৪ জুন সকালের এই দুর্ঘটনায় বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। যাত্রী বেশি নিতে বাসচালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা, লক্কড়ঝক্কড় ও ফিটনেসবিহীন বাস দুর্ঘটনা
৫ ঘণ্টা আগেগোপালগঞ্জ জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে বছরের পর বছর বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস পার্ক করে রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন সড়কের এক লেন দখল করে রাখা হচ্ছে এসব যানবাহন। এতে প্রতিদিন যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। মালিক-শ্রমিকেরা বলছেন, নির্ধারিত স্ট্যান্ড না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি রাখছেন তাঁরা।
৫ ঘণ্টা আগেআলুতে বছরের পর বছর লাভ করে অভ্যস্ত জয়পুরহাটের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তবে এবার পড়েছেন বড় ধরনের বিপাকে। একদিকে বাজারে আলুর দাম অস্থির, অন্যদিকে হিমাগারে সংরক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন সবাই। সংরক্ষণ মৌসুমের শুরুতে স্থানীয় প্রশাসনের চাপে ভাড়া না বাড়াতে বাধ্য হলেও পরে কিছু হিমাগারের মালিক নানা অজুহা
৫ ঘণ্টা আগে