Ajker Patrika

রাজধানীতে দুই কিশোরীসহ ৪ জনের আত্মহত্যা

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে পৃথক চার স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ চারজন আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। এর মধ্যে দুই কিশোরী রয়েছে।

তাঁদের মধ্যে তিনজনকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপর দিকে খিলগাঁও থানা-পুলিশ রাতে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে পাঠায়।

মৃতরা হলেন খিলগাঁওয়ের ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শিহাবুল ইসলাম (২৪), যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এ কে স্কুলের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী সরকার (১৪), উত্তর বাড্ডার গৃহিণী বিথী আক্তার (১৯) ও খিলগাঁওয়ের স্কুলশিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার (১৪)।

মৃত শিহাবুলের বোন উম্মে সায়মা বলেন, তাঁদের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। বাবার নাম আবু সাঈদ সরকার। তাঁরা খিলগাঁও নন্দীপাড়া রসুলবাগ এলাকায় থাকেন। শিহাবুল রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্কলারশিপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করতেন শিহাবুল। সম্প্রতি তাঁর পড়ালেখা ভালো হচ্ছিল না এবং স্কলারশিপটি থাকবে না বলে ধারণা করছিলেন তিনি। এ হতাশা থেকে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁকে ডাকাডাকি শুরু করেন। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে হাসপাতালে নিলে শিহাবুল মারা যান।

এদিকে মৃত প্রিয়ন্তী সরকারের বড় ভাই প্রীতম সরকার বলেন, যাত্রাবাড়ী কাজলা মাতব্বর গলিতে তাঁদের নিজস্ব বাড়ি। যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এ কে স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল প্রিয়ন্তী। পড়ালেখা নিয়ে উদাসীন ছিল সে। এ জন্য সোমবার রাতে বাবা তাকে বকাঝকা করেন। এ অভিমান নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। টের পেয়ে রাত ১টার দিকে স্বজনেরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

উত্তর বাড্ডা আব্দুল্লাহবাগ মোড়ে একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন বিথী আক্তার। তাঁর স্বামী আসাদুজ্জামান জানান, তাঁর বাড়ি নাটোর আর বিথীর বাড়ি রাজশাহীতে। দেড় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁদের সন্তান নেই। সোমবার রাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাঁদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন বিথী। তাঁকে ডাকাডাকি করলেও রুমের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। পরে রুমের দরজা ভেঙে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, তিনটি মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাগুলো সংশ্লিষ্ট থানায় অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি তারা তদন্ত করছে।

অপর দিকে মৃত সামিয়া আক্তারের ভাই সাগর শিকদার জানান, তাঁদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার শিংগাতি গ্রামে। বাবার নাম কবির শিকদার। তাঁরা বর্তমানে খিলগাঁও নবীনবাগ উত্তর গোড়ান এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সামিয়া মেরাদিয়া হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। জেদি ছিল সে। পড়াশোনা নিয়ে গতকাল রাতে তার মা-বাবা বকাঝকা করেন। এ অভিমানে সে গতকাল সন্ধ্যার দিকে গলায় ফাঁস দেয়। দেখতে পেয়ে তাকে মুগদা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সে মারা যায়।

খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস মাহমুদ জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে মুগদা মেডিকেল থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত