Ajker Patrika

পেটের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ওষুধ খাওয়া ঠিক না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পেটের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ওষুধ খাওয়া ঠিক না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে রাতে পেটে ব্যথা হলে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে শুয়ে থাকলে মৃত্যুও হতে পারে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যেকোনো ব্যথাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ভোর রাতের ব্যথা মারাত্মক আকার ধারণ করে। মনে রাখতে হবে, ভোর রাতেই ব্যথায় মৃত্যুর হার বেশি। 

ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পেটে ব্যথাকে অবহেলা না করে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে যথাযথ সেবা নিতে হবে। অনেক কারণেই পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই পেটের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ওষুধ খাওয়া ঠিক না। 

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পেটব্যথা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। 

সেমিনারে বলা হয়, পেটের রোগের অন্যতম হচ্ছে পেটব্যথা। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এই সমস্যা নিয়ে আসেন। যার অধিকাংশের কারণ নির্ণয় করা গেলেও প্রায় ৩০ শতাংশের কারণ নির্ণয় করা যায় না। মূলত পেপটিক আলসার ডিজিজ, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, আইবিএস, পিত্তথলির প্রদাহ, পিত্তথলি ও পিত্তনলির ভেতর পাথর, লিভারের প্রদাহসহ (হেপাটাইটিস) নানা কারণে পেটের ব্যথা হয়ে থাকে। 

চিকিৎসকেরা বলেন, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, পিত্তথলির ক্যানসারের কারণে হওয়া ব্যথায় মৃত্যুও হতে পারে। রোগীর ইতিহাস, শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক সময়ে পেটব্যথার কারণ সম্পর্কে অবগত হওয়া সম্ভব। কিছু ক্ষেত্রে বুকের ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এন্ডোসকপি, কোলনস্কপি পরীক্ষাগুলো করা বিশেষ প্রয়োজন হয়। 

শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপসর্গ হিসেবে পেটে ব্যথার অন্যতম যা অনেকাংশই অনির্ণীত থাকে, যেমন হার্টের রোগ। বয়স্ক রোগী, মহিলা ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। পেটে ব্যথা উপসর্গ নিয়ে অনেকে চিকিৎসকের কাছে আসেন। এসব উপসর্গের মধ্যে অ্যাপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, অন্ত্র ফুটো হয়ে যাওয়া, অন্ত্রে প্যাঁচ লেগে যাওয়া, নারীদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের নালিতে প্যাঁচ লেগে যাওয়া অন্যতম। যদি কোনো রোগীর পেটে ব্যথা সাধারণ ওষুধে না কমে এবং ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। 

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘আমরা খুব তাড়াতাড়ি ২৫ জন চিকিৎসককে পিএইচডি কোর্সে ইনরোলমেন্ট করতে যাচ্ছি। বিভাগের ফ্যাকাল্টির পাশাপাশি রেসিডেন্টদেরকে গবেষণায় আগ্রহী করতে আমাদের অনেক উদ্যোগ রয়েছে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ হাসপাতাল চালু হলে স্বাস্থ্য খাতে আরেকটি নব দিগন্ত সূচনা হবে।’

 সেমিনারে কি-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রোকুনুজ্জামান, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস. এম. সাঈদ উল আলম, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফজলুল করিম চৌধুরী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত