Ajker Patrika

জরুরি বিভাগে হবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রাণহানি কমার আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮: ৩১
জরুরি বিভাগে হবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রাণহানি কমার আশা

রোগীদের সুবিধার্থে সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালটি সার্ভিস (ওসেক) চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সে হিসেবে রাজধানীর চার হাসপাতালে প্রথম এই সেবা চালু হলো আজ। এতে প্রাণহানি কমে আসবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। 

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডি, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) সহায়তায় প্রথম পর্যায়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসাপাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মডেল হিসেবে এই সেবা চালু হচ্ছে। 

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ওসেক সেবার উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। 

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত বিশ্বে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন ইমার্জেন্সি সার্ভিসের কারণে স্ট্রোক, সড়ক দুর্ঘটনা, হার্ট অ্যাটাকের মত জটিল অনেক রোগী বেঁচে যায়। ৫ মিনিট আগেও যদি প্রোপার ট্রিটমেন্ট দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মৃত্যু কমানো সম্ভব।’ 

জাহিদ মালেক বলেন, ‘সারা দেশেই এই সেবা চালু করা সম্ভব হলে হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। মৃত্যুহারও কমে যাবে। এ জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এই সেবা পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করব।’ 

হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি বিষয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা ভবন বানাচ্ছি, যন্ত্রপাতি দিচ্ছি। লোকবল নিয়োগ দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের শুনতে হয় হাসপাতালে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। যন্ত্রপাতি কাজ করে না। আমি চাই সবাই উপস্থিত থাকুক। হাসপাতালের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক। মেশিনপত্র যেন চালু থাকে।’ 

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, ওসেক সেবা চালু হলে রোগীদের ভিড় কমে আসবে। দ্রুত সময়ে রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। 

ওসেক প্রকল্প বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, এক ছাদের নিচে ইমার্জেন্সি রোগীর অত্যাধুনিক সব সেবা প্রদানের একটি উদ্যোগ। আপনারা দেখবেন রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে চিকিৎসকদের যত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে সেটা কিন্তু ইমার্জেন্সি সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট নিয়েই হয়ে থাকে। আমাদের যদি প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী ইমার্জেন্সি সার্ভিস থাকে তাহলে এই সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে। প্রথম পর্যায়ে আমরা চারটি হাসপাতালকে মডেল হিসেবে নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করা হবে। ওসেক চিকিৎসা জগতে নবদিগন্তের সূচনা করবে। এই সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাকে আরও শক্তিশালী করতে পারব। আমি সবাইকে অনুরোধ করব ওসেককে অর্থবহ করে তুলতে হবে। এখান থেকে অধিকাংশ রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেন শেষ হয়। আমরা আধুনিক ও প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। যদি ব্যবহার করা যায় তাহলেই ওসেককে অর্থবহ করা যাবে। ডেঙ্গু করোনা মোকাবিলা করতে আমাদের গত দুইটি বছর কেটে গেছে। আমরা আপনাদের কথা দিচ্ছি আগামী এক বছর হেলথ সেক্টরে যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। 

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেবায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল সাধারণ মানুষের জন্য আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। কোভিডের সময় আমাদের এখানে ২০ হাজার ২৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। কোভিডকালে প্রায় ৯৩ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়েছে। অন্যত্র পাঠাতে হয়েছে ৩ দশমিক ৮৭। মৃত্যু হয়েছে মাত্র তিন শতাংশ রোগী। ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৫ জন।। একদিনের ক্যাম্পেইনে ২১ হাজার ৩৯৮ জন। আমাদের হাসপাতালে শেখ রাসেল স্ক্যানুর কীজ নিজ উদ্যোগে শেষ করেছি। আমাদের ২৬ বেডের সিসিইউ আমরা প্রস্তুত করেছি। এখানে কিছু ডাক্তার ও নার্স দেওয়া গেলে আমরা চালু করতে পারব। আমাদের ২৫ বেডের একটা এইচডিইউ আছে। লোকবল পেলে সেটা চালু করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আমাদের ১০ বেডের আইসিইউকে ২০ বেডে উন্নতি করতে পারব। আমাদের ১৬টি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রয়েছে। তার মধ্যে চারটি চালু রয়েছে। লোকবল পাওয়া গেলে ১৬টি ওটি ই চালু করা সম্ভব হবে। ৫০০ বেডের লোকবলসহ সংকটগুলো কেটে গেলে আমরা আরও ২০০ বেড বাড়াতে পারব।’ 

ফজলুল কবির বলেন, আমাদের চিকিৎসক ও নার্সদের রাত্রিকালীন যাতায়াতে আক্ষেপ রয়েছে। এ জন্য দুটি মাইক্রোবাস ও মিনিবাস দরকার। 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুর্মিটোলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন হলেও পুরো কাজ চালু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। একই অবস্থা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেও। 

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, সেবাটি চালু করতে আরও কিছুদিন লাগবে। শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। আশা করি শিগগিরই শেষ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত