Ajker Patrika

উত্তরায় রাতের আঁধারে কৌশলে পিকআপে যাত্রী পরিবহন

প্রতিনিধি, উত্তরা (ঢাকা) 
উত্তরায় রাতের আঁধারে কৌশলে পিকআপে যাত্রী পরিবহন

রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে পিকআপ ভ্যান, পণ্যবাহী পরিবহন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও সিএনজিতে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। রোববার গভীর রাতে উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুরে এমন চিত্র দেখা গেছে অহরহ। তবে আবদুল্লাহপুরে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ আবদুল্লাহপুর মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে। এই চেকপোস্টের দায়িত্বে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই ইয়াদুর রহমান। রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চেকপোস্টের ধারেকাছেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বরত এক কনস্টেবল বলেন, ‘স্যার পাঁচ দিন টানা নাইট ডিউটি করেছেন। তাই বিশ্রাম নিতে বাসায় গেছেন।’
পুলিশের এই গা ছাড়া ভাবের কারণে হরহামেশাই প্রাইভেটকার, সিএনজি, পিকআপ, ও কাভার্ডভ্যানে করে যাত্রী পরিবহন করছেন চালকেরা। যদিও মাঝে মাঝে কয়েকটি গাড়ি তল্লাশি করে যাত্রী নামিয়ে দিতে দেখা গেছে।

পিকআপ ভ্যানে (ঢাকা মেট্রো ন-১৮-১৬৪৭) পর্দা টানিয়ে যাত্রী ভর্তি করে খিলগাঁও থেকে আবদুল্লাহপুরে এসেছেন চালক শান্ত। তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা সদরের কালিবাজারে যাওয়ার জন্য যাত্রী নিয়ে এসেছি। পুলিশ দূর থেকে দেখে যেন বুঝতে না পারে, আমি যাত্রী পরিবহন করছি। তাই পর্দা টানিয়েছি। আর এখন যাত্রী নিলে বেশি ভাড়া পাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৬০০ টাকা করে নিচ্ছি।’
কঠোর লকডাউনের মধ্যে কাজ না থাকায় গ্রামে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ যাত্রী। পিকআপে মীরহাজীরবাগ থেকে গাইবান্ধায় যাওয়া যাত্রী শিমেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় আমি রিকশা চালাই। এখন কোনো কাজ নাই, তাই দেশে যাই।’

এদিকে প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো গ-১১-৩৫৯৫) ময়মনসিংহে যাওয়া শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি উত্তরার একটি অফিসে চাকরি করি। আমার মামা মারা যাওয়ায় গ্রামে যাচ্ছি।’

চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা এসআই ইয়াদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি খাওয়ার জন্য বাসায় এসেছি। শেষ করেই চেকপোস্টে আসব।’

আর মা বোন মারা যাওয়া আবদুল্লাহপুরে কান্নাকাটি করছিলেন তোরাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় কাজ করি। নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আমার মা-বোন মারা গেছেন। অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছি। এখন দেশে যাব কী করে?’

তাঁর চিৎকার শুনে এক প্রাইভেটকারের চালক এসে গাড়িতে তুলে রওনা দেন নেত্রকোনার উদ্দেশে।

এদিকে আবদুল্লাহপুরে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট জহির রায়হান বলেন, ‘থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তারা যাত্রীবাহী পরিবহন আটক করে আমাদের কাছে দিলেই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত