Ajker Patrika

ছাত্রলীগের সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা কর্মীদের মারামারি, আহত ৪ 

জবি সংবাদদাতা 
আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ১৯: ০৪
ছাত্রলীগের সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা কর্মীদের মারামারি, আহত ৪ 

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে ও ন্যাশনাল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। 

এতে দুই গ্রুপের ২ জন করে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে প্রথম মারামারির সূত্রপাত ঘটে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মীরা রড, হাতুড়ি, ইট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির কর্মী মেহেদী হাসান মিরাজসহ তার বন্ধুদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। এরপর তাঁদের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেওয়া হলে সোহরাওয়ার্দী-সূত্রাপুর ছাত্রলীগের কয়েকজন হাসপাতালে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। এ সময় খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী রড, লাঠি, জিআই পাইপ নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা করে। এতে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন গুরুতর আহত হন। 

পরবর্তীতে জবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাঠি সোঁটা নিয়ে শোডাউন দিয়ে বিপক্ষ গ্রুপকে খুঁজতে থাকে। এ সময় জবি ছাত্রলীগের ১৩ ব্যাচের চয়ন, ১৫ ব্যাচের সিফাত উল্লাহ, রহিম ও রাজাসহ অনেকে নেতৃত্ব দেয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একজনকে আটক করে থানায়ও নেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। 

এ বিষয়ে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মী ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, ‘আমি পুরান ঢাকার স্থানীয়। গতকাল রাতে জগন্নাথের ৫-৬ জন ও পুরান ঢাকার আরও ৫-৬ জন বন্ধুরা মিলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমার বন্ধু আকাশের (বাবু বাজারে ব্যবসা করে) সঙ্গে পুরোনো শত্রুতার জের ধরে আমাদের ওপর হামলা করে। তাঁরা ৭-৮ জন হাতুড়ি ও রড দিয়ে হামলা করে।’ 

মিরাজ আরও বলেন, ‘এ সময় আমার কয়েকজন বন্ধু মার খেয়ে দৌড় দেয়। একা পেয়ে আমাকে ও আমার বন্ধু সাব্বিরকে (জুবিলি স্কুলে পড়ালেখা করেন) মেরে গুরুতর আহত করে। এরপর আমাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই গ্রুপের কয়েকজন হাসপাতালে আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসে। মনে করছে জগন্নাথের কেউ নেই। তবে খবর পেয়ে ফরাজী ভাইয়ের গ্রুপের আমার বড় ভাইরা আসে। তখন বিপক্ষ গ্রুপের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন মার খেয়েছে।’ 

বিপক্ষ গ্রুপের পরিচয় জানতে চাইলে মিরাজ আরও বলেন, ‘তারা কেউ সোহরাওয়ার্দী ছাত্রলীগের, আবার কেউ সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মী। তাদের নেতা আজিম। আর আজিম সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিল্লালের রাজনীতি করে।’ 

জানা গেছে, আলী আজিম খাঁন সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পড়ালেখা করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে শান্ত নামে মেহেদীর এক বন্ধুকে থানায় আটক করেছে সূত্রাপুর থানা-পুলিশ। 

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজম খাঁন বলেন, ‘সিয়ামকে মারতে জগন্নাথের ৩০-৪০ জন আসে। আর এরা ছিল মাত্র ৩-৪ জন। তাদের হামলায় সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন আহত হয়েছে। সিয়াম একটি কলেজে ও ফয়সাল লালবাগ কলেজে পড়ে। আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করে মাঝে মাঝে। এটা রাজনৈতিক ঘটনা না। বন্ধুদের ভেতর হাতাহাতি।’ 

সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কলেজের কেউ এ ঘটনায় জড়িত নয়। বহিরাগতরা কলেজের নাম ভাঙিয়ে ঘটনা ঘটায়। সিয়াম, ফয়সাল কলেজের কেউ নয়।’ 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেন বলেন, ‘গতকালের মারামারির ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। জগন্নাথের যে ছেলে মার খেয়েছে, সে ছাত্রলীগের কোনো পদে নাই, কর্মীও নয়।’ 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জড়িত ছিল, অনেকে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে জবি ছাত্রলীগ না।’ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভেতর কোনো মারামারি হয়নি। জেনেছি এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ছিল। কোনো অপরাধকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। তাঁরা ব্যবস্থা নিবে।’ 

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতি। আমরা ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের বিক্ষোভ, তীব্র যানজট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।

নির্বাচনের আগে গণভোট এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছেন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পল্টন, কাকরাইল, শাপলা চত্বর, মৎস্য ভবন এলাকায় চলা এই অবস্থান কর্মসূচির কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পল্টন মোড়ে এসে জড়ো হতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে এলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। পরে মৎস্য ভবন মোড়ে অবস্থান নেন তাঁরা। এতে করে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল উপদেষ্টার বাসভবনে গেলে নেতা–কর্মীরা মৎস্য ভবন মোড়ে অবস্থান করতে থাকেন।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর এবং কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে পরে মিছিল নিয়ে পল্টনে আসেন তাঁরা।

এই কর্মসূচির ফলে রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। হাইকোর্ট, পল্টন, প্রেসক্লাব ও কাকরাইল এলাকায় যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলো যাওয়ার পথ করে দিচ্ছেন নেতা–কর্মীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।

এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করা কাম্য না। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কী লাভ? যৌক্তিক দাবি থাকলে সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত।’

৮ দলের নেতা–কর্মীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে—অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে রাজনৈতিক হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধ, নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমে বাধাহীনতা নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত: চৌদ্দগ্রামে ৫ নারীর দাফন সম্পন্ন

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আজ সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ নারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের ও ফালগুনকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁদের জানাজায় শত শত মানুষ অংশ নেয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চান্দিশকরা গ্রামের বাসিন্দা উদয় পাটোয়ারীর স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা (২৮), মা রুমি বেগম (৬৫), বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী (২৪), শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী (৫৫) ও শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা (২৫)। এই ঘটনায় চান্দিশকরা ও ফালগুনকরা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে রওনা দেন উদয় পাটোয়ারী, স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা, ছেলে সামাদ পাটোয়ারী, শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশান (২২)। রাত আড়াইটার দিকে চৌদ্দগ্রাম থেকে মা রুমি বেগম, বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী এবং শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পীকে গাড়িতে তোলেন।

গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় পৌঁছালে বেপরোয়া গতিতে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন মারা যান। আহত হন উদয় পাটোয়ারী, তাঁর ছেলে ও শ্যালক। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘বিস্কুটে কী ছিল?’—একই সঙ্গে শ্বাসকষ্টে ৫ ছাত্রী হাসপাতালে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ে একই সময়ে পাঁচ ছাত্রী হঠাৎ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা বলেন, একই ধরনের বিস্কুট খাওয়ার পরপরই শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এই ঘটনার পর বিদ্যালয়জুড়ে রহস্যের জন্ম দিয়েছে; অভিভাবক মহলে ছড়িয়েছে আতঙ্ক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টায় প্রাত্যহিক অ্যাসেম্বলি শেষ করে ছাত্রীদের ক্লাসে ফেরত যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই এক ছাত্রী শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে। তার পরপরই একই শ্রেণির আরও চারজন একই উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘প্রথমে একজন অসুস্থ হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম অ্যালার্জির সমস্যা। কিন্তু পরপর পাঁচজনের একই উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে সবাইকে জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাকিয়া আক্তার বলেন, পাঁচ ছাত্রী শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছে। জিজ্ঞেস করে জানা যায়, অ্যাসেম্বলি শেষে তারা সবাই একই ধরনের বিস্কুট খেয়েছিল। তারপর থেকে উপসর্গ দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘ফুসফুস পরীক্ষা করে কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। কারও জ্বর, সর্দি বা কাশি ছিল না। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক। বিস্কুট মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল কি না বা তাতে কোনো রাসায়নিক ছিল কি না—সেটি নিশ্চিত হতে পরীক্ষা জরুরি।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ছাত্রীদের অক্সিজেন দিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে মুখে যেকোনো খাবার আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের একজনের অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে একদম ভালো ছিল। স্কুলে গিয়ে কী এমন খেল যে শ্বাসই নিতে পারছে না; এখনো বুঝতে পারছি না।’

এই ঘটনার পর কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক দুপুরে সন্তানদের স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারি আটক, ২৩৭ গ্রাম হেরোইন জব্দ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে র‌্যাব-১২। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২৩৭ গ্রাম হেরোইন, একটি ট্রাক, দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে র‌্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল (৫ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে সলঙ্গা এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাবের একটি দল। অভিযানে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কাঁঠালবাড়ীয়া এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ইসলাম (৫৫) এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার মাদারীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের বাবুল শাহ (৬০) নামের দুজনকে আটক করা হয়।

জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হেরোইন কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত