Ajker Patrika

উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অস্বীকার

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, ১৬: ০৮
উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অস্বীকার

রাজধানীর উত্তরার উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় তাসকিয়া জাহান রিয়া (৩২) নামের এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আনার পর আইসিইউতে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। তবে হাসপাতালটির জেনারেল ম্যানেজার মো. তোফাজ্জল হোসাইন চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নিহত তাসকিয়া জাহান রিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের মো. বাবুল আকন্দের মেয়ে। রাজধানীর নিকুঞ্জ-২ এলাকায় স্বামী ও তিন মাস বয়সী কন্যা সন্তান নিয়ে থাকতেন। বারিধারার কে এম ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বায়িং হাউসে চাকরি করতেন রিয়া।

এদিকে রিয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে তাঁর স্বজনে ও সহকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা রিয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মনির হোসেন খানের শাস্তি দাবি করেন। পরে রাত ১০টার পর নিহতের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনরা।

নিহতের চাচাতো ভাই মো. শাওন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে রিয়ার গলব্লাডারের (পিত্তথলি) অপারেশন করানো হয়েছিল। পরে ডাক্তার রিলিজ দিয়ে দিলে বাসায় চলে গিয়েছিল। তারপর রোববার দুপুরে তার আবার ব্যথা উঠলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বেড না থাকায় ভর্তি করাতে পারেনি। ওষুধ খাইয়ে বসিয়ে রাখে। যখন রিয়ার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে, তখন আইসিইউতে নেওয়া হয়। তারপর রিয়া মারা যায়। টোটালি হাসপাতালের গাফিলতির কারণে রিয়ার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

রিয়ার মৃত্যুর খবর জানতে পেরে হাসপাতালে স্বজন ও সহকর্মীদের ভিড়রিয়ার স্বামী ইমরান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিয়ার গলব্লাডারের পাথর ছিল। যার কারণে গত বুধবার রিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার তাঁর অপারেশন হয়। পরদিন শুক্রবার রিলিজ করে দিয়েছিল। তারপর শনিবার এসে আবার ডাক্তার দেখানো হয়েছে। তখন ডাক্তার ভর্তি হইতে বলছিল, কিন্তু বেড না থাকায় ভর্তি হতে পারে নাই। পরে যখন রোববার ব্যথা হইছে, তখন আমি সঙ্গেই ছিলাম। ওই দিনও বেড পাইনি। সব কিছু রেডি করতে করতেই গিয়ে দেখি ও নাই। আমি রিয়ার মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের অবহেলাকে দায়ী করি।’

রিয়ার স্বজন ও সহকর্মীদের অভিযোগ, রিয়া যখন ব্যথায় কাতর ছিল, তখন তাকে বেডের অভাবে ভর্তি করানো যাচ্ছিল না। তবুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্য হাসপাতালে রেফার্ড না করে রিয়াকে বসিয়ে রেখে মেডিসিন খাওয়াচ্ছিল। পরে ওর যখন অবস্থা গুরুতর হয়, তখন আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিয়া মারা যায়।

তারা দাবি করেন, শুধুমাত্র ক্রিসেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও ডাক্তারের অবহেলার কারণে রিয়ার মৃত্যু হয়েছে। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার মো. তোফাজ্জল হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গাফিলতির কোনো কিছুই পাচ্ছি না। এমন যদি হতো, ৫–৭ ঘণ্টা ওয়েটিংয়ে ছিল, তাহলে একটা ব্যাপার ছিল। আসার সঙ্গে সঙ্গে ইমারজেন্সি ডাক্তার দেখেছে। অবস্থা খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়, তবুও তাকে বাঁচানো যায়নি।’

রিয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মনির হোসেন খানের সঙ্গে হাসপাতালে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর মোবাইল ফোনে চেষ্টা করলেও ফোন ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত