Ajker Patrika

এমপি আনোয়ারুল হত্যা: ফয়সাল ও মোস্তাফিজ ৬ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ১৭: ২৩
এমপি আনোয়ারুল হত্যা: ফয়সাল ও মোস্তাফিজ ৬ দিনের রিমান্ডে

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ফয়সাল আলী ওরফে সাইজি ওরফে সাজী ও মোস্তাফিজুর রহমানকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুপুরের পর দুজনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আদালতে পাঠায়। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির  সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান রিমান্ডের আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকার আদালতের শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

গতকাল বুধবার ডিবি অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে এঁদের আটক করা হয়। এরপর তাঁদের হেলিকপ্টারে করে ঢাকার ডিবি অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। 

আনোয়ারুল আজীম ভারতে খুন হওয়ার ঘটনায় গত ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের পর বাবাকে গুম করার অভিযোগে মামলা করেন তাঁর মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে তাঁর বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে তাঁর বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পান।

গত ১৩ মে আনারের ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেব।’ এ ছাড়া আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো মুনতারিনের বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে বলে এজাহারে বলা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, বাদীর বাবা ভারতে খুন হয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তবে এখনো বাবার লাশ পাননি তাঁর পরিবার। তাঁর বাবাকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

গত ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনোয়ারুল আজীম খুন হওয়ার খবর আসে। এরপর তাঁর মেয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের পর গুম করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় শিমুল ভূঁইয়া, তাঁর ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান, ঝিনাইদহের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই পাঁচজন কারাগারে আসেন। মিন্টু ছাড়া বাকি চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এমপি আনারকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। 

ফয়সাল ও মুস্তাফিজের রিমান্ডের আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম খুনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে এখন পর্যন্ত যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফকির ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজী। এই দুজন খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। শিমুল ধরা পড়লেও ওই দুজন পলাতক ছিলেন। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে পাহাড়ের পাতাল কালীমন্দিরে ২৩ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। মন্দিরের লোকজনের কাছে মোস্তাফিজ নিজের পরিচয় দেন শিমুল রায় নামে। ফয়সালের পরিচয় ছিল পলাশ রায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত