Ajker Patrika

মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর

মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ তুলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে শহরের পানিছত্র এলাকার কে আই হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। 

মারা যাওয়া ওই নারীর নাম শারমীন বেগম (৩০)। তিনি সদর উপজেলার ছিলারচর এলাকার আনোয়ার খালাসির স্বামী এবং একই উপজেলার কালিকাপুর এলাকার নূর মোহাম্মদ খানের মেয়ে। তিনি তিন সন্তানের মা। 

শারমীনের স্বজনেরা জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরের পপুলার হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শারমীনের এক ছেলে সন্তান হয়। নিয়ম অনুযায়ী সেখান থেকে সাত দিন পর শারমীনরকে তাঁর বাবার বাড়িতে নিয়ে যান তাঁর স্বামী। এরপর শারমীনের মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হওয়ায় তাঁকে গতকাল সকাল ৯টার দিকে শহরের কে আই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কনসালট্যান্ট অ্যান্ড সার্জন ও গাইনি বিভাগের চিকিৎসক সাইয়েদা সিদ্দিকা ওরফে এলিজার তত্ত্বাবধানে শারমীনের চিকিৎসা শুরু হয়। 

শারমীনের স্বজনেরা আরও জানান, গতকাল দুপুর ১টার দিকে মেরুদণ্ডের ব্যথা কমানোর জন্য শারমীনের শরীরে ঘুমের ইনজেকশন দেন চিকিৎসক। এরপর রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের শয্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি গোপন রেখে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন শারমীনের স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই রোগীর স্বজনদের একপর্যায়ে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালটি সামনের গ্লাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন ও অভ্যর্থনা কক্ষে ভাঙচুর চালান। এরপরই ঘটনার বিচার দাবিতে হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন স্বজনেরা। 

শারমীনের স্বামী আনোয়ার বলেন, ‘পপুলার হাসপাতালে আমার স্ত্রীর সিজার করেন চিকিৎসক এলিজা। তিনি কে আই হাসপাতালেও রোগী দেখেন। এলিজা আমার স্ত্রীকে কে আই হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। তার কথামত আমি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রীকে মরতে হয়েছে।’ 

মাদারীপুর শহরের পানিছত্র এলাকায় কে আই হাসপাতালে ভাঙচুরশারমীনের চাচা মাসুদ খান জানান, ‘রাতে ওই হাসপাতালের লোকজনের সঙ্গে আমাদের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে এলাকার লোকজনও বিষয়টি শুনে এগিয়ে আসেন। তবে আমার জানামতে আমাদের কেউ ভাঙচুরে অংশ নেননি। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কে বা কারা ভাঙচুর করেছেন তা জানা নেই।’ 

অভিযোগের বিষয়ে চিকিৎসক সাইয়েদা সিদ্দিকা এলিজা বলেন, ‘দায়িত্বে অবহেলা কিংবা ভুল চিকিৎসা নয়, শারমিনের স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে। তার যতটুকু চিকিৎসার প্রয়োজন তা দেওয়া হয়েছে, এখানে কোনো ত্রুটি ছিল না। আমি চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা চলে আসি, পরে হাসপাতাল থেকে ফোনে জানানো হয় শারমিন নামের ওই রোগী মারা গেছেন। কোনো চিকিৎসক চান না রোগী মারা যাক।’ 

কে আই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আমি ওই রোগীর বিষয়ে কিছুই জানি না। হাসপাতালে কেন তাঁরা ভাঙচুর চালাল তাও জানি না। তবে চিকিৎসকের কোনো ভুল নেই। তিনি তাঁর সঠিক চিকিৎসাই দিয়েছেন।’ 

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রোগীর স্বজনদের বুঝিয়ে বলেছি, তাঁরা লাশ আমাদের কাছে দিয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনেরা থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

কলকাতার নিউটাউনে বসে আয়েশ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

চাকরি না ছেড়েই বিদেশে পাড়ি, ৪৮ শিক্ষক বরখাস্ত

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত