Ajker Patrika

আয়োজন বেশি, ক্রেতা কম

সাইফুল মাসুম, ঢাকা 
দোকানে সাজানো বাহারি ইফতারি কিনছেন কয়েকজন। গতকাল রাজধানীর বনানীর ১১ নম্বর রোডে। ছবি: আজকের পত্রিকা
দোকানে সাজানো বাহারি ইফতারি কিনছেন কয়েকজন। গতকাল রাজধানীর বনানীর ১১ নম্বর রোডে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাসালা দোসা, হায়দরাবাদি চিকেনসহ বিদেশি স্বাদের খাবার যেমন আছে, তেমনি রয়েছে দেশের প্রচলিত ইফতার—ছোলা, মুড়ি, বেগুনি। নানান স্বাদের বাহারি ইফতারসামগ্রী স্তরে স্তরে সাজানো। রকমারি এসব ইফতার নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন বিক্রয়কর্মীরা। তবে ক্রেতা তুলনামূলক কম।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বনানীর ১১ নম্বর রোডের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বনানীর সাজনা রেস্তোরাঁ ইফতারির পসরা সাজিয়েছে ৬০ ধরনের আইটেম দিয়ে। ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছেন, পছন্দ হলেই কিনছেন স্বাদের ইফতারি। বনানী ৫ নম্বর রোডের বাসিন্দা আরিফা খাতুন জানান, তিনি সাধারণত ঘরেই ইফতারি তৈরি করেন। রেস্তোরাঁ থেকে ইফতারি কিনলে সাজনা থেকেই নেন।

সাজনার বিক্রয়কর্মী সাহাদাত হোসেন জানান, তাঁদের ক্রেতা হচ্ছেন ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও গুলশান-বনানীর স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেক ইফতার আইটেম থাকলেও এই রেস্তোরাঁয় বেশি বিক্রি হয় স্পেশাল হালিম ও দই বড়া। সাজনায় জনপ্রতি ১ হাজার ৬৯০ টাকায় বুফে ইফতার করার ব্যবস্থা রয়েছে। রেস্তোরাঁটিতে ১৫০ জন একসঙ্গে বসে বুফে ইফতার করতে পারবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকজন বুফে ইফতার করতে এসেছেন।

সাজনার লাগোয়া আরেকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে ‘ফাতেমার বনেদি খানা’। রেস্তোরাঁর সামনে কয়েক আইটেম ইফতারি নিয়ে অপেক্ষা করছেন বিক্রয়কর্মী রাজু মিয়া। এই রেস্তোরাঁর মাটন হালিম ১ হাজার ৯০ টাকা আর বিফ হালিম ৮৯০ টাকা। রাজু মিয়া বলেন, ‘দাম আগের মতোই স্বাভাবিক। তবে তেমন বিক্রি নেই। সুনসান অবস্থা।’

বনানী ১১ নম্বর রোডে আলোচিত রেস্তোরাঁ ‘পাগলা বাবুর্চি’। অন্য রেস্তোরাঁর চেয়ে পাগলা বাবুর্চিতে ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি। এখানে মানুষ বেশি ভিড় করছেন ঝুরা মাংসের হালিম, রেশমি জিলাপি ও কাবাব আইটেম কিনতে। কোনো কোনো ক্রেতাকে পাগলার মেগা ইফতারির ঝুড়ি কিনতে দেখা গেছে। বিক্রয়কর্মী মেহেদী হাসান জানান, তাঁদের দোকানে ঝুরা মাংসের হালিম এক কেজি ৯০০ টাকা, আধা কেজি ৪৪৯ টাকা। রেশমি জিলাপি এক কেজি ১ হাজার ১৯৯ টাকা, হাফ কেজি ৫৯৯ টাকা। চারজনের মেগা ইফতারি ঝুড়ি ৪ হাজার ৪৯৯ আর আটজনের ৭ হাজার ৯৯৯ টাকা।

মোবারক নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘পাগলা বাবুর্চির খাবার সেই রকম স্বাদ। একবার খাইলে বারবার খাইতে হবে।’

বনানীতে এবার ইফতারের বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করেছে সোয়াট মাঠের ‘গ্র্যান্ড ইফতার বাজার’। ফুডপ্যান্ডার আয়োজনে এখানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ঐতিহ্যবাহী ১৬টি রেস্তোরাঁ অংশ নিয়েছে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এই ইফতার বাজারে ক্রেতারা সরাসরি এলেও ইফতারি কিনতে হবে ফুডপ্যান্ডা অ্যাপসে অর্ডার করে।

গ্র্যান্ড ইফতার বাজারে বারবিকিউ টু নাইট স্টলের কর্মী মোহাম্মদ আলমগীর জানান, ১৮ আইটেমের ইফতারির মধ্যে বেশি চলছে চিকেন বটি, রেশমি কাবাব, কাশ্মীরি ফালুদা। ‘দোসা এক্সপ্রেসে’ ক্রেতারা বেশি কিনছেন ছোলা বাটোরা ও চিকেন রোল। রেস্তোরাঁর বিক্রয়কর্মী নাফিজ ইকবাল বলেন, ‘আয়োজন অনুপাতে ক্রেতা কম।’

ফুডপ্যান্ডার ব্র্যান্ড ম্যানেজার সৈয়দ শাকিল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনলাইনে অর্ডার নিয়ে ফুড ডেলিভারি করে থাকি। রোজার মাসে মানুষের আগ্রহ থাকে নিজেরা গিয়ে ইফতারি কেনার। তাই এমন আয়োজন। বেশ সাড়া পাচ্ছি। তবে ছুটির দিনে ক্রেতার ভিড় বেশি থাকে।’

বনানীতে বড় বড় রেস্তোরাঁর পাশাপাশি ফুটপাতেও বসানো হয়েছে কিছু ইফতারির দোকান। বনানীর ১৭ নম্বর রোডে (এসএমসি টাওয়ারের পেছনে) ইফতারির ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে দ্বীন ইসলামের। সেখানে ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনিসহ ইফতারের সব আইটেম রয়েছে। দ্বীন ইসলাম জানান, দোকান বেশি হয়ে গেছে। প্রতিদিন ইফতার শেষে অনেক খাবার অবিক্রীত থেকে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত