Ajker Patrika

‘নিকটাত্মীয়ের কাছেই যৌন হেনস্তার শিকার হন প্রতিবন্ধী নারীরা’

অনলাইন ডেস্ক
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ডিসকাশন মিটিং অন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড দেয়ার রাইটস’ শীর্ষক সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ডিসকাশন মিটিং অন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড দেয়ার রাইটস’ শীর্ষক সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা জন্মগ্রহণের পর নিজের পরিবার থেকেই অবহেলার শিকার হন। প্রতিবন্ধী নারীরা নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে যৌন হেনস্তার শিকার হন। যেহেতু নিকটাত্মীয়রাই অভিযুক্ত, তাই পরিবারের লোকেরাই বিচার চাইতে যান না। যখন পরিবারের বাইরে কেউ অভিযুক্ত হন, তখন কিছু ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু বিচারালয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় র‍্যাম্প, লিফট, ইশারা ভাষা ব্যবহারের সুযোগ থাকে না। শুধু তাই নয়, প্রবেশগম্যতা না থাকায় তারা বিচারও পান না।

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘ডিসকাশন মিটিং অন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড দেয়ার রাইটস’ শীর্ষক সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সহযোগিতায় ডব্লিউডিডিএফ (উইমেন উইথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) এই সভার আয়োজন করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন—নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আমাদের সমাজের মানুষ। আমাদের দেশেরই নাগরিক। তাদের পিছিয়ে রেখে আমাদের এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইটা আমাদের সবার একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে।’

সূচনা বক্তব্যে ডব্লিউডিডিএফের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন রয়েছে। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাদের পরিবার এবং অনেক ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিও এই আইন সম্পর্কে জানেন না। আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নেই।’

একজন বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীর যৌন নির্যাতন ও বিচার প্রক্রিয়ার ঘটনা তুলে ধরে আশরাফুন নাহার মিষ্টি বলেন, ‘একজন নারী যিনি কথা বলতে পারেন না এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তিনি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কাউকে বোঝাতেই পারেন না। ২০১৩ সালে মামলাটা শুরু হয়েছে। এখনো আমরা রায় পাইনি।’

সভায় জানানো হয়, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ। সমাজকে প্রতিবন্ধীবান্ধব না করে কখনোই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়। প্রতিবন্ধী মানুষকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা কোনোটিই সম্পূর্ণ হবে না।

প্রকল্প সমন্বয়ক প্রিয়তা ত্রিপুরা বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্বোধন করার ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন অসংবেদনশীল শব্দ ব্যবহার করি। যেমন- খোড়া, ল্যাংড়া, কানা। অনেকে আবার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বলে থাকেন, এটাও সংবেদনশীল নয়। প্রত্যেকেরই বিশেষ কিছু চাহিদা থাকে।’

এ সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘অনেকে আবার ভাবেন, বাবা-মায়ের পাপের ফসল প্রতিবন্ধী শিশু। এই ধারণা থেকে তাদের ওপর নির্যাতনও করা হয়। আবার এমনও হয়, নারীকে নির্যাতনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী করে দেওয়া হয়। আমরা এমন অনেক নারীকে পেয়েছি, যারা পারিবারিক নির্যাতনের কারণে হাত, পা, বা চোখ হারিয়েছেন।’

বক্তারা বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধী মেয়েদের ধার দেনা করে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়। স্বামীর বাড়িতে গিয়েও নির্যাতনের শিকার হন তারা।

সভায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মামলাগুলো বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানানো হয়। মূল নিবন্ধে বলা হয়, আমাদের সমতার জন্য ভাবতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, দরিদ্র ও অসহায় গরিব মানুষ ছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের পুরুষ ও নারী যেন অর্থনৈতিক সম্পদ, প্রাথমিক পরিষেবা, জমির মালিকানাসত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি, প্রাকৃতিক সম্পদ, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার এবং আর্থিক পরিষেবা ব্যবহারে সমান অধিকার প্রাপ্ত হয়। সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এই লক্ষের বাইরে থেকে যাবে, যদি না এখনই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত