Ajker Patrika

ঘিওরের কৃষকদের মালচিং পদ্ধতির চাষাবাদে সফলতা, এবার প্রশিক্ষণ দাবি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
ঘিওরের কৃষকদের মালচিং পদ্ধতির চাষাবাদে সফলতা, এবার প্রশিক্ষণ দাবি

‘মালচিং পদ্ধতিতে আগাছা মুক্ত করতে বিষ প্রয়োগ করতে হয় না। ফলে মানুষ বিষমুক্ত সবজি ও ফসল পাবে। আমার জমিতে মরিচ গাছ বুড়া হয়ে গেলেই তা তুলে ফেলে এই বেডেই আমি শসা ও করলা বীজ বপন করব। এভাবে একই বেডে একাধিক ফসল আবাদ করা যায়। এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন, তা হচ্ছে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া।’ কথাগুলো বলেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে আবাদকারী কৃষক জসিম উদ্দিন। 

শুধু জসিম উদ্দিন নন। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলাসহ এখানকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকেরা জসিম উদ্দিনের মতো লাভজনক মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু চাষিরা ভালোমতো এ পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নন। তাই সরকারিভাবে প্রশিক্ষণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 

ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে আবাদি জমি প্রস্তুত করে তারপর বীজতলা বা বেড তৈরি করা হয়। একটি বেড, তারপর একটি ড্রেন। আবার বেড তারপর ড্রেন, এভাবেই এ পদ্ধতিতে জমি তৈরি করা হয়। তারপর মালচিং পেপার (এক ধরনের পলিথিন) দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় বেডগুলো। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে মালচিং পেপার ছিদ্র করে বা গোল করে কেটে চারা রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিকে মালচিং বা পলি মালচিং পদ্ধতি বলা হয়। 

উপজেলার সিংজুরী গ্রামের কৃষক আমির হোসেন বলেন, ইউটিউব চ্যানেল দেখে এবারই প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে ৪ বিঘা জমিতে হাইব্রিড মরিচ আবাদ করেছেন তিনি। এ পদ্ধতিতে গাছের গোড়ায় পানি শুকিয়ে যায় না এবং গাছের প্রয়োজনীয় পানি সব সময় থাকে। ড্রেনের মধ্য দিয়ে পানি দেওয়ার কারণে পাশের বেডের মাটি পানি ধরে রাখে, যা অতি রোদেও শুকিয়ে যায় না। 

সিংজুরী গ্রামে মালচিং পদ্ধতিতে জমিতে চাষাবাদযেখানে ৬ বার সেচ দিতে হতো এখন দুবার সেচ দিলেই পুরো সিজন হয়ে যায়। আগে অতিবৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গাছ মরে যেত, কিন্তু ড্রেন পদ্ধতি থাকার কারণে পানি জমতে পারে না এবং বেডের ওপর গাছ থাকাতে একটানা বৃষ্টি হলেও গাছের কোনো ক্ষতি হয় না। এ পদ্ধতিতে জমিতে আগাছা জন্মাতেও পারে না এবং আগাছা পরিষ্কারের জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হয় না বলে জানান তিনি। 

মালচিং পদ্ধতিতে আবাদকারী রাধাকান্তপুর গ্রামের কৃষক মুন্নাফ মিয়া বলেন, ‘৪ ফুট প্রশস্ত এবং ৪০০ ফুট লম্বা একটা মালচিং পেপার রোলের দাম ৫ হাজার টাকা। এ রকম একটা রোল ১৮ শতাংশ জমিতে দেওয়া যায়। বিঘা প্রতি মালচিং পেপার দেওয়াতে বাড়তি খরচ হয় ১৪–১৫ হাজার টাকা। সরকারিভাবে যদি ভর্তুকি দেওয়া হতো তাহলে অনেকেই এই পদ্ধতিতে আবাদে উৎসাহিত হতো। উৎপাদনও বৃদ্ধি পেত। এছাড়া আমাদের প্রশিক্ষণ দিলে এর সুফল আরও ভালোভাবে পেতাম।’ 

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ্ বলেন, ‘এ পদ্ধতিটা অবশ্যই ভালো এবং আমরা কৃষকদের এ পদ্ধতিতে আবাদে উদ্বুদ্ধ করছি। মানিকগঞ্জ সদর ও সিংগাইড়ে কৃষকদের উন্নত চাষাবাদের প্রশিক্ষণ চলমান আছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সাতটি উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত