Ajker Patrika

ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করায় কিশোরীকে শেকলে বেঁধে নির্যাতন

প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ মে ২০২১, ১৭: ০৬
ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করায় কিশোরীকে শেকলে বেঁধে নির্যাতন

রাজৈর (মাদারীপুর): ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করায় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় এক কিশোরীকে শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পাল পাড়া এলাকায়।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক কিশোরীর(১৭) সাথে প্রতিবেশী ইসলাম ধর্মাবলম্বী আবু সাঈদের(২৩) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আবু সাঈদ  রাজৈর উপজেলার  খালিয়া ইউনিয়নের পাল পাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল শেখের ছেলে। গত ৬ মাস আগে আবু সাঈদের সাথে ওই কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে রাজৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজৈর থানা পুলিশ তাদেরকে চার দিন পর উদ্ধার করে। পরে কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং আবু সাঈদকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সেই ঘটনায় পারিবারিক ও সামাজিক সমঝোতার কারণে কিশোরীর বাবা আবু সাঈদকে জামিনে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করেছিল। এরপর কিশোরীর বাবা তাকে (কিশোরীকে) সিলেটে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকেও দুজনে আবার পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা সিলেট থানায় মামলা দায়ের করেন। পালানোর প্রায় ১ মাস পর ঢাকার আশুলিয়া থেকে পুলিশ তাদেরকে আবারো আটক করে নিয়ে আসে। কিশোরীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাকে পরিবারের হাতে এবং আবু সাঈদকে আবার কারাগারে প্রেরণ করে। এখন পর্যন্ত সে কারাগারেই রয়েছে। এরই মধ্যে ওই কিশোরী একাই আবার আবু সাঈদের বাড়ি চলে যায়। পরে তাকে নিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার রাজেশ্বরদী গ্রামে আবু সাঈদের বোনের বাড়িতে রেখে একটি মহিলা মাদ্রসায় ভর্তি করে দেওয়া হয়। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ফের তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। বাড়িতে আনার পর প্রায় ১০ দিন তাকে পায়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে এবং শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালায় পরিবারের সদস্যরা। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তার পায়ের শেকল খুলে দিলেও বর্তমানে তাকে একা একটা রুমের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রেখেছে।

নির্যাতিতা কিশোরী জানায়, আবু সাঈদের সাথে আমার প্রায় সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক। আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে তাঁকে বিয়ে করেছি। আমাকে পরিবারের লোকজন ধরে এনে দুই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে এবং শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। আমি তার কাছে যেতে চাই।

কিশোরীর মা জানায়, মান-সম্মানের ভয়ে আমরা মেয়েকে শাসনে রেখেছি। এ ঘটনায় সমাজ আমাদের এক ঘরে করে রেখেছে। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারিনা।

আবু সাঈদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল শেখ জানান, আমার ছেলের মুক্তি চাই এবং যাতে নিরাপদে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা দরকার।

রাজৈর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কনা জানান, একজন নাবালিকা নির্যাতন মানবাধিকার লংঘনের সামিল। যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলো। মেয়ের সাথে কথা বলেছে। তারা আমাকে জানিয়েছে মেয়ে নাকি তার বাবার বাড়িতেই থাকার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্যকলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের যৌন সহিংসতার প্রসঙ্গ জাতিসংঘে তুললেন ভারতীয় দূত

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত