Ajker Patrika

কাজের সন্ধানে ঢাকা আসছিলেন ঋণগ্রস্ত বক্কার, সড়কেই ঝরল প্রাণ 

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ২৭
কাজের সন্ধানে ঢাকা আসছিলেন ঋণগ্রস্ত বক্কার, সড়কেই ঝরল প্রাণ 

এক সময়ে করতেন চালের ব্যবসা। কিন্তু সেই ব্যবসায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন বক্কার গাজী (৫০)। সেই ঋণের তাড়নায় ও পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে ঢাকায় একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে রওনা দেন। কিন্তু ঢাকায় আর যাওয়া হলো না তাঁর। সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেলেন না ফেরার দেশে। 

বক্কার গাজী সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানাধীন তারানিপুর এলাকার সাফাত গাজীর ছেলে। আজ মঙ্গলবার ভোরে ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দুটি যাত্রীবাহী বাস খাগড়াছড়ি পরিবহন ও গ্রিন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান তিনি। 

এতে ঘটনাস্থলে আরও ৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

নিহত বক্কার খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী ছিলেন। তাঁর সঙ্গে একই কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকায় যাচ্ছিলেন একই এলাকার মারুফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তাঁর পা ভেঙে মেডিকেল হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন। 

তিনি বলেন, ‘বক্কার চালের ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক টাকা ধরা খায়। এতে পাওনাদাররা চাপ দিতে থাকে। টেনশনে পড়ে আমাকে একদিন বলে আমারে ঢাকায় নিয়ে চল, তোদের সঙ্গে কাজ করব। উনি কোনো দিন কোনো কষ্টের কাজ করে নাই। আজ আমাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য যাচ্ছিল। কিন্তু উনিতো চলে গেলেন।’ 

আহত এই ব্যক্তি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বক্কার বাসের সামনের দিকে বসা ছিল, আমি মাঝের দিকে বসছিলাম। রাতে ঘুমায় ছিলাম সবাই। হঠাৎ একটা শব্দ হয়, সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার আর চেঁচামেচি শুরু হয়। সবাই কান্নাকাটি শুরু করে। আমার পাও ভেঙে গেছে। আমাদের উদ্ধার করার পর শুনি ৫–৬ জন মারা গেছে। তাঁদের মধ্যে বক্কারও আছে।’ 

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন—সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার তাড়ানিপুর গ্রামের মৃত সাফাত গাজীর ছেলে বক্কার গাজী (৫০), শ্রীফলকাঠি গ্রামের ইছা মোড়লের ছেলে বাবু মোড়ল (৪০), আবাদচন্ডীপুর গ্রামের আনসার মোড়লের ছেলে মহাসিন মোড়ল (৩৫), কালীগঞ্জের বাজারগ্রামের মনিরুল হোসেনের ছেলে নাহিদ হোসেন (১৯) ও মাগুরা জেলা সদরের বড়পশ্চিমপাড়া এলাকার সিরাজ শেখের ছেলে পিকুল শেখ (২৬)। 

নিহতদের মধ্যে পিকুল শেখ গ্রিন এক্সপ্রেস বাসের চালকের সহকারী ছিলেন এবং বাকিরা খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী ছিলেন। 

অপরদিকে দুপুর ১২টার দিকে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা, পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলসহ জেলা বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর নেতৃবৃন্দ। এ সময় জেলা প্রশাসক নিহত প্রত্যেক পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত