Ajker Patrika

মেট্রোরেলে হামলাকারী শনাক্ত হবে সিসি ক্যামেরা দেখে 

সৌগত বসু, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৬: ১৫
মেট্রোরেলে হামলাকারী শনাক্ত হবে সিসি ক্যামেরা দেখে 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ মধ্যে গত শুক্রবার মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এসব স্টেশনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে ভেঙে ফেলার আগমুহূর্ত পর্যন্ত ক্যামেরাগুলোয় হামলাকারীদের ভিডিও-ছবি ধারণ হয়েছে। সেসব ছবি-ভিডিও দেখেই হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল সূত্র। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গত সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলাকারীরা শুক্রবার হামলা করে। এতে মিরপুর-১০ স্টেশনের শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজীপাড়া স্টেশনের ৬০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ 
 
মেট্রোরেল প্রকল্পে যুক্ত এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের দুই স্টেশনে প্রায় ১০০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। এসব ক্যামেরা জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি। ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির চেহারা আলাদা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। নিরাপত্তার জন্যই এসব ক্যামেরায় উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই ওই দিন মেট্রোরেলের এসব স্টেশনে যারা হামলা করেছিল, তাদের চেহারা ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এগুলো প্রধান সিস্টেমে জমা আছে। চাইলেই এসব ছবি দেখে হামলাকারীদের খুঁজে বের করা যাবে।’ 

মেট্রোরেলের অপর এক কর্মকর্তা আজকের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে পত্রিকাকে জানান, ওই দিন হামলাকারীরা স্টেশনে ঢুকে সবার আগে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এরপর স্টেশনের লিফট, টিকিট কাউন্টার, স্বয়ংক্রিয় টিকিট মেশিন, ল্যাপটপ, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ সবকিছু ভাঙচুর করে। তবে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার আগেই তাদের চেহারা এসব ক্যামেরা শনাক্ত করতে পেরেছে। সেসব ছবি এখন মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত। 

এদিকে গত রোববার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়া ও সদস্যসচিব করা হয়েছে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতেখার হোসেনকে। কমিটি ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রতিবেদন দেবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই দুই স্টেশন আবার চালু হতে প্রায় এক বছর সময় লাগবে। 

ডিএমটিসিএলের কোম্পানি সচিব আব্দুর রউফ গত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করার জন্য কাজ চলছে। হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে মামলা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে ডিএমটিসিএল।’ 

সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন প্রযুক্তি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরার সঙ্গেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে এসব সিসি ক্যামেরা মানুষের গতিবিধি দেখে সে অপরাধী কি না, সেটাও বুঝতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশে কেপিআইভুক্ত যেসব এলাকা আছে, সেসব এলাকায় এমন সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। তবে মেট্রোরেলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা না হলেও জাপানি যেসব প্রযুক্তির ক্যামেরা আছে, তা স্টেশনে যারা থাকে, তাদের চেহারা চিহ্নিত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব।’ 

যানজটের নগরী ঢাকায় ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর চালু হয় মেট্রোরেল। সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম এই যোগাযোগব্যবস্থা চালুর পরই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করেছে মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ খুলে দেওয়া হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুর দিকে যখন সড়কে যানজট ছিল, সে সময়ও মেট্রোরেলের সব স্টেশনেই ছিল ভিড়। তবে কয়েক দিন থেকেই বন্ধ মেট্রোরেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত