Ajker Patrika

গোপালগঞ্জে বেনজীরের রিসোর্টের নিয়ন্ত্রণ নিল জেলা প্রশাসন, এলাকাবাসীর উল্লাস

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জুন ২০২৪, ১৪: ১৯
গোপালগঞ্জে বেনজীরের রিসোর্টের নিয়ন্ত্রণ নিল জেলা প্রশাসন, এলাকাবাসীর উল্লাস

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন। আদালতের ক্রোক আদেশ বাস্তবায়ন করতেই রিসোর্টটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। তবে জেলা প্রশাসন বলেছে, সাময়িক বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের তদারকিতে পরবর্তী সময়ে সাভানা পার্ক খুলে দেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যৌথভাবে পার্কটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। গোপালগঞ্জ জেলা সদরের সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল এলাকায় পার্কের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। এ সময় বলা হয়, ‘আজ শুক্রবার থেকে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের কর্তৃত্ব গ্রহণ করল গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন।’

এ সময় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবলী শবনম, গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান, সহকারী পরিচালক সোহরাব হোসেন সোহেল, দুদক মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান ও গোপালগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মো. জিল্লুর রহমান রিগান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর দুদকের দুটি দল পার্কে ঢোকে।

গোপালগঞ্জের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, আদালতের ক্রোকের যে নির্দেশনা, সেটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তালিকা করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকে আয়-ব্যয়সহ জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় পার্কের সব কার্যক্রম চালু থাকবে। তখন থেকে দর্শনার্থী প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না।

দুদকের উপপরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পাই, এখানকার পুকুরে থাকা মাছ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এসে সেই মাছ জব্দ করি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নিলামের মাধ্যমে মাছগুলো বিক্রি করে দিই। ৫৭০ কেজি মাছ সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে বিক্রি করে ৮৩ হাজার ৭০০ টাকা পাই। এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতের ক্রোক বাস্তবায়নের বিষয়টি ঘোষণার সময় এলাকাবাসী জড়ো হয়। এ সময় তারা আনন্দ উল্লাস করে। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বল (৩০) বলেন, ‘জেলা প্রশাসক পার্কের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আমাদের দাবি, আমাদের যেসব জমি বেনজীর আহমেদের দখলে ছিল, সেগুলো যেন দ্রুত আমরা ফেরত পাই। এ ছাড়া সরকারি যে রাস্তাটি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, সেটি যেন দ্রুত সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। যাতে আমরা আমাদের জমিতে ও পুকুরে যেতে পারি।’

বেনজীরের রিসোর্টের নিয়ন্ত্রণ নিল জেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকাউল্লেখ্য, ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত র‍্যাবের প্রধান ও আইজিপি থাকাকালীন বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ (দুদকের তথ্য অনুযায়ী) বিঘা জমির ওপর সাভানা ইকো রিসোর্ট গড়ে তোলেন বেনজীর আহমেদ। এই পার্কের বেশির ভাগ জমি হিন্দু সম্প্রদায়ের বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে। ভয় দেখিয়ে, জোর করে এবং নানা কৌশলে কিছু জমি কেনা হলেও দখল করা হয়েছে অনেক জমি। বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত শুরু করে। পরে আদালত সাভানা রিসোর্টসহ বেনজীর ও তাঁর পরিবারের মালিকানাধীন বিভিন্ন স্থাপনা ক্রোকের নির্দেশ দিলে গোপনে ট্রাকে করে মালামাল সরিয়ে নেয় এলাকার বাসিন্দারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত