Ajker Patrika

অ্যাম্বুলেন্সে নবজাতকের মৃত্যু: সিন্ডিকেট চক্রের হোতা সবুজ তিন দিনের রিমান্ডে

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
মূল আসামি সবুজ দেওয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
মূল আসামি সবুজ দেওয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

শরীয়তপুরে সিন্ডিকেট চক্রের বাধার কারণে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত মূল আসামি সবুজ দেওয়ানকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (১৭ আগস্ট) শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাকিব হোসেন এই আদেশ দেন। শরীয়তপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শিমুল বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল শনিবার ভোরে পুলিশ ও র‍্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার বেড়াচিকন্দী গ্রাম থেকে মামলার ১ নম্বর আসামি সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে। পরে ওই দিনই ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আসামি সবুজ দেওয়ানকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আজ রোববার রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের ছাতিয়ানী গ্রামের নূর হোসেন সরদার তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুমা বেগমকে গত বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা শহরের নিউ মেট্রো ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকে ভর্তি করেন। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বেলা ৩টার দিকে রুমার ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে স্বজনেরা নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নবজাতককে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শে স্বজনেরা সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে হাসপাতালের সামনে থেকে কম টাকায় ঢাকাফেরত একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে স্বজনেরা রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠে। রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে যাবে, ঠিক এ মুহূর্তে শরীয়তপুরের সিভিল সার্জনের গাড়িচালক আবু তাহের দেওয়ান ও তাঁর ছেলে অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ানসহ সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করেন। তাঁরা চালককে মারধর করে চাবি ছিনিয়ে নেন। এ সময় রোগীর স্বজনেরা অনুনয়-বিনয় করলেও চক্রটি কর্ণপাত করেনি।

চক্রটির দাবি, তাদের সিন্ডিকেটের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে রোগী নিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় তাঁরা কিছুতেই ঢাকাফেরত অ্যাম্বুলেন্সকে রোগী নিয়ে যেতে দেবেন না। প্রায় ৪০ মিনিট আটকে রাখার পর অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই নবজাতক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা নূর হোসেন সরদার বাদী হয়ে সিভিল সার্জনের গাড়িচালক আবু তাহের দেওয়ান ও তাঁর ছেলে অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ানসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে পালং মডেল মামলা করেন।

মামলার পর পুলিশ ও র‍্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে গত শনিবার ভোরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বেড়াচিকুনদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সেলিম শেখের বাড়ি থেকে মামলার ১ নম্বর আসামি সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, মূল আসামি সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়। আজ রোববার শুনানি শেষে আদালত আসামি সবুজ দেওয়ানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত