Ajker Patrika

জাবিতে গণরুম বন্ধে ১৫ দিনের আলটিমেটাম

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২: ২৩
জাবিতে গণরুম বন্ধে ১৫ দিনের আলটিমেটাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণরুম বন্ধে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে গণরুম উচ্ছেদ করে নতুন হল উদ্বোধনের দাবি জানান তাঁরা। আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে জমায়েত হয়ে মশাল মিছিল করে এই দাবি জানান। পরে মশাল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে উপস্থিত হন এবং সেখানে গণরুমবিরোধী বিক্ষোভ করেন। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা অবৈধ শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে হল থেকে বহিষ্কার করা, নতুন হল চালু করাসহ প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং আবাসিক হলের ডাইনিংয়ে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে সুষম খাদ্য নিশ্চিত করার দাবি তোলেন। 

বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা জানান, মেধা ও স্বাধীন সত্তা ধ্বংসের আস্তানা হচ্ছে ‘গণরুম’ ব্যবস্থা। এটি স্পষ্টতই একটি মেধা বিধ্বংসী ব্যবস্থা। নবীন শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডকে স্রেফ ভেঙে ফেলার উদ্দেশ্যে, বিশেষ রাজনৈতিক কারণেই এই গণরুম ব্যবস্থা জিইয়ে রাখে প্রশাসন। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘প্রশাসন বলেছিল গণরুম নাকি জাদুঘরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে গণরুম জাদুঘরে পরিণত হয়েছে। ম্যানার শেখানোর নামে অমানবিক নির্যাতন করে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গণরুমে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য না আছে ঘুমানোর ব্যবস্থা, না আছে পড়াশোনার পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের অন্তরায় এই গণরুম। তাদের মধ্যে নোংরা চিন্তাধারা প্রবেশ করিয়ে কৃতদাস বানিয়ে ফেলছে।’ 

দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সজীব বলেন, ‘আমি শহীদ রফিক জব্বার হলের গণরুমের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। আমরা হলের একটি কক্ষে ৪৬ জন একসঙ্গে থাকি। মাঝরাতে সিনিয়র এসে ম্যানার শেখানো নামে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ অমানবিক নির্যাতন করে। নানা ধরনের বাধ্যবাধকতা দিয়ে থাকে। আমরা ক্যানটিনে, ডাইনিংয়ে খেতে পারি না। যা আমাদের মানসিক বিকারগ্রস্ত করে তুলছে।’  

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমক বাগচী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের স্বপ্নের জায়গা। স্বপ্নের জায়গায় এ রকম অমানবিক নির্যাতন আশা করা যায় না। আমরা প্রত্যেকে এই নিকৃষ্ট প্রথার বিলুপ্তি চাই। শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন রকমের আবাসিক সোসাইটি হয়। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করে আপনারা চলে যান। আর শিক্ষার্থীরা এ ময়লার ভাগাড়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।’ 

এ সময় ১ মার্চের ভেতর দাবি মানা না হলে প্রশাসনিক ভবন অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায়। 

অমর্ত্য রায় বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী যখন হাজারটা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে, তখন গণরুমে চেয়ার-টেবিল না দেখে  প্রথম রাতেই তাদের স্বপ্ন ভেঙে যায়। প্রশাসনের এই গালভরা বুলিতে আমরা আর ভুলব না। এই প্রশাসনকে আমরা ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে যাচ্ছি। ১ মার্চের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত