Ajker Patrika

সুরক্ষায় খরচ করতে চান না মালিকেরা

সৈয়দ আহম্মদ
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২১, ১১: ২৯
সুরক্ষায় খরচ করতে চান না মালিকেরা

রূপগঞ্জের ঘটনা যা দেখলাম, শুনলাম—খুবই অমানবিক। গণমাধ্যমের সংবাদে দেখলাম, ওখানে ঘটনার সময় মূল গেট তালাবদ্ধ ছিল। আমরা নিরাপত্তা বলি না, বলি সুরক্ষা। কারণ আমাদের শ্রম আইনে সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। এখনো সুরক্ষা সংস্কৃতি আমাদের কলকারখানায় গড়ে ওঠেনি। এটার জন্য আরও ব্যাপকভাবে সবাইকে উৎসাহিত করা উচিত। প্রয়োজনে শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।

কারখানার জন্য সুরক্ষা হলো প্রথম। এখানে তালাবদ্ধ না থাকলে অনেকেই বের হতে পারত। এখন আবার দেখলাম কারখানার মালিক বলছেন, তিনি দায়ী নন। তালাবদ্ধ রাখা তো হত্যার শামিল। এটা নিয়ে আরও তদন্ত করা দরকার।

কলকারখানায় সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে ব্যর্থতার জন্য শ্রম আইনে মালিকের কম শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তবে পেনাল কোডে শাস্তির বিধান রয়েছে, যা সবার জন্য প্রযোজ্য। কারও অবহেলার জন্য মৃত্যু হলে পেনাল কোডে নির্দিষ্ট ধারা রয়েছে। আর শ্রম আইনে এই ধারার পরিবর্তন প্রয়োজন।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ব্যাপক ক্ষমতা নেই। তারা পারে শুধু পরিদর্শন করতে। আর অসংগতি দেখলে বলতে পারবে উৎপাদন বন্ধ রাখতে। এর বেশি কিছু না।

আমি দায়িত্বে থাকাকালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময়ে সুরক্ষা বিষয়ে অনেক কাজ করেছিলাম। দেশে সুরক্ষার সংস্কৃতি তৈরিতে প্রতিবছরের ২৮ এপ্রিল সেফটি ডে শুরু করলাম। কিন্তু দুঃখজনক হলো, কলকারখানার মালিক শ্রেণি তা বাস্তবায়নে বরাবরই উদাসীন।

বারবার বলার পরে আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পে সুরক্ষা বিষয়টি এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে উন্নতি হচ্ছে অনেক। এর বাইরে যে কলকারখানাগুলো রয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এটার জন্য সরকার একটি প্রকল্প শুরু করেছে যতটুকু জানি। এটা হলে রাসায়নিক কারখানা, দাহ্য পদার্থের গুদামসহ যেসব কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, সেগুলোর সঠিক ধারণা নিয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সুরক্ষা নির্দেশনা তৈরি। সেটার বাস্তবায়ন হলে কারখানা সেক্টরেও উন্নতি হবে।

মালিকদের বুঝতে হবে। কারখানায় সুরক্ষা নিশ্চিতও একটা বিনিয়োগ। নিরাপদ বোধ করলে শ্রমিকদের কাজে আগ্রহ বাড়বে। এতে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি পাবে তাঁদের। কিন্তু তাঁরা সেই অঙ্ক বোঝেন না। খোঁজেন লাভ। তাঁরা সচেতন না হলে, প্রতিবার দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বেই। এতিম হবে শিশুরা, স্বামীহারা হবেন নারীরা আর সন্তানহারা হবেন মা–বাবারা।

সৈয়দ আহম্মদ
সাবেক মহাপরিদর্শক কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত