Ajker Patrika

নির্বাচনে বিরোধের জেরে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষ

প্রতিনিধি, মাদারীপুর
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২১, ০০: ০৫
নির্বাচনে বিরোধের জেরে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষ

মাদারীপুরের কালকিনিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে মো. মিরাজ খানকে (৪১) কুপিয়ে শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিপক্ষরা। এই ঘটনায় মিরাজ খানের ছেলে নাজমুল খানকেও (২২) কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৩টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের কালাই সরদারেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা আহত দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক মিরাজ খান ও নাজমুল খানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের কালাই সরদারেরচর এলাকার মিরাজ খাঁ (৫০) ও তাঁর ছেলে নাজমুল খাঁ (২২) দু’জনে বুধবার বিকেলে একই ইউনিয়নের মৌলভীকান্দি গ্রামে নাজমুলের শ্বশুরবাড়ি আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। রাত পৌনে ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। এতে বাধা দিতে এলে নারীসহ ৫ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ সময় মিরাজ ও তাঁর ছেলেকে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। মিরাজের বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় দুজনকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাবা ও ছেলেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এই ঘটনায় আজ সকালে মিরাজ খানের লোকজন ভোরে ক্ষিপ্ত হয়ে সমিতির হাট এলাকার কাসেম তালুকদারের ছেলে তাইজুল তালুকদারকে কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

জানা গেছে, আসন্ন পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কবির খান ও আফান কাজী গ্রুপের মধ্যে স্থানীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে রেষারেষি চলে আসছে। গত নির্বাচনেও এই দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ও হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। মিরাজ খান ও তাঁর ছেলে নাজমুল খান কবির খান গ্রুপের সমর্থক বলে জানা গেছে।

এব্যাপারে কাসেম তালুকদার বলেন, ‘আমরা এঘটনার সঙ্গে জড়িত না। ফজরের নামাজ মসজিদে আদায় করে ছেলে নিয়ে ঘরে আসা মাত্র, ওরা দা দিয়ে কুপিয়েছে। এ সময় ঘরে ঢুকে দুইটি স্বর্ণের চেইন, তিন লাখ নগদ টাকা ও চারটি গরু নিয়ে যায়।’

এব্যাপারে কবির খান বলেন, ‘আফান কাজী, জামাল কাজীর লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেছে। রাতের ঘুমন্ত মিরাজের পা আলাদা করে ফেলেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা হলে গ্রেপ্তার করতে হবে। এই ঘটনার বিচার চাই।’

আহত মিরাজের ছেলে নাজমুলের শাশুড়ি রেভা বেগম বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে মিরাজের পা কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে। হামলায় আমরা সবাই আহত হয়েছি। তবে কারা এ হামলা চালিয়েছে বলতে পারব না। কারণ ওই সময় আমরা তাঁদের কাউকে চিনতে পারিনি।’

তবে আফান কাজী ও জামাল কাজীকে ঘটনার পর থেকে এলাকায় পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে দুই গ্রুপের বিরাজমান প্রভাব বিস্তার রয়েছে। তারই জেরে ঘটনা ঘটেছে। আমরা রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মিরাজের পা উদ্ধার করি এবং আসামিদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি। যদি মিরাজ খানের পরিবার মামলা দেয়, তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত