Ajker Patrika

উদ্যোগেও কম ভোটার, গ্রামে ভোট পড়ে বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫: ৫৭
উদ্যোগেও কম ভোটার, গ্রামে ভোট পড়ে বেশি

নানা উদ্যোগ, আহ্বান ও তৎপরতায়ও তুলনামূলক কম ভোটার উপস্থিতি, দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, কিছু অনিয়ম- অভিযোগ ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। গতকাল রোববার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে টানা এই ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। কেন্দ্রে ঢুকে ১২টি বইয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারায় নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে একই দলের প্রার্থী ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণও বাতিল করা হয়। বিভিন্ন অভিযোগ এনে গতকাল ভোট চলাকালে ২৩টি আসনের ৩০ প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কৌশলও নেয়।

বিএনপি নির্বাচন ঘিরে গত শনিবার সকাল ৬টা থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয়, যা শেষ হচ্ছে আজ সোমবার সকাল ৬টায়। নির্বাচন কমিশন ২ ঘণ্টা পরপর ভোটের হার জানায়। ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হলেও ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, গুরুতর সহিংসতার কোনো ঘটনা ঘটেনি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ছিল।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে বেলা ৩টায় এই হার ছিল প্রায় ২৭ শতাংশ।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের অধিকাংশ কেন্দ্রেই সকালে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। রাজধানী এবং শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর-গ্রাম সবখানেই ভোটার বেড়েছে। যেসব আসনে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন, সেসব আসনে ভোটার উপস্থিতিও ছিল বেশি। রাজধানী ঢাকা-৪ ও ৫ আসনে জমজমাট লড়াই হয়েছে। তারপরও ভোটের হার খুব বেশি নয়। এই দুই আসনের কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের কর্মীদের সরব উপস্থিতি থাকলেও ভেতরে ভোটারদের তেমন ভিড় ছিল না।

আজকের পত্রিকার সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ভোট গ্রহণ সর্বত্র শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন ছিল না। কোথাও কোথাও জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ এবং কুমিল্লায় দুজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা-১৪ আসনের কল্যাণপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই প্রার্থীদের এজেন্টদের কাছ থেকে রেজাল্ট শিটে (ফলাফল বিবরণী) স্বাক্ষর নিয়ে রাখা হয়েছিল।

তবে মুন্সিগঞ্জের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের। সিইসি বলেন, ছোটখাটো ৩০-৩৫টি জায়গায় ভোটকেন্দ্রের বাইরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। কোথাও ভোটকেন্দ্রের পাশে ককটেল ফাটানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের একটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল মারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর ভোট বর্জন করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। পরে ওই বিদ্যালয়ের নারী ও পুরুষ কেন্দ্র দুটির ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়।

সকালে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির কর্মীরা। চট্টগ্রাম-১০ আসনের পাহাড়তলী কলেজকেন্দ্রের বাইরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন গুলিবিদ্ধ হন।

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে রায়গঞ্জ উপজেলায় জাল ভোট দিতে আসা দুজনকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী একটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে নৌকার কর্মীদের ধাওয়ার মুখে পড়েন। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে একটি ভোটকেন্দ্রে নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত দুজন আহত হন। ময়মনসিংহে একটি কেন্দ্রে ‘প্রকাশ্যে সিল মারা’ এবং ‘নৌকার পক্ষে’ কাজ করার অভিযোগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।

ঢাকার নিজস্ব প্রতিবেদকেরা জানান, ঢাকার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের চিত্র ছিল মোটামুটি একই রকম। কেন্দ্রের বাইরে ছিল বড় জটলা, কর্মীদের ঘোরাফেরা। তবে ভেতরে বেশ ফাঁকা। এই কেন্দ্রগুলোতেও সব মিলিয়ে ৩৫-৪০ শতাংশ করে ভোট পড়েছে বলে কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

খুনে খুনে অস্থির চট্টগ্রাম, পেছনে গ্যাংস্টাররা

  • চট্টগ্রাম নগরী ও রাউজানে একে একে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
  • খুনের ধরন একই। প্রথমে হুমকি, পরে প্রকাশ্যে গুলি।
  • বেশির ভাগ ঘটনায় জড়িত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগীরা।
সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের তিন থানা এলাকা ও রাউজানে কদিন পরপর প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা সক্রিয় হওয়া এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা জনসমাগমপূর্ণ এলাকাতে প্রকাশ্যে এভাবে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম যেন ভয়ের জনপদে পরিণত হচ্ছে।

গত এক বছরে চট্টগ্রাম নগরী ও রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, এসব খুনের ঘটনার অধিকাংশতেই পেছন থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ডে পুরোনো গ্যাংস্টাররা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে। ওই গ্যাংস্টারদের সহযোগীরাই একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এসব হত্যার ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক নেতাদেরও ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।

একের পর এক এমন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, খুনের সঙ্গে জড়িতরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আবার হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোও উদ্ধার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বাকলিয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার আছে, তারা মূলত পেশাদার সন্ত্রাসী। কোনো কিছুর বিনিময়ে তারা কিলিং মিশন পরিচালনা করছে। তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই।

পুরোনো গ্যাংস্টারদের হাত

গত বছরের ২৯ আগস্ট অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে আওয়ামী লীগ নেতাসহ জোড়া খুন, একই বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওতে ছাত্রলীগ কর্মী তাহসিন খুন; চলতি বছর ২৯ মার্চ বাকলিয়াতে প্রাইভেট কারে গুলি করে শিবিরের সাবেক ক্যাডার সরোয়ারের দুই সহযোগী বখতিয়ার হোসেন মানিক ও আবদুল্লাহ আল রিফাতকে হত্যা এবং গত ২৩ মে পতেঙ্গা সি বিচ এলাকায় নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ গত বুধবার সন্ধ্যায় বায়েজিদ থানাধীন চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির ঘোষিত এমপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারে সন্ত্রাসীদের হামলায় এরশাদউল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সরোয়ার হোসেন বাবলা নামে শিবিরের সাবেক এক ক্যাডার মারা যান। মূলত সরোয়ার হোসেন বাবলাকে টার্গেট করেই সন্ত্রাসীরা গুলি চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, নগরের চাঞ্চল্যকর এসব হত্যাকাণ্ডে নিহতদের অনেকে বাবলার অনুসারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবর ও সরোয়ার হোসেন বাবলা কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসী দুবাইয়ে পলাতক সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজন পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। এর পর থেকে এলাকার আধিপত্য নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক অনেকগুলো খুনের ঘটনায় এইট মার্ডারে আলোচিত পুরোনো গ্যাংস্টার সাজ্জাদ আলী খান ও হাবিব খানের অনুগত সহযোগীরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাদের মধ্যে উঠতি শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদসহ অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। আবার অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একের পর এক হত্যায় অংশ নিচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যে, চট্টগ্রামে রাউজানে গুলি করে ১৬টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ১২টিই রাজনৈতিক। ওই ১২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে অধিকাংশতেই বর্তমানে বাইরে দাপিয়ে বেড়ানো শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে আসার কথা জানায় রাউজান থানা-পুলিশ।

বিভিন্ন সূত্রের তথ্যে, শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হান এইট মার্ডারে আলোচিত সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতির সহযোগী। ছোট সাজ্জাদ ও রায়হান মিলে একাধিক কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল। ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের পর জেলে গেলে এই গ্যাংয়ের অস্ত্রভান্ডার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে রায়হান।

বেশির ভাগ খুনের একই ধরন

চট্টগ্রাম নগর এবং রাউজান ও হাটহাজারীতে সংঘটিত সবগুলো হত্যাকাণ্ডেই সন্ত্রাসীদের অভিন্ন ধরন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের আগে সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগীকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটা সময় বেঁধে দিচ্ছে। এরপর সুযোগ বুঝে হত্যা করছে। অনেকগুলো হত্যার ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে। সর্বশেষ সরোয়ার হোসেন বাবলা হত্যার ঘটনাও ঘটেছে একইভাবে।

গত ২৫ অক্টোবর উপজেলা রাউজানের চারাবটতল এলাকায় গুলি করে যুবদল কর্মীকে আলমগীর হোসেনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আলমগীরের একটি পুরোনো ভিডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়, যেখানে আলমগীর নিজেই একটি সভায় বলছেন, ‘আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বুধবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।

রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ১৫টি এলজি, ২টি রিভলবার, ২টি রাইফেল, বিদেশি পিস্তল ৩টি, একনলা বন্দুক ১টি ও ২টি দোনলা বন্দুক উদ্ধার করেছি। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোনটি কোন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে, তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা মুশকিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর: চেয়ারম্যান নেই, সেবা গোপনে

মো. খলিলুর রহমান, বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ)
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর: চেয়ারম্যান নেই, সেবা গোপনে

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব তিন মাস ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্যানেল চেয়ারম্যানও। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এ ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজও থমকে গেছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে তা অবগত করতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তিনি সেটিও করেননি বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা দায়িত্ব নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের একজন হলেন কৈলাগ ইউপির মো. কায়ছার-এ-হাবীব। তিনি সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের সমর্থনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক মামলায় তিনি আসামি হন। সে সময় কিছুদিন অফিসে না এলেও পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের জামিন নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য পরিষদে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তীব্র হলে তিনি আবার অফিসে আসা বন্ধ করেন দেন। গত ১০ আগস্ট রাকিব নামের এক যুবককে হত্যার পর তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়। এরপর থেকে তিনি আর পরিষদে আসেননি। এমনকি উপজেলা মাসিক সভায়ও তাঁর উপস্থিতি দেখা যায়নি।

সরেজমিনে কৈলাগ ইউপিতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ। প্রশাসনিক কর্মকর্তা নয়ন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি গত ১২ আগস্ট দায়িত্ব নিয়েছি। যোগদানের পর থেকে চেয়ারম্যানকে কখনো অফিসে দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কাজ করি; কিন্তু চেয়ারম্যান কীভাবে স্বাক্ষর দেন বা অনুমোদন দেন, তা জানি না।’

জন্মসনদ, ওয়ারিশান ও পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজে আসা কয়েকজন সেবাপ্রার্থী জানান, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে তাঁরা সেবা পাচ্ছেন না। ফলে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন।

ইউপি সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, এত মামলা থাকার পরও তিনি কীভাবে এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. কায়ছার-এ-হাবীব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আমি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে অফিস করেছি। রাকিব হত্যা মামলায় আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকলেও আমি অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ শূন্য ঘোষণা করা যেতে পারে। অযৌক্তিক বা দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তাঁর পদ বাতিল বা সাময়িক বরখাস্ত করা যায়। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্যানেল চেয়ারম্যান তাঁর দায়িত্ব পালন করেন, আর অযৌক্তিকভাবে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকলে তাঁর পদ শূন্য ঘোষণা হতে পারে।

বাজিতপুরের ইউএনও ফারশিদ বিন এনাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের সেবায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিএলজি) জেবুন্নাহার শাম্মীর সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পাঠানো খুদে বার্তারও কোনো উত্তর দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালের ১০ স্থানে অবৈধ বাঁধ

আবুল কাশেম, সাঁথিয়া (পাবনা)
বাঁশ, পলিথিন ও চাটাই দিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ। সম্প্রতি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের বড়গ্রামের দত্তপাড়া খালে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঁশ, পলিথিন ও চাটাই দিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ। সম্প্রতি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের বড়গ্রামের দত্তপাড়া খালে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী-ডি-২ ক্যানালের (কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত খাল) প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্যানাল পাড়ের জমিতে পানি জমে রয়েছে। ফলে পাকা ও আধা পাকা আমন ধান পানির নিচে ডুবে আছে।

এ ছাড়া চলতি রবি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন ও সরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমনটি হচ্ছে অভিযোগ করে বাঁধ অপসারণের দাবিতে ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকেরা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, কৈটলা পাম্প হাউস থেকে মুক্তার ধর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ক্যানাল দিয়ে বর্ষা শেষে সাঁথিয়ার প্রায় ১৫টি বিলের পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু মাছ ধরার জন্য প্রায় ১০টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি স্থানে ইতিমধ্যে জাল টানানো হয়েছে। ফলে মুক্তার ধর, সোনাই বিল, ঘুঘুদহ বিল, জামাইদহ, বড়গ্রাম বিল, খোলসা খালি বিল, কাটিয়াদহ বিল, গাঙভাঙা বিল ও টেংরাগাড়ী বিলের পানি বের হতে না পারায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

অন্যদিকে পানি না নামায় কৃষকেরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। প্রতিবছর কাদামাটির ওপর বীজতলা তৈরি হলেও এবার জমিতে পানি থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিলপাড়ে কৃষকেরা বীজতলার জন্য হাজার হাজার বস্তা ছাই মজুত করে রেখেছেন, পানি নামলেই বীজতলা তৈরি করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ক্যানালের বিভিন্ন অংশে সুফলভোগী মৎস্যজীবীরা লিজ নিয়ে মাছের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। কিন্তু মৎস্য অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকির অভাবে লিজকে পুঁজি করে প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় এসব সুফলভোগী সুতি জালের অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করেন। প্রতিবছর যা কৃষকদের জন্য বড় বিপদ হয়ে দেখা দেয়।

কাশিনাথপুর ইউনিয়নের দোয়ারগাড়ী বিলে দেখা গেছে, কোমরসমান পানিতে আধা পাকা ধান পড়ে আছে। কোথাও কোথাও কৃষকেরা হাঁটুপানিতে জমি পরিষ্কার করে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, শামুকজানী বাজারের দক্ষিণে, দত্তপাড়া গ্রামের পশ্চিমে, বড়গ্রাম, তালপট্টি নামক স্থানের ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, সৈয়দপুর মৌজা এবং পুন্ডুরিয়া ব্রিজের পাশে অন্তত ৫টি স্থানে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তালাই, পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি এসব বাঁধে কচুরিপানা জমে পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর গ্রামের মোস্তফা প্রামাণিক বলেন, ‘মাছের অভয়ারণ্যের জন্য লিজ নিয়ে মাছ শিকার করি। তবে সুতি জালের জন্য লিজ নেওয়া হয়নি।’

অনেক চেষ্টার পরেও অবৈধভাবে সুতি জালের বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বাঁধে মাছ শিকার করা ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে লিজ নিয়ে মাছ শিকার করছি।’

এ বিষয়ে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছশিকারের জন্য কাউকে কোনো লিজ দেওয়া হয়নি।’ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সামসুল রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালাই। সুতি জাল কেটে দিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। তাঁরা তিন দিনের মধ্যে বাঁশ অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন। তা না করলে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাঁথিয়া ইউএনও রিজু তামান্না বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি। এসি ল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা সময় চেয়েছেন। দ্রুত অপসারণ না হলে মৎস্য অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে বাঁধ উচ্ছেদ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে খেজুর রসের মৌসুম

২০০ কোটি টাকার গুড়ের বাজার

 রিমন রহমান, রাজশাহী
রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত করছেন গাছি সাইফুল ইসলাম মিলু। বুধবার ভোরে রাজশাহীর পুঠিয়ার জরমডাঙ্গা গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত করছেন গাছি সাইফুল ইসলাম মিলু। বুধবার ভোরে রাজশাহীর পুঠিয়ার জরমডাঙ্গা গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোরের কুয়াশা কাটেনি তখনো। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের সরু পথে হাঁটলে দূর থেকে দেখা যায়—সারি সারি খেজুরগাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি। গাছের মাথা থেকে ঝরছে রস। একটার পর একটা গাছে উঠে গাছিরা নামিয়ে আনছেন রসের হাঁড়ি।

প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিকে রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলায় শুরু হয় খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরির মৌসুম। রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করে পাতা হয় মাটির হাঁড়ি। সারা রাত ধরে ফোঁটা ফোঁটা রস জমে হাঁড়িতে। সকালে সেই রস নিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির ব্যস্ততা। বড় চুলায় ফুটন্ত রসের ঘ্রাণে তখন মিষ্টি হয়ে ওঠে পুরো গ্রাম।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ১১ লাখ ৮ হাজার ১৮টি। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ২৫ লিটার রস পাওয়া যায়, যা থেকে প্রায় ১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে রস সংগ্রহ মৌসুম। গত বছর রাজশাহীতে প্রায় ১০ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার গাছির আয় হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। চলতি মৌসুমে আরও বেশি গুড় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

চারঘাট উপজেলার চকগোচর গ্রামের গাছি মো. ওবায়দুল বলেন, গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। চিনির দাম কম হওয়ায় অনেকে আবার রসের সঙ্গে চিনিও মিশিয়ে দিচ্ছেন। এতে লাভ বেশি হচ্ছে। তবে যাঁরা চিনি দিয়ে গুড় তৈরি করেন না, তাঁদের গুড়ের দাম কিছুটা বেশি। এখন অনলাইনে খাঁটি গুড়ের ভালো চাহিদা আছে।

গত বুধবার ভোরে পুঠিয়ার ভুবননগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে রস নামাচ্ছেন মো. রানা। তাঁর বাইসাইকেলে দুটি বড় বড় জার বাঁধা। গাছ থেকে নামানো রস নেওয়া হচ্ছে ওই জারে। রানা বলেন, ‘আমার ইজারা নেওয়া ৫২টি গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লিটার রস পাই। এতে ১০-১১ কেজি গুড় হয়।’ একই গ্রামের জালাল উদ্দিনের বাড়িতে দেখা গেল, তাঁর স্ত্রী রওশন আরা রস জ্বাল দিচ্ছেন। রওশন বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতেই ১৬০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি হচ্ছে।

পুঠিয়ার জরমডাঙ্গা গ্রামের গাছি সাইফুল ইসলাম মিলু বলেন, যাঁদের গাছ আছে তাঁদের বেশির ভাগই রস নামাতে পারেন না। তাই তাঁরা এক মৌসুমের জন্য গাছ ইজারা দিয়ে দেন। গাছ দেখে ইজারার দাম হয়। কোনো গাছের জন্য দিতে হয় ৫০০ টাকা, কোনোটির ইজারামূল্য ১ হাজার। একজন গাছি সাধারণত ৩০ থেকে ১০০টি গাছ ইজারা নেন।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রাজশাহীর খেজুর গুড়ের সুনাম সারা দেশে। গেল মৌসুমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয়েছে। এবার আরও বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। তবে কিছু অসাধু গাছি গুড়ের সঙ্গে চিনি মেশাচ্ছেন, যা রাজশাহীর খাঁটি গুড়ের সুনামের জন্য হুমকি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত