Ajker Patrika

চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্ত্রীসহ ৩ জন কারাগারে

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ৩৯
চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্ত্রীসহ ৩ জন কারাগারে

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ঘর থেকে চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

আজ সোমবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে হোসেনপুর পৌর শহরের ঢেকিয়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু। 

তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) দুপুরে গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে বিকেলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ায় মৃতের পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—নিহতের স্ত্রী চিকিৎসক শাহীন সুলতানা মিরা এবং মিরার দুই ভাই মো. নাসির উদ্দিন ও মো. এরশাদ। তারা তিনজনই পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা গ্রামের মৃত সিরাজউদ্দিনের ছেলে ও মেয়ে। 

অন্যদিকে নিহত চিকিৎসকের আরিফুল ইসলাম (৩০)। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার মিঠামইন সদর ইউনিয়ন বাজারের রফিকুল ইসলামের ছেলে। 

রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসক আরিফুল ইসলামের বড়ভাই আশরাফুল ইসলাম রাজিব বাদী হয়ে হোসেনপুর থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। 

প্রসঙ্গত গত শনিবার দিবাগত রাতে হোসেনপুর পৌর শহরের ঢেকিয়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় চিকিৎসক আরিফুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা হত্যার অভিযোগ তোলেন। 

মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, আরিফুল ইসলাম এমবিবিএস পাস করে রাঙ্গামাটিতে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করতেন। ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে মিরার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরে দুজনেই রাঙামাটিতে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করেছেন। ৬ মাস আগে তারা দুজনেই চাকরি ছেড়ে হোসেনপুর বাজারে মডার্ন জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তারা দুজন হোসেনপুর পৌর শহরের ঢেকিয়া এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। হোসেনপুর আসার কিছুদিন পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ হতো। শনিবারেও তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। 

গতকাল রোববার অভিযুক্ত স্ত্রী শাহীন সুলতানা মিরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে তুই-তোকারি করে কোর্টে নিয়ে গিয়েছিল সেপারেশনের জন্য। একপর্যায়ে আমাকে জোরে একটি থাপ্পড়ও দেয় আরিফ। থাপ্পড়ের চোটে আমার চশমাটি ভেঙে পড়ে যায়। কোর্ট বন্ধ থাকায় আমাকে নিয়ে চলে আসে।’ 

মিরা আরও বলেছেন, ‘আমার চোখে সমস্যার জন্য রাতে আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম। পরে আরিফ বাসায় আসলে ঘরের দরজা খুলে দেই। তখন ঘরের লাইট অফ ছিল। এর মধ্যে আমি নামাজ আদায় করি। পরে লাইট অন করতেই আরিফ রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। অনেক ডাকাডাকি করলেও আরিফ দরজা খোলেনি। পরে বাসার মালিককে খবর দেই। বাসার মালিক এসে আরিফকে দরজা খুলতে বলেন। কিন্তু আরিফ দরজা খোলেনি। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে আরিফ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে।’ 

মৃত চিকিৎসকের স্ত্রী মিরা বলেন, ‘পরে ঘরে একটা চিরকুট পাওয়া যায়। যা আমার স্বামী রেখে গেছে। সেই চিরকুটে লেখা ছিল—‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না”।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তাকে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত